Thursday, April 24, 2008

আধুনিক দ্বিচক্রযানে পর্যটক

সেগওয়ে 
সেগওয়ে

গত বেশ কয়েক মাস বেশ ব্যস্ত সময় কেটেছে। বেশ কিছু ভ্রমণ ও উপরি পাওনা হিসেবে ছিল। কিন্তু এসব নিয়ে গুছিয়ে লিখব লিখব করে আর লেখা হয়ে উঠছে না।

তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিচ্ছিন্নভাবে অল্প অল্প করেই লিখব।

আমার প্যারিস দেখার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দর্শনীয় স্থান গুলোতে গিজগিজ করা পর্যটক। মনে হয় যেন এ শহরে এই সব টুরিস্ট দেখতেই এসেছি।

প্যারিসের প্লাস দো লা কনকর্ডের পাশেই রয়েছে তুইলেরি গার্ডেন যা প্রায় লুভে জাদুঘর পর্যন্ত বিস্তৃত। সেখানে গেটের কাছে দেখলাম একদল পর্যটক সেগওয়েতে চড়ে যাচ্ছে। আসে পাশের লোকজন ফিরে তাকাচ্ছে তবে জটলা হচ্ছে না।
সেগওয়ে নাম্নী এই আধুনিক দ্বিচক্রযানটি সম্পর্কে পড়েছিলাম আগে কিন্তু সামনা সামনি এবার দেখা হলো। দেখলে মনে হবে অণ্য জগতের কোন বাহন। সাইকেলের মত হ্যান্ডেল ধরে থেকে দুই চাকার উপর কি করে দাড়িয়ে থাকা যায় সেটি এক বিষ্ময় বটে।

তবে এর কারিগরি দিকগুলো দেখলে বোঝা যায় এটি কোন সাধারণ যন্ত্র নয়। এটি ইলেক্ট্রিক মটরে চলে ব্যাটারীর মাধ্যমে যা বাড়ীর ইলেক্ট্রিক কানেকশন দিয়ে রিচার্জ করা যায়। এটি ব্যালেন্সড অবস্থায় থাকে দুটি কম্পিউটার ও নিজস্ব উদ্ভাবিত সফ্টওয়্যার দ্বারা। এতে পাঁচটি জাইরোস্কোপ এবং দুটি হেলানো অবস্থা পরিমাপকারী সেন্সর রয়েছে। একটি সার্ভো ড্রাইভ মটর চাকা দুটিকে আগে পিছে করে ওর সমতা রক্ষা করে। কোন কারনে আরোহী সামনে বা পিছনে কাত হলে জাইরোস্কোপ ও সেন্সর এটির ব্যালেন্সড অবস্থা থেকে সরে যাওয়ার তথ্যগুলো চাকাগুলো চালানোর মটরে পাঠায়। ফলে যান্ত্রিক ভাবে আবার এটি দাড়িয়ে থাকার মত সমতায় আসে।

এটির দাম ৪০০০-৫০০০ ডলার। বেশ কিছু দেশে এটি এখনও নিষিদ্ধ কারন এটির গতি (ঘন্টায় ২০ কিমি) রাস্তায় অণ্যান্য যানবাহনের জন্যে খুব কম এবং ফুটপাতে পথচারী ও সাইকেল চালকদের জন্যে বেশী ও উদভ্রান্তি জাগানো।

দেখলেন তো শহর সম্পর্কে বর্ণনা না দিয়ে পর্যটক এবং তাদের বাহণ সম্পর্কেই বকছি। তাই মাঝে মধ্যে সন্দেহ হয় প্যারিসে কি পর্যটক দেখতে গিয়েছিলাম?

প্রথম প্রকাশ: সচলায়তন

Friday, April 18, 2008

বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ

স্বাধীনতা দিবস আসলেই আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখি। প্রচারমাধ্যমে ফুটেজ, বিবিধ ক্রোড়পত্র, আমাদের বিচ্ছিন্ন আবেগ, সুবিধাবাদীদের দেশ দরদী বনে যাওয়া, বিশ্বাসঘাতকদের অস্বীকার এবং রাসেলের কথায় মুক্তিযুদ্ধের হলিউডাইজেশন

আমরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সবই জানছি, শুনছি ভাসা ভাসা ভাবে। বিভিন্ন সরকারের আমলে বিভিন্ন ভাবে মুক্তিযুদ্ধকে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র ছাপা হয়েছে কিন্তু তা অনেক খন্ডের বলে হয়ত বর্তমান প্রজন্ম পড়বে না। বাংলায়ই রয়েছে এত কটা বই। পড়বে কে?

এজন্যে দরকার একটি বিশেষ লাইব্রেরী বা আর্কাইভ যেখানে সব দলিলপত্র, বই, পেপার কাটিং, তথ্যাদি জমা থাকবে এবং ইচ্ছা মত তথ্য বের করা যাবে।

এই কাজটি অনলাইনে করলে ভাল। সার্চ ইন্জিনের মাধ্যমে কাঙ্খিত তথ্য সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু এটি করবে কে?

মুক্তিযুদ্ধ এতো এক বিশাল ব্যাপার। এতো কারো একার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু এই অসম্ভবেরই সুযোগ নেয় কিছু অসাধূ লোক। তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেসাতী করে, রাজনৈতিক ফায়দা লোটে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এখন সরকারী চাকুরীর কোটা বেসাতী। ইতিহাস বিকৃত করে এ ওর নাম রওশন করার বেসাতী।

আমি এত বড় ভূমিকা দিলাম একটি ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানানোর জন্যে। হ্যা আমি বলছি বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ সম্পর্কে। এটির উদ্যোগে রয়েছে বাংলাদেশী কিছু ব্লগার যারা মূলত ইংরেজীতে ব্লগিং করে। গত ডিসেম্বর থেকে আমি এর কাজে হাত দেই। এটি আসলে মৌলিক রচনা নয় কারন ইতিহাস রচনা করার জিনিষ নয়। এটি লিপিবদ্ধ করার জিনিষ। আমার কাজটি এটিই ছিল বিভিন্ন দলিলপত্রাদি, পেপারকাটিং, ভিডিও, অডিও, ইতিহাস, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ, মুক্তিযদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন লেখা, বিতর্ক ইত্যাদি নানাকিছু লিপিবদ্ধ করা। এটি শুরু মাত্র এবং এটি আরও সমৃদ্ধ হতেই থাকবে।

এর জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ এইসব বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থাকে যারা এতদিন ধরে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের তথ্যাবলী অনলাইনে সবার কাছে পৌছানোর জন্যে। তাদের এই সাইট গুলো হয়ত কেউ আগে দেখেনি। এখন এই আর্কাইভ থেকে সহজেই সেসব সাইটে চলে যেতে পারা যাবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যে যে কোন সাইট তৈরি করা সহজ, কিন্তু মেইনটেইন করা কঠিন। অরুপের করা একটি সাইট ছিল যা বহু আগে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এখন ওটি ওয়েব আর্কাইভ থেকেও পাওয়া যায় না। আমার এই আর্কাইভে কাজ করার সময় এটিও মনে হয়েছে এইসব সাইটের কন্টেন্ট রক্ষা করাও আমাদের কর্তব্য।

আপনাদের আর বিরক্ত করব না। তবে অনুরোধ করব বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা সম্পর্কে কোন তথ্য জানতে চাইলে এই আর্কাইভটি খুঁজে দেখতে। আর যদি মনে হয় আরও তথ্য ওখানে যোগ করা দরকার তাহলে অবশ্যই লিন্কটি দিয়ে দেবেন।

প্রথম প্রকাশ: আমার ব্লগ