Friday, October 05, 2007

বাংলাদেশে ইন্টারনেট সার্ভেইল্যানস এখন সময়ের ব্যাপার

বেশ কিছু উদ্বেগজনক সংবাদ পেলাম দেশ থেকে। আমার এক পরিচিতের বাড়ীতে RAB এসেছিল চেক করতে সে ভিওআইপির ব্যবসা করে কিনা তাই। আমার খটকা লেগেছিল কারন সে একজন সাধারন ইউজার, তার সাথে কেন এমন হবে?

আজ ই-বাংলাদেশেএ নিয়ে খবর এসেছে। এমন ঘটনা আরও হয়েছে। সাধারন ইউজারের বাসায় ভিওআইপি সংক্রান্ত কিছু না পেয়ে কম্পিউটার চেক করেছে -এম এস এন মেসেন্জার ও স্কাইপের কন্টাক্ট লিস্ট চেক করেছে। সন্দেহ হচ্ছে তারা নিজেও কি নিশ্চিত কিনা তারা কোথায় কি খুঁজতে এসেছে।

উর্ধতন এক বিটিআরসির কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে বিটিআরসি সাহায্য করছে RAB কে অবৈধ ভিওআইপি অপারেটরদের ধরতে। কিন্তু সাধারন ইউজারদের বাসায় কেন যাচ্ছে তারা তা সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারেন নি।

কিন্তু ব্যাপারটি আসলে এত সহজ কিছু নয়। আসলে ভিওআইপির কথা বলে হয়ত ইন্টারনেট ইউজারদের কার্যকলাপ মনিটর করা হচ্ছে। বিটিআরসি বাংলাদেশের সব আইএসপির কাছে একটি চিঠি (BTRC/E&O/ISP-Gen.(302)/2007-1697) পাঠিয়েছে যেখানে তারা চেয়েছে:
* তারা কার কাছ থেকে কত ব্যান্ডউইদথ ব্যবহার করছে, চুক্তির কপি সহ সেসব তথ্য।
* কর্পোরেট/ডেডিকেটেড/শেয়ার্ড ক্লায়েন্টদের নাম, ঠিকানা ও আইপি
* পুরো ব্যন্ডউইদথ এবং প্রতিটি ক্লায়েন্টের অনলাইন এমআরটিজি ইউসেজ গ্রাফ (যার মাধ্যমে কে কোন সাইটে ব্রাউজ করেছে সব তথ্য জানা যাবে), ইউআরএল এড্রেস এবং প্রতিটি ইউজারের আইডি এবং পাসওয়ার্ড
* সব ইউজারের জন্যে পরিপূর্ণ সাবস্ক্রিপশন ফর্ম
* আইএসপিকে মানা করা হয়েছে এমন ইউজারদের কানেকশন না দিতে যারা ওই ব্যন্ডউইদ্থ অন্যান্য লোকেশনের ইউজারের কাছে অর্থের বিনিময়ে শেয়ার করে।
* আইএসপিকে বলা হয়েছে প্রতিটি ইউজারদের নাম ঠিকানা সংরক্ষন করতে (স্ক্রাচ কার্ডের ক্ষেত্র কি হবে বলেনি)।

উপরোক্ত বিষয়গুলো ১৫ দিনের মধ্যে না মানলে আইএসপির লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন কি ঘটতে যাচ্ছে। তারা আইএসপির মাধ্যমে প্রতিটি ইউজারদের তথ্য সংগ্রহ করবে, এমআরটিজি গ্রাফের ইআরএল, আইডি/পাসওয়ার্ড থাকলে যে কোন স্থান থেকে এইসব ইউজারদের ইন্টারনেট কার্যক্রম মনিটর করা যাবে। আপনার ঠিকানা থাকায় আপনি থাকবেন তাদের মনিটরিং এর মধ্যেই। আপনার ইমেইল পড়ে ব্যবসার গোপন তথ্য অন্যরা জেনে যাবে।

ই-বাংলাদেশে এক আইএসপি প্রভাইডার বলেছে এরকম ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হলে এবং বাসায় সার্চ হলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ভয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করে দেবে। আইএসপিদের ব্যবসা গুটাতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করাটাই যেন একটি অপরাধ হয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

এটি একটি বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। বিটিআরসি আ্যাক্ট ২০০১ এর একটি সংশোধনী (৯৭ ধারা) অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা বাহীনিকে সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হয় আড়িপাতার জন্যে। এই সংশোধনীটি অবশ্য বিটিআরসির মুল উদ্দেশ্য টেলিযোগাযোগের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার নিশ্চয়তা প্রদানকে লঙ্ঘন করে (বিটিআরসি অ্যাক্ট ২০০১ প্যারা ৩০(১)(f)

গতকাল বিবিসির পরিক্রমা অনুষ্ঠানে এ খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়। আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় যে সরকার দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ডাটাবেজ এবং আইএসপির মাধ্যমে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার মনিটরের উদ্যোগ নিয়েছে। শুনুন পরিক্রমার রিপোর্টটি।

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA

বাংলাদেশের সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে এ ব্যাপারে আপনি কি অবস্থান নেবেন জানালে ভাল হয়।

No comments: