tag:blogger.com,1999:blog-67404792024-02-28T14:13:26.958+06:00ছেঁড়া পাতায় কথামালাটুকিটাকি ভাবনাগুলোRezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.comBlogger177125tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-39327891268753676712023-12-11T10:04:00.000+06:002023-12-11T10:04:14.586+06:00যদি আমাকে মরতে হয়<div class="separator" style="clear: both;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjf_4Zo-fyNBkwPO8ouqWCO-sGbew4fBP9ino7xOJZHJEF6M0aZxj-uON6bCF94GJg9Fi-3vRCWo3LXuqKXKWiyrUPlHvw5QKiLa-oXnGuPDjAIO5WAhr4w5U9qGEaEZnIeVgCG2ZkyugmlbIpi8gT9hfMrA7ZHSd5sIV0RZ-yTeLtwAWv5fI9Npg/s770/reefat.jpg" style="display: block; padding: 1em 0px; text-align: center;"><img alt="" border="0" data-original-height="513" data-original-width="770" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjf_4Zo-fyNBkwPO8ouqWCO-sGbew4fBP9ino7xOJZHJEF6M0aZxj-uON6bCF94GJg9Fi-3vRCWo3LXuqKXKWiyrUPlHvw5QKiLa-oXnGuPDjAIO5WAhr4w5U9qGEaEZnIeVgCG2ZkyugmlbIpi8gT9hfMrA7ZHSd5sIV0RZ-yTeLtwAWv5fI9Npg/s400/reefat.jpg" width="400" /></a><div style="text-align: center;">ছবি <a href="https://www.aljazeera.com/news/2023/12/8/palestinian-people-mourn-the-death-of-refaat-alareer" rel="nofollow" target="_blank">আল জাজিরার</a> সৌজন্যে।</div></div><div class="separator" style="clear: both;"><br /></div>
গাজার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক কবি রিফাত আলারির গত পহেলা নভেম্বর এক্স (টুইটার) প্লাটফর্মে তার একাউন্টে "<a href="https://twitter.com/itranslate123/status/1719701312990830934" target="_blank">যদি আমাকে মরতে হয়</a>" নামে একটা কবিতা পোস্ট করেন যা হাজার হাজার শেয়ার হয়। <div><br /></div><div>গত ৬ই ডিসেম্বর এক ইজরায়েলি বোমা হামলায় তিনি তার ভাই, বোন ও তিন সন্তানসহ মৃত্যুবরন করেন।
এই কবিতাটি এখন বিশ্বের অনেক ভাষায় লোকে অনুবাদ করছে (যার অনেকগুলো পাওয়া যাবে <a href="https://twitter.com/blkpaws/status/1732954318657974669" rel="nofollow" target="_blank">এই টুইটার থ্রেডে</a> )।</div><div><br /></div><div>নীচে আমার বাংলা অনুবাদের প্রয়াস। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। </div><div><br /></div><div>যদি আমাকে মরতে হয় </div><div>তোমাকে বাঁচতে হবে।</div><div> </div><div>আমার জিনিষপত্র বেঁচে<br />এক টুকরো কাপড় কিনো</div><div>আর একটু সুতো <br />(লম্বা লেজের সাদা ঘুড়ি বানানোর জন্যে)</div><div>যাতে কোন শিশু, গাজার কোন মাঠে</div><div>স্বর্গের দিকে তাকিয়ে </div><div>তার
বাবার প্রতীক্ষা করে থাকে</div><div>যে চলে গেছে এক অগ্নিহল্কায়</div><div>কাউকে বিদায় না জানিয়ে</div><div>নিজের সন্তানদেরও না </div><div>অথবা নিজেকে। </div><div><br /></div><div>সে যেন দেখে আকাশে সেই ঘুড়ি</div><div>আমার ঘুড়িটা, তোমার বানানো</div><div>আর এক মুহূর্ত হলেও যেন শিশুটি ভাবে</div><div>যে সেখানে এক দেবদূত আছে</div><div>স্বর্গ থেকে ফিরিয়ে আনছে ভালোবাসা</div><div><br /></div><div>আমার মরণ যদি আসে</div><div>তা যেন আশা নিয়ে আসে</div><div>যেন গল্প নিয়ে আসে।</div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-76535813497792562842019-04-18T09:03:00.001+06:002019-04-18T09:11:52.759+06:00বাংলাদেশের নদী <div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgW3ceIktIk9m7krNiEI29NsL_rfDztb_SyDIJyv_z7ak2LV593UJ3TkCV-hcl6pZN5plUDjBtzw6H6emDVWBWjgpy4iiAzPtzxSjZ6hg5sJnJ5E7s9lTXMfS1BlCvBwu-AjVGMFA/s1600/57056095_849824218709915_1489757694934908928_n.jpg" imageanchor="1"><img alt="বাংলাদেশের নদী" border="0" data-original-height="840" data-original-width="685" height="640" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgW3ceIktIk9m7krNiEI29NsL_rfDztb_SyDIJyv_z7ak2LV593UJ3TkCV-hcl6pZN5plUDjBtzw6H6emDVWBWjgpy4iiAzPtzxSjZ6hg5sJnJ5E7s9lTXMfS1BlCvBwu-AjVGMFA/s640/57056095_849824218709915_1489757694934908928_n.jpg" width="521" /></a><br />
<br />
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশে রয়েছে শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৭০০ নদ-নদী (তথ্যসূত্র : <a href="http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%80">বাংলাপিডিয়া</a>)। ছোট ছোট পাহাড়ি ছড়া, আঁকাবাঁকা মৌসুমি খাড়ি, কর্দমপূর্ণ খালবিল, যথার্থ দৃষ্টিনন্দন নদ-নদী ও এদের উপনদী এবং শাখানদী সমন্বয়ে বাংলাদেশে রয়েছে মোট প্রায় ২৪,১৪০ কিমি দৈর্ঘ্যের নদীব্যবস্থা। কিছু কিছু স্থানে যেমন, পটুয়াখালী, বরিশাল এবং সুন্দরবন অঞ্চলে নদীনালা এতো বেশি যে সে অঞ্চলে প্রকৃতই নদীজালিকার সৃষ্টি হয়েছে।<br />
<br />
<a href="https://www.bwdb.gov.bd/">বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড</a> বা "পাউবো" বাংলাদেশের নদীগুলোকে সংখ্যাবদ্ধ করেছে এবং প্রতিটি নদীর একটি পরিচিতি নম্বর দিয়েছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা এখন ৪০৫টি। পাউবো কর্তৃক নির্ধারিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১০২টি) , উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১১৫টি), উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী (৮৭টি), উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী (৬১টি), পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী (১৬টি) এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী (২৪টি) হিসেবে বিভাজন করে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।<br />
<br />
নদীমাতৃক বাংলাদেশে অসংখ্য নদনদীর মধ্যে অনেকগুলো আকার এবং গুরুত্বে বিশাল। এসব নদীকে বড় নদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বৃহৎ নদী হিসেবে কয়েকটিকে উল্লেখ করা যায় এমন নদীসমূহ হচ্ছে: পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলি, শীতলক্ষ্যা, গোমতী ইত্যাদি।<br />
<br />
<b>দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী:</b><br />
<br />
আঠারবাঁকি, আড়িয়াল খাঁ নদ, আতাই, আন্ধারমানিক, আফ্রা, অর্পণগাছিয়া, ইছামতি-কালিন্দি, কচা, কপোতাক্ষ নদ, কুমার নদ (চুয়াডাঙ্গা), কুমার নদী (ফরিদপুর-গোপালগঞ্জ), কুমার আপার নদী, কুমার লোয়ার নদী, কয়রা, করুলিয়া, কাকশিয়ালী, কাজীবাছা, কাটাখালী, কাটাখাল, কালীগঙ্গা (পিরোজপুর), কীর্তনখোলা, খায়রাবাদ, খোলপেটুয়া, গড়াই, গুনাখালি, গলঘেসিয়া, গুলিশাখালী, ঘাঘর, ঘাসিয়াখালী, চত্রা, চুনকুড়ি, চন্দনা-বারাশিয়া, চাটখালী, চিত্রা, ঝপঝপিয়া, টর্কি, টিয়াখালি, ঢাকি, তেঁতুলিয়া, তেলিগঙ্গা-ঘেংরাইল, দড়াটানা-পয়লাহারা, দাড়ির গাঙ, দেলুতি, নুন্দা-উত্রা, নবগঙ্গা, নড়িয়া, নেহালগঞ্জ-রঙমাটিয়া, পটুয়াখালী, পুটিমারি, পুরাতন পশুর, পশুর, পাণ্ডব, পানগুছি, পালং, ফটকি, বগী, বুড়িশ্বর-পায়রা, বলেশ্বর, বাদুড়গাছা, বিশখালী, বিশারকন্দা-বাগদা, বিষ্ণু-কুমারখালি, বেগবতী, বেতনা, বেলুয়া, ভদ্রা, ভুবনেশ্বর, ভৈরব নদ, ভৈরব নদী (বাগেরহাট), ভৈরব-কপোতাক্ষ নদ, ভোলা, মংলা, মুক্তেশ্বরী টেকা, মধুমতি, মরিচ্চাপ-লবঙ্গবতী, মাথাভাঙ্গা, মাদারগাঙ, মাদারীপুর বিলরুট, মালঞ্চ, মিনহাজ, রূপসা, রাবনাবাদ, রায়মঙ্গল, লোহালিয়া, শাকবাড়িয়া, শাতলা-হারতা-নাথারকান্দা, শালদহ, শিবসা, শোলমারি, সুগন্ধা, সন্ধ্যা, সয়া-হাড়িভাঙ্গা, সাপমারা-হাবড়া, সালতা, সিরাজপুর হাওর, হরি, হরিহর, হামকুড়া, হাড়িয়া, হাপরখালী, হাবরখালী, হিশনা-ঝাঞ্চা নদী।<br />
<br />
<b>উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী:</b><br />
<br />
আখিরা-মাচ্চা, আত্রাই, আত্রাই বা কাঁকড়া (দিনাজপুর), আত্রাই বা গুড় (নওগাঁ-নাটোর), আত্রাই (পাবনা), আলাই, আলাইকুমারী, ইছামতি (দিনাজপুর), ইছামতি (পাবনা), ইছামতি (বগুড়া), ইছামতি (বগুড়া-সিরাজগঞ্জ), ইরামতি, করতোয়া, করতোয়া (নীলফামারী), কাগেশ্বরী, কাটাখালী (গাইবান্ধা), কালা, কালাপানি, কালুদাহা, কুমলাল-নাউতারা, কুরুম, কুলিক, খড়খড়িয়া-তিলাই, খালসিডিঙ্গি, গদাই, গভেশ্বরী, পদ্মা, গাংনাই, গিদারী, গিরাই, গুকসী, গোবরা, গোহালা, ঘড়িয়া খাল, ঘাঘট, ঘিরনাই, ঘোড়ামারা, চাওয়াই, চিকনাই, চিকলী, চিরি, চিড়ি, চুঙ্গাভাঙ্গা, ছাতনাই, ছোট ঢেপা, ছোট যমুনা, ছোট সেনুয়া, টাঙ্গন, ডাহুক, ঢেপা, তালমা, তিস্তা, তিস্তা (পঞ্চগড়), তীরনই, তীরনই (পঞ্চগড়), তুলসীগঙ্গা, দুধকুমার, দেওনাই-চাড়ালকাটা-যমুনেশ্বরী, ধরলা, ধাইজান, ধুম, নর্ত, নলশীসা, নলেয়া, নাগর আপার নদী, নাগর লোয়ার নদী, নারোদ, পলিমারি, পাগলা, পাথরঘাটা, পাথরাজ, পুনর্ভবা, পেটকী, ফকিরনী, ফুলকুমার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, বড়াল আপার নদী, বড়াল লোয়ার নদী, বাঙালি, বাদাই, বার্নাই, বান্নী, বুরাইল, বুল্লাই, বুড়িখোড়া, বুড়ি তিস্তা, বেরং, বেলান, বেসানী, বোরকা, ভাদাই, ভুল্লী, ভেরসা, মহানন্দা আপার নদী, মহানন্দা লোয়ার নদী, মাইলা, মালদাহা, মুসাখান, মানস, যমুনা (পঞ্চগড়), রতনাই, রামচণ্ডি, রাক্ষসিনী-তেঁতুলিয়া, লেংগা, লোনা, শিব, সতী-স্বর্ণামতি-ভাটেশ্বরী, সিমলাজান, সিরামাখালী খাল, সিংগিমারী, সুই, সেনুয়া, সোজ, হারাবতী, হুড়াসাগর নদী ।<br />
<br />
<b>উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী:</b><br />
<br />
আত্রাখালি, আবুয়া নদী বা নান্দিয়া গাং, আমরি খাল, ইসদার খাল-বারভাঙ্গা নদী, উপদাখালী, উমিয়াম, কর্ণঝরা, কর্ণ-বালজা, করিস, কাঁচামাটিয়া, কাপনা, কামারখাল, কামারখালী, কালদাহার-কানিয়াকুল, কালনী, কালাপানিঝরা, কুশিয়ারা, কোরাঙ্গী, খাজাচিং, খাসিমারা, খেপা, খোয়াই, গুমাই, ঘাগটিয়া, ঘানুরা-বগালা, ঘোড়াউত্রা, চামতি, চিতলখালী, চেলা, জাফলং-ডাউকি, জালিয়া ছড়া, জালুখালি, জুরী, ডাউকা, ধলা, দুধদা, দোলতা, ধনু, ধলাই-বিসনাই, ধলাই, নকলা-সুন্দ্রাকাশি, নরসুন্দা, নলজুর, নয়াগাং, নয়া গাং, নিতাই, পাটনাই-পাইকারতলা, পাবিজুড়ি-কুশি গাঙ-কুশিয়া, পিয়াইন, পিয়াইন (সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা), পুরনো সুরমা, পোড়া খাল-খাইয়া, বটরখাল, বড় গাং, বাউলাই, বাথাইল, বালই, বিজনা-গুঙ্গাইজুরি, বিবিয়ানা, বেকরা, বেতৈর, বেদুরি, ভাবনা-বাঁশিয়া-বহিয়া, ভোগাই-কংস, মগড়া, মনু, মরা সুরমা, মহারশি, মহাসিং, মালিজি, মিরগী, জাদুকাটা-রক্তি, লংলা, লাইন, লাউরানজানি, লুভা, সাইদুলি-বারনি, সাতারখালী, সারি গোয়াইন, সিনাই, সিঙ্গুয়া, সুতাং, সুরমা, সোনাই-বরদাল, সোমেশ্বরী, সোমেশ্বরী (ধর্মপাশা), সোমেশ্বরী নদী (শ্রীবর্দী-ঝিনাইগাতি) ।<br />
<br />
<b>উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী:</b><br />
<br />
আইমান-আখিলা, আইমান-মোবারি, আড়িয়াল খাঁ, ইছামতি (মানিকগঞ্জ), ইছামতি (সিরাজদিখান), ইলিশমারী, এলংজানী, কাটাখালি, কালিগঙ্গা (মানিকগঞ্জ), খিরো (ত্রিশাল), খিরো (ভালুকা), গাংডুবি, গাজীখালী, গোল্লার, চাতাল, চাপাই, চিলাই, জয়পাড়া খাল, ঝারকাটা, জিঞ্জিরাম, ঝিনাই, টঙ্গী, টংকি, তালতলা, তুরাগ, তুলসীখালী, ধলেশ্বরী, নাগদা, নাঙ্গলা, নালজুরি, নাংলী, পদ্মা, পাগারিয়া-শিলা, পারুলি খাল, পাহাড়িয়া, পুরনো ধলেশ্বরী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, পুংলী, বংশী, বংশী (সাভার), ব্রহ্মপুত্র (নরসিংদী-মুন্সীগঞ্জ), বাকসাতরা, বাজ্জা-মেধুয়া, বানার আপার নদী, বানার লোয়ার নদী, বালু, বুড়িগঙ্গা, বৈরান, বোশখালী, মরা জিঞ্জিরাম, মাহারি, মিনিখালী, লাবুন্ধা, লৌহজং, শীতলক্ষ্যা, সালদা, সুতী, সুতিয়া, সোনাখালী, হাই, হাড়িদোয়া নদী।<br />
<br />
<b>পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী:</b><br />
<br />
ইছামতি (রাঙ্গামাটি), ঈদগাও, কর্ণফুলি, কাসালং, চেঙ্গি, ডলু-টংকাবতী, নাফ, বুড়া মাতামুহুরী, বাঁকখালি, ভারুয়াখালি, ভোলাখাল, মাইনী, মাতামুহুরী, রাংখাইন, সাঙ্গু, হালদা নদী ।<br />
<br />
<b>দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী:</b><br />
<br />
আর্সি-নালিয়া, কাকড়ি, কাস্তি, গোমতী, ঘুংঘুর, ছোট ফেনী, ডাকাতিয়া, ডাসাডিয়া, তিতাস, পুরনো তিতাস, ধনাগোদা, ফেনী, বিজলি, বুড়ি, ভুলুয়া, মুহুরী, মেঘনা আপার নদী, মেঘনা লোয়ার নদী, লহর, লংগন বলভদ্রা, সালদা, সেলোনিয়া, সোনাই, হাওড়া নদী।<br />
<br />
<b>বাংলাদেশ-ভারত-মায়ানমার আন্তঃসীমান্ত নদীর তালিকা:</b><br />
<br />
ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা নদী- ৫৫টি, মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা নদী- ৩টি।
রায়মঙ্গল, ইছামতী-কালিন্দী, বেতনা-কোদালিয়া, ভৈরব-কপোতাক্ষ, মাথাভাঙ্গা, গঙ্গা, পাগলা, আত্রাই, পুনর্ভবা, তেতুলিয়া, টাংগন, কুলিক বা কোকিল, নাগর, মহানন্দা, ডাহুক, করতোয়া, তালমা, ঘোড়ামারা, দিওনাই-যমুনেশ্বরী, বুড়িতিস্তা, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম, চিল্লাখালি, ভোগাই, সোমেশ্বরী, দামালিয়া/যালুখালী, নয়াগাঙ, উমিয়াম, যাদুকাটা, ধলা, পিয়াইন, শারি-গোয়াইন, সুরমা, কুশিয়ারা, সোনাই-বারদল, জুরি, মনু, ধলাই, লংলা, খোয়াই, সুতাং, সোনাই, হাওড়া, বিজনী, সালদা, গোমতী, কাকরাই-ডাকাতিয়া, সিলোনিয়া, মুহুরী, ফেনী, কর্ণফুলি, নিতাই, সাংগু, মাতামুহুরী, নাফ নদী।<br />
<br />
<b>অন্যান্য নদী:</b><br />
<br />
আন্তঃসীমান্ত নদী এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবাহিত ৪০৫টি নদী ছাড়াও আরও প্রায় তিন শতাধিক নদী রয়েছে।
যেমনঃ আউলিয়াখানা, আমনদামন, আস্তাইল, কম্পো, কাওরাইদ, কাজীপুর, কালিন্দী, খাড়িয়া, গন্দর, গুমানি, খোয়াথল্যাংতুইপুই, চিলাই (সুনামগঞ্জ), চোরখাই, জলঢাকা, তেতুলিয়া, তৈনগাঙ, থেগা, নাগেশ্বরী, ধানখালী, ধানসিঁড়ি, নীলগঞ্জ, পঞ্চবেণী, প্রাণসায়র, ফটিকছড়ি, বরাক, বান্দসা, বুড়ো গৌরাঙ্গ, ময়ুর, রহমত খালি, রায়ডাক, লঙ্গাই, শুক, সোয়াই, হরবাংছড়া, হরিণঘাটা, হাড়িয়াভাঙা, হেরাচামতি নদী ইত্যাদি।<br />
<br />
এই নদীগুলো সম্পর্কে আরো জানতে <a href="https://play.google.com/store/apps/details?id=com.mcc.nodi&hl=en">রিভার্স অফ বাংলাদেশ</a> নামের অ্যাপটি আপনার ফোনে ব্যবহার করতে পারেন।
<br />
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEirBv2Gm9iMKKxj3KOed0SijFwLYmIlwDMiujzI1AlhsTGf2lMqeaDl0S5mMjr3gOWshrTLaErHQFVRTVReHNzF_5pODukX1n1njrUW9GRv1YtsFJoE7MxvjNB0lIilK5rG5z08XQ/s1600/Screen+Shot+2019-04-18+at+10.47.46+am.png" imageanchor="1"></a><a href="https://play.google.com/store/apps/details?id=com.mcc.nodi&hl=en"><img border="0" data-original-height="1160" data-original-width="1408" height="528" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEirBv2Gm9iMKKxj3KOed0SijFwLYmIlwDMiujzI1AlhsTGf2lMqeaDl0S5mMjr3gOWshrTLaErHQFVRTVReHNzF_5pODukX1n1njrUW9GRv1YtsFJoE7MxvjNB0lIilK5rG5z08XQ/s640/Screen+Shot+2019-04-18+at+10.47.46+am.png" width="640" /></a>
<br />
বাংলাদেশের নদী সম্পর্কে আরও কিছু তথ্যঃ<br />
<br />
১) বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী সুরমা (৩৯৯কিমি)<br />
২) বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক নদী পদ্মা নদীর অপর নাম কীর্তিনাশা। পদ্মা নদীর উৎপত্তি স্থল গঙ্গোত্রী হিমবাহ। কুমির সদৃশ ঘড়িয়াল দেখা যায় কোথায় – পদ্মনদীতে। পদ্মা মেঘনার সাথে মিশেছে চাঁদপুরে।পদ্মার শাখা নদী হল ইছামতি, গড়াই, ভৈরব, কুমার, আড়িয়ার খাঁ।পদ্মার একমাত্র উপনদী মহানন্দা। ৩২৪ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্যের পদ্মা বাংলাদেশের সবচেয়ে নাব্য নদী।<br />
৩) বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া নদী- ১টি (কুলিখ)<br />
৪) বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট নদী – গোবরা (তেঁতুলিয়া), ৪ কিমি।<br />
৫) বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী মেঘনা।<br />
৬) বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রশস্ত নদী যমুনা।<br />
৭) বাংলাদেশের সবচেয়ে র্দীঘতম নদী ব্রহ্মপুত্র।
<br />
<br />
<i>ছবি এবং তথ্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ <a href="https://www.facebook.com/photo.php?fbid=849824215376582&set=a.126775597681451&type=3">আমিনুল ইসলাম তুহিন</a>।</i> </div>
Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-18912897954050716362012-07-22T04:51:00.000+06:002012-07-23T04:54:43.705+06:00দোহাই মিডিয়া, থামলে ভাল লাগে<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
দেশে একসময় সবেধন নীলমণি ছিল সাহেব বিবির বাক্স বিটিভি। সে সময় সেটি
মূলত: সরকারের কথা বললেও টিভি নাটক, ইংরেজী সিরিয়াল, ডকুমেন্টারি, কার্টুন
ইত্যাদি কিছু বিষয়ে ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই উপমহাদেশে রাষ্ট্রীয় টিভি
চ্যানেলের মনোপলি ঘুচায় স্যাটেলাইট টিভি। ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে এমটিভিতে
বাবা সায়গলের মিউজিক ভিডিও (ঠান্ডা ঠান্ডা পানি) এবং জি নিউজের অনুসন্ধিৎসু
খবরের আয়োজন উপমহাদেশের দর্শকদের নতুন যুগের আস্বাদ দেয়। বাংলাদেশ যোগ দেয়
একটু পরে। ১৯৯৭ সালে চ্যানেল আই ও এটিএন বাংলার পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
শুরু হয়। এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস। বাংলাদেশে মনে হয় এখন গোটা বিশেক স্যাটেলাইট টিভির সম্প্রচার হয়।<br />
<br />
দেশের স্যাটেলাইট টিভিগুলো একদিকে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর
একঘেয়ে ও একপেশে অনুষ্ঠান এর বদলে দর্শকদের নিজেদের পছন্দের কিছু দেখার
সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এইসব চ্যানেলের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে কিছু কর্পোরেট
হাউজ এবং তাদের পেছনের কিছু রাজনৈতিক দর্শন ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ী।
বেশীরভাগ চ্যানেলেরই নিজস্ব কোন উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য নেই। এসব অনেক সময়
চালানো হয় নিজের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি দেখানোর জন্যে, আর ব্যবসায়ীক
প্রতিদ্বন্দ্বীদের টেক্কা দেবার জন্যে বা তাদের প্রতি কুৎসা রটনার জন্যে।
আক্ষেপ হয় দেশে এখনও পৃথক কার্টুন, এডুকেশন বা স্পোর্টস চ্যানেল হল না।<br />
<br />
বিটিভির অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকের অভিযোগ থাকলেও শাইখ সিরাজের 'মাটি ও
মানুষ' কিংবা ফেরদৌসী রহমানের 'এসো গান শিখি' ছিল আপামর জনসাধারণের
অনুষ্ঠান এবং খুবই জনপ্রিয়। স্যাটেলাইটের যুগে হাজারো অনুষ্ঠানের ভীড়ে
সেরকম উল্লেখ করার মত অনুষ্ঠান খুবই কম। এখনকার অনুষ্ঠানের মধ্যে বেশীরভাগই
মধ্যবিত্তদের উপদেশ দেয়ায় ব্যস্ত - কিভাবে গ্ল্যামারযুক্ত জীবন যাপন
করবেন, কোথায় যাবেন, কি পড়বেন, কি শুনবেন, কি দেখবেন, ইত্যাদি। আর রয়েছে
গান, মডেলিং ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা নিয়ে রমরমা বাণিজ্য। আমার এক
আভিজ্ঞতা বলি - খাগড়াছড়িতে গিয়েছিলাম - সেখানে কোন এক টিভি চ্যানেলের গানের
প্রতিযোগীতায় এক আদিবাসী বালিকার জন্যে এসএমএস ভোটের জন্যে যে পরিমাণ
তদবির, ক্যাম্পেইন, মিছিল ইত্যাদির কথা শুনলাম তাতে মনে হল ব্যাপারটি
অসুস্থতার পর্যায়ে গিয়েছে। সেই মেয়েটি জিতেছিল কিনা জানিনা - তবে মানুষের
এই আবেগকে পুঁজি করে সেই চ্যানেল আর মোবাইল কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা
কামিয়ে নিয়েছে নিশ্চয়ই - এই ব্যাপারগুলো কিন্তু সংবাদ হয় না।<br />
<br />
আপনি খবরের কাগজ খুলে দেখুন, নানা চটকদার খবরের ভীড়ে গণ্ডগ্রামের সেই
ক্ষুদ্রঋণের ভার সইতে না পারা কৃষকের আত্মহত্যার খবর আসে না। মিডিয়া এখন
শ্রেণীতোষণে ব্যস্ত। তাদের বিজ্ঞাপনী আয়ের মোটা অংশ আসে মোবাইল কোম্পানী
থেকে - কাজেই সেসব কোম্পানী নিয়ে সমালোচনামূলক লেখা কম। অমুক তারকা, তমুক
বুদ্ধিজীবী কি বলেছেন, তারা ঈদের দিনে কি করবেন বা খাবেন সেটি নিয়ে ফিচার
হয়।<br />
<br />
<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><img alt="" class="bb-image" height="300" src="http://globalvoicesonline.org/wp-content/uploads/2012/07/newslive-640x480.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;" width="300" /></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><span style="font-style: italic;">ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা <a class="bb-url" href="http://blog.blanknoise.org/2012/07/mob-and-camera.html">ব্ল্যান্ক নয়েজ</a></span></td></tr>
</tbody></table>
<br />
আমরা দেখছি এখন মিডিয়াতে তুচ্ছ সব বিষয়ের গ্ল্যামারাইজেশন, খবর সংগ্রহে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আসামের গৌহাটিতে একটি আদিবাসী <a class="bb-url" href="http://bn.globalvoicesonline.org/2012/07/19/28743/">মেয়ের উপর চড়াও হল গোটা বিশেক উশৃঙ্খল যুবক</a>।
এক টিভি ক্যামেরাম্যান ৩০ মিনিট ধরে ভিডিও ধারণ করল মেয়েটিকে সাহায্য না
করে। বিডিআর বিদ্রোহের সময় দেখেছি মিডিয়া কি করে ভুল কবরের পেছনে ছুটেছে।
সাগর রুনির হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের আগে গিয়ে আলামত নষ্ট করেছে কারা?<br />
<br />
বর্তমানে মিডিয়ার পুঁজি হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ। মানুষের আবেগের
যায়গাগুলো ধরতে পারে তারা ঠিকই। মৃত্যুর সংবাদ পাবার আধাঘন্টার মধ্যেই কিছু
লোক পৌঁছে যায় টিভি চ্যানেলে - টকশোতে নিজেদের তুলে ধরতে। প্রতিটি
চ্যানেলে হুমায়ূনকে ভেজে খাওয়া হচ্ছে নানা ভাবে। কফিনের ভেতরের লাশের ছবি
দেখাচ্ছে অনেকে। আমরা নাদান দর্শক সেগুলো গোগ্রাসে গিলছি আর হাপুস নয়নে
কাঁদছি। হ্যা, আমাদের চোখের জলই, আমাদের আবেগই তাদের উপজীব্য। আমরা প্রশ্ন
করছি না কেন এত বাড়াবাড়ি।<br />
<br />
এই শেনসেশনালিজমের মূলে রয়েছে যে কোন মূল্যে খবর বেঁচা - মানুষকে
আচ্ছন্ন করে রাখা। এ রিপোর্টিংয়ে খবরের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কোন গভীর ধারনা
থাকে না, এতে থাকে পক্ষপাতিত্ব, দুর্নীতি। এই রিপোর্টিংয়ে জরুরী খবর চাপা
পড়ে - তুচ্ছ খবর লাইম লাইটে আসে। এ ধরনের রিপোর্টিংয়ে মানুষের প্রাইভেসি
বা শোককে পুঁজি করে।<br />
<br />
এ অবস্থা থেকে উন্নতির উপায় কি আমি জানি না। অনিন্দ্যের পোস্টে আকুতি ছিল - "<a class="bb-url" href="http://www.sachalayatan.com/aninda21/45469">দয়া করে হুমায়ূন আহমেদকে শান্তিতে মরতে দেন</a>"। আমি বলছি মিডিয়াকে "থামলে ভাল লাগে"। অচিরেই না থামলে ভবিষ্যৎে দর্শকরা অন্য কোন বিকল্প খুঁজে নেবে।<br />
<br />
<i>প্রথম প্রকাশ <a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/45499">সচলায়তন </a>এ।</i><br />
<span style="font-style: italic;"><br /><a class="bb-url" href="http://blog.blanknoise.org/2012/07/mob-and-camera.html"></a></span></div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-77677041588332861662012-04-05T04:46:00.000+06:002012-07-23T04:51:23.685+06:00বিবেকহীন বস্তি উচ্ছেদ ও নীরব দর্শক<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
গতকাল বুধবার সকালে বেদখলকৃত সরকারী জমি উদ্ধারে বনানী এলাকার করাইল বস্তি উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মেটোপলিটন পুলিশের ৪ প্লাটুন মোতায়েন করা হয়। <a href="http://newsmedia24.net/?p=10353">সরকারী ভাষ্যমতে</a> বেদখলকৃত ১৭০ শতাংশ জমির মধ্যে ৮০ শতাংশ বিটিসিএলের মালিকানাধীন ও ৪৩ শতাংশ পিডব্লিইডি’র এবং বাকি জমি আইসিটির। <br />
<br />
এক অসমর্থিত খবরে জানা গেছে যে বুলডোজারের নীচে শত শত বস্তি ধ্বংস হবার সময় ঘুমন্ত দুই শিশু মারা যায়। হ্যা তাদের জানানো হয়েছিল উচ্ছেদের কথা গত মঙ্গলবার বিকেলে - স্থানীয় ভাবে মাইকিং করে। কিন্তু এই দুই শিশুর পিতামাতা হয়ত আমলে নেয়নি। গত বছর ২০শে সেপ্টেম্বর রাজউক এরকম স্বল্প নোটিসে আরেকটি উচ্ছেদ অভিযান চালায় সেখানে। পুলিশ আর পাড়ার মাস্তানদের দ্বারা ১২০টিরও বেশী পরিবার উচ্ছেদ করা হলেও পরে তারা আবার এসে বাসা করে। গত ২০০৮ সালে প্রথম পিডাব্লিউডি উচ্ছেদের নোটিশ পাঠালে আইন ও শালিস কেন্দ্র পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ মানবাধিকার লঙ্ঘন এই বলে হাইকোর্টে একটি স্টে অর্ডার নেয়। সেই মামলার বিভিন্ন শুনানীতে পুনর্বাসনের কথা বলা হয় তবে গত জানুয়ারীতে হাইকোর্ট সরকারকে আদেশ দেয় দুই মাসের মধ্যে এই বেদখলকৃত জমি উদ্ধার করতে - তবে সেখানে পুনর্বাসনের কোন কথা বলা হয় নি।<br />
<br />
করাইল এলাকার এইসব ভূমিহীন বস্তিবাসীর <a href="http://www.thedailystar.net/magazine/2012/02/04/perspective.htm">৩০ ভাগ দিনমুজুর, ২০% রিক্সা-ভ্যান চালায়, ১৮% গার্মেন্টস কর্মী ও ১২% ছোট ব্যবসা করে</a>। তাদের মাসিক আয় ২৫০০-৪৫০০ টাকা এবং স্থানীয় মান্তানদের ৮০ স্কয়ার ফিটের ঘর ভাড়া দিতে হয় ৮০০-১২০০ টাকা।<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://p.twimg.com/ApssFI2CAAERfwD.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="268" src="https://p.twimg.com/ApssFI2CAAERfwD.jpg" width="400" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">হ্যা, আমাদেরও ঈদ হয়। ছবি ডেভিড হোয়াইটের সৌজন্যে</td></tr>
</tbody></table>
<br />
<div style="text-align: center;">
(আরও <a href="http://duckrabbit.info/blog/2009/12/karail-slum-dhaka-bangladesh-morning-of-eid-2009/">ছবি এখানে</a>)</div>
<br />
এই টাকায় তাদের কিভাবে চলে সে খেয়াল কি রাখে কেউ? জ্যাম এড়াতে আমি অনেক সময় রিক্সায় তেজগাঁয়ের রেললাইনের পাশের বস্তি ও ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারীদের বাসস্থান এর পাশের রাস্তাটি দিয়ে আসি। বিজয় স্বরণী ও তেজগাওঁ এর ওভারব্রিজের নীচে এক অদ্ভুত বাজার বসে। কাছাকাছি কাওরান বাজারে যেসব শাক-সব্জি আসে সেসব ট্রাক থেকে নামানোর সময়টা কখনও দেখেছেন কি? কিছু বস্তির ছেলে চাপ খাওয়া, নষ্ট হওয়া শাক সব্জি সংগ্রহ করে সেখান থেকে, এবং অনেকসময় ভালগুলো চুরি করে - অবশ্যই শারীরিক প্রহার এবং গালাগালির ঝুঁকি মাথায় নিয়ে। সেইসব শাকসব্জি এবং হয়ত সরাসরি আড়ত থেকে পঁচে যাওয়া শাক-সব্জি দিয়েই উল্লেখিত বাজারটি সাজানো। সারি করে বিছিয়ে রাখা পাকা করলা, থেৎলানো পটল, পঁচা শসা, কাল হয়ে যাওয়া আলু - এগুরো নিত্য নৈমিত্তিক চিত্র। এখানে বাজার করতে আসে বস্তির নিম্নবিত্তরা। হ্যা, আমাদের মত বেশী দামের ফ্রেস সব্জি কেনার সামর্থ না থাকতে পারে, কিন্তু তাদেরও তো বাঁচতে হয়। বাজারের একটি মাত্র মাংসের দোকানে ঘন্টার পর ঘন্টা একটি মাংসের পিস ঝুলে প্রমান করে তারা - না তাদের জীবনেও বিশেষ অনুষ্ঠান থাকে যখন তারা মাংস খেতে পারে।<br />
<br />
কিন্তু এই বস্তিবাসীদের আবাসহীন করা ঠেকাতে তেমন কেউ নেই তাদের পক্ষে লড়ার। কিছু <a href="http://www.demotix.com/news/1059659/karail-slum-dwellers-demand-protection-dhaka">এনজিও প্রেসক্লাবে মানববন্ধন করেছে</a> এবং অনেকে <a href="http://www.bangladeshnews24x7.com/?p=28947">পত্রপত্রিকায় লিখছে।</a> কিন্তু আমাদের কার সময় আছে সেগুলোর প্রতি দৃষ্টি দেবার?<br />
<br />
তত্বাবধায়ক সরকারের সময় মিরপুরে বস্তিবাসীদের জন্যে বাসস্থান করার কথা উঠল। সেটা আর এগোয় নি। কে করবে বলেন। তাদের জন্যে করে কার কি লাভ হবে?<br />
<br />
আজকে বস্তিবাসীরা মহাখালীতে মানববন্ধন করছে। বনানী গুলশান এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সেখানে কোন রিক্সা চলছে না - ধর্মঘটে গেছে তারা। আমাদের সাধারণ প্রতিক্রিয়া কি হবে ভাবছি। অসহ্য গরমে ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাফিক জ্যামে থেকে সরকারের গুষ্টি উদ্ধার করব। তাতে পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে না। এসব ভূমিহীন মানুষ আবার বসতি গড়বে নতুন কোন করাইলে। আমরা আমাদের সমস্যাকে শুধু এড়ানোর চেষ্টা করব - ঢাকাকে তিলত্তোমা করার কথা বলব কিন্তু সমস্যা মিটবে না। এ জন্যে আমরা নীরব দর্শকরাও অনেকটা দায়ী।<br />
<br />
(ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা <a href="http://www.dskbangladesh.org/shiree/shiree_more.php?kbr=karail">দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র</a>)</div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-48012343989061890212012-02-12T04:45:00.000+06:002012-07-23T04:46:22.263+06:00এ-কেমন মৃত্যু ?<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
আজ সকালে মেইল চেক করার সময় বন্ধু চ্যাটে এল ও জানালো আজকের দিনের বিভীষিকাময় খবরটি - <a href="http://www.bdnews24.com/details.php?cid=2&id=218065&hb=top">সাংবাদিক সাগর সরোয়ার ও টিভি রিপোর্টার মেহেরুন রুনীর নৃশংস হত্যাকান্ড</a>। সে বলছিল "গতকাল রাতেই সাগরকে একটি প্রেস রিলিজ পাঠিয়েছিলাম - আজকে সেটাই হাতে নিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছি।"<br />
<br />
এইতো একদিন আগেও যারা ছিলেন সুখী দম্পতি, আজ শুধুই স্মৃতি আর ছবি। সারাদিন ফেসবুকে সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে সাগর-রুনী নিয়ে শোকগাথা ও স্মৃতিচারণ, তাদের ছেলে মেঘকে নিয়ে নানা কথা পড়তে পড়তে ও ছবি দেখে আমরাও শোকাচ্ছন্ন ও ভারাক্রান্ত হই বইকি।<br />
<br />
সাগরের ডয়েশে ভেলেতে চাকুরির সুবাদে দম্পতিটি জার্মানিতে প্রবাস জীবন কাটিয়ে গত বছর ফিরে এসেছেন। অন্য অনেকের মত বিদেশে থেকে জাননি। হয়ত দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ভাগ্যে রইল বিভীষিকাময় মৃত্যু।<br />
<br />
অনেকের মনেই নানা প্রশ্ন - এটা কি ডাকাতি না প্রতিহিংসামূলক খুন। তারা দুজন কি তাদের রিপোর্টিং এর জন্যেই কোন শক্র তৈরি করেছিলেন? নাকি এটি কোন পারিবারিক বিরোধ? সেসব হয়ত জানা যাবে অথবা যাবে না। তবে আমাদের সমাজ যে অমানবিক ও কলুষিত হয়ে গেছে তা বোঝা যায় ঘাতকদের আচরণে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ীঃ "সাগরের দেহে ১৯টি বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এছাড়া ছোটখাটো আরো ২০-২৫টি কাটা দাগ পাওয়া গেছে। বুকের বাম পাশে একটা ছুরির ৮০ ভাগ গেঁথে ছিল।" হায়, এ পোড়ার দেশে খুনেও রহম নেই।<br />
<br />
এ মৃত্যু আমাদের অনেককেই নাড়িয়ে দিয়েছে। এসব জেনে নির্লজ্জ স্বাভাবিক থাকা যায় না। তবে বাস্তবতা এই যে দেশে নানান নৃশংসতা অব্যহত রয়েছে ও থাকবে। কারন আমরা কখনও মূল নিয়ে ভাবি না। সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। পাওয়া আর না পাওয়ার দলের মধ্যে একধরণের অবিশ্বাসের ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। ফলে দেখা যায় খুব অল্প খরচ করেই মানুষ খুন করা যায়। আর নৃশংসতার ব্যাপারটিও সমাজসৃষ্ট। কোরবানীর সময় অভিভাবকরা অতি উৎসাহে সন্তানদের পশু জবাই করা দেখাব। পাকিস্তান ও গুটি কয়েক দেশ ব্যতিত পৃথিবীর কোথাও প্রকাশ্যে পশু জবাইয়ের চল নেই। ফলে লক্ষ্য করবেন এসব দেখে দেখে শেখার ফলে দেশে জবাই ও ছুরিকাঘাতে মৃত্যুর হার বেশী। কিন্তু এ নিয়ে রাষ্ট্র বা বুদ্ধিজীবীরা ভেবেছে কখনও?<br />
<br />
আজ আরেক প্রবাসী বান্ধবীর সাথে কথা হচ্ছিল। সে দেশে ফেরার জন্যে চাকুরি খুঁজছে কিছুদিন ধরে। আজকের সংবাদে মুহ্যমান সে বলল এখন আমি ফেরার ব্যপারে নতুন করে ভাবব। এতদিন ফিরে আসার জন্যে উদ্বুদ্ধ করলেও আজ তাকে কোন কিছু বলতে পারিনি। এই মৃত্যু উপত্যকা থেকে আমার দেশকে ফিরে কেড়ে না আনলে আমি তার নিরাপদ ভবিষ্যৎের প্রতিশ্রুতি দেই কিভাবে?</div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-88990230768322512802012-01-22T04:33:00.000+06:002012-07-23T04:43:18.871+06:00ভিআইপিতন্ত্র<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
ক্লাস টুতে স্কুলের বাংলা টিচার আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে বড় হলে কি হব। আমি উত্তর দিয়েছিলাম 'পুলিশ'। কারন পুলিশরা তখন আমার চোখে ছিল বীরত্ব-ক্ষমতার প্রতীক। এখন যদি আমাকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, তাহলে চোখ বুঁজে অবশ্যই বলব ভিআইপি।<br />
<br />
ভিআইপির সঠিক কোন সংজ্ঞা নেই, স্বার্থ আর ক্ষমতাই তাদের নিয়ন্ত্রক। ভিআইপি হতে লাগে না কোন যোগ্যতা, ন্যুনতম মনুষ্যত্ব বা পড়াশোনা। 'লেখাপড়া করে যে গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে' ধরণের তত্ব এক্ষেত্রে অচল। বাংলাদেশের শতাধিক এমপির শিক্ষাগত যোগ্যতা "স্বশিক্ষিত"। সেই স্বশিক্ষিতদের হাতে আমার শৈশবের হিরো পুলিশকে অনায়াসেই <a href="http://www.bdnews24.com/details.php?cid=2&id=170800&hb=top">চড় খেয়েও</a> তা হজম করতে হয়। বহু বিচারকের একটি করে অন্তত থার্ড ডিভিশন রয়েছে। তারপরও আপনি যদি ভুলে যান যে তারা সাধারণ মানুষ নয়, বিচারপতি, তাহলে হয়ত আপনাকে <a href="http://www.banglanews24.com/English/detailsnews.php?nssl=bdbf9f2a1411d76db73c21774ae1a96e&nttl=2011120928831">হাইকোর্টে</a> হাজির হয়ে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে।<br />
<br />
এই ভিআইপি সংস্কৃতি কি করে বাঙ্গালীদের গ্রাস করল? মুগল সম্রাটেরা তাদের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের জন্য বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকারসূত্রে জমির মালিক ভূঁইয়া বা ভূপতিদের নিয়ে জমিদারতন্ত্র চালু করেন। মুগল আমলে জমি ছিল মর্যাদার প্রতীক এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির একটি উৎস - কারন জমিদারকে পুলিশ, বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর কিছু দায়িত্ব পালন করতে হতো। উচ্চাভিলাসী জমিদাররা শাসকশ্রেণীকে তুষ্ট করার বিনিময়ে সার্বভৌম ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন। ঔপনিবেশিক আমলেও জমিদাররা ছিলেন বহাল তবিয়তেই তবে তাদের খাজনা আদায় ছাড়া অন্যান্য ক্ষমতা হ্রাস পায়। ১৯৫১ সালে জমিদারি ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক বিলোপ হলেও জমিদার বাহাদুররা ঠিকই রয়ে গেছেন অন্য চেহারায়। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে জমিদারতন্ত্রের মীথ প্রথিত। ফলে অর্থের প্রাচুর্য বা ক্ষমতাধর হলে সেই জমিদারী মানসিকতা জেগে ওঠে। তারা এবং তাদের আশেপাশের লোকেরা ভিআইপি স্ট্যাটাসের সুবিধা ভোগে তৎপর হয়ে ওঠে। এমনকি প্রভাবশালী নেতার <a href="http://www.dainikazadi.org/first_details.php?news_id=3867">মুরগীরও ভিআইপি স্ট্যাটাস</a> পাবার নজির দেখা গেছে।<br />
<br />
আপনার <a href="http://www.prothom-alo.com/detail/news/199603">দৈনন্দিন জীবনে নানা সমস্যার</a> মধ্যে আপনারা ভিআইপির উপস্থিতি টের পাবেন। এই দেশটি স্পষ্টতই ভিআইপিদের দেশ হয়ে উঠেছে। আপনি ভিআইপি হলেন তো বিনা ঘুষে, বিনা পুলিশী ঝামেলায় আপনার জীবন চলবে। আপনার ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হবে না, কারন বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থায় আপনার চলাচল। আপনি বিদেশের ভিসা সহজে পাবেন। ভিআইপিদের মধ্যে কি কেউ বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে মারা গেছে?<br />
<br />
এই কারনেই আমরা সবাই ভিআইপি হতে চাই। পরিচয়ের পর কয়েকটি বাক্যের মধ্যে আমরা উচ্চারণ করে ফেলি আমরা কোন ভিআইপির কত কাছের। ভাবি এতেই যদি শিকে ছিঁড়ে। সকলের জন্যে সমান অধিকার এই জিনিষটি আমরা মুখে বললেও তলে তলে লালায়িত থাকি একটু ভিআইপি সুখের।<br />
<br />
এই ভিআইপিতন্ত্রের বুকে কিছুটা চির ধরিয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর টুলস। ইন্টারনেট ও মোবাইল সহজলভ্য হবার সাথে সাথে যোগাযোগের নিমিত্ত এখন হাতের মুঠোয়। ব্লগে, ফেসবুকে সবাই আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি। এখন বুদ্ধিজীবীরা আগের মত আর বিবৃতি দিয়ে সুখ পান না- কারন আম জনতা তাদের চেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কথা বলে ফেলে। বিশ্বের অনেক নামিদামী পত্রিকা বিদেশী সংবাদদাতা তুলে নিচ্ছে - কারন ব্লগ-টুইটারে ব্রেকিং নিউজ মিলে। ওপেনসোর্স, ক্রিয়েটিভ কমন্স, ক্রাউডসোর্সিং, কমিউনিটি, কোলাবরেশনের মাধ্যমে শেয়ার্ড নলেজ - উইকিপিডিয়া, ইউটিউব, ফ্লিকার, ফেসবুক, ব্লগ কমিউনিটি। ওয়েবের মাধ্যমে কোটি লোকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সৃষ্টি সবার হাতের মুঠোয়। এইসব শত শত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের <a href="http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,1570810,00.html">২০০৬ সালের ম্যান অফ দা ইয়ার</a> সম্মান দেয়।<br />
<br />
১৯৯৯ সালে ন্যাপস্টার সবার নিজস্ব সঙ্গীত আর্কাইভ উন্মুক্ত করার মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে গান আদান প্রদান সহজলভ্য করে দিল। সঙ্গীত ইন্ডাস্ট্রি প্রমাদ গুনল। অচিরেই তাদের নামে মামলা হল এবং ২০০১ সালে এটি বন্ধ হয়ে গেল। ন্যাপস্টারের দুর্বলতাগুলো জয় করে পরে র্যাপিডশেয়ার, মেগাআপলোড, ড্রপবক্স এর মত শেয়ারিং সাইট জন্ম নেয়।
সম্প্রতি আবার এইসব শেয়ারিং সাইট ও কোলাবরেটিভ কন্টেন্ট এর বিরুদ্ধে আটঘাট বেঁধে লাগা হচ্ছে। বহুল আলোচিত <a href="http://joi.ito.com/weblog/2012/01/15/why-we-need-to.html">সোপা ও পিপা আইন</a> চালু হলে টুইটার বা ইউটিউবএর মত সাইটকে প্রতিটি পোস্ট পরীক্ষা করে পাবলিশ করতে হত (<a href="http://joi.ito.com/weblog/2012/01/15/why-we-need-to.html">এখানে বিস্তারিত</a>)- যা বাস্তবে সম্ভব নয়। ব্যপক প্রতিবাদের মুখে আইনগুলো পাশ করা থেকে বিরত রাখা গেছে, কিন্তু এরকম চাপ আরও আসবে মেধাস্বত্ত রক্ষার নামে।<br />
<br />
মোগাআপলোডের বিরুদ্ধে কপিরাইট লংঘন আর ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী ক্ষতিসাধনের <a href="http://abcnews.go.com/Technology/wireStory/apnewsbreak-feds-shut-file-sharing-website-15396093#.Txif7IEWTa6">অভিযোগ এসেছে</a> এবং একে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেগাআপলোড কোম্পানিটি হংকংএর এবং পাইরেসীর অভিযোগে অভিযুক্ত এর কিছু কন্টেন্ট আমেরিকার লিজড সার্ভারে রাখার কারনে ফেডারেল কোর্ট তাদের জুরিস্ডিকশন দাবী করে। আমেরিকার অনুরোধে নিউজিল্যান্ড থেকে এর তিনজন (জার্মান ও ডাচ) হর্তাকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর প্রতিবাদে বেনামী হ্যাকাররা আমেরিকার জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট, এফবিআই, কপিরাইট অফিস, ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ ইত্যাদির <a href="http://www.reddit.com/r/politics/comments/oo03c/anonymous_is_on_a_hacking_spree_to_revenge_the/" >ওয়েবসাইট হ্যাক করে</a>।<br />
<br />
এক স্বদেশীর বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেবার জন্যে মামলা ঠোকা হয়েছে। ফেসবুক একটি ক্লোজড সাইট। কাজেই এখানে অসদাচরণ প্রদর্শনের (?) জন্যে বড়জোড় চাকুরিজীবির বিভাগীয় শাস্তি হতে পারে, মামলা নয় (জুরিস্ডিকশনের ব্যাপারটিও আছে), যেখানে সে ভুল স্বীকার করে স্ট্যাটাসটি মুছে দিয়েছে। তার অনুপস্থিতির কারনে আদালত অবমাননার শাস্তি প্রদান যেন ঝিকে মেরে বৌকে শেখান - খবরদার বাড়াবাড়ি করবে না। অথচ জামাত নেতা জনসভায় প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হুমকি দেয়। তার বিরুদ্ধে মামলা হয় না - কারন সে রাজনৈতিক ভিআইপি।<br />
<br />
এইভাবে বিশ্বজুড়ে সাধারণ অনলাইন ব্যবহারকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সংবাদ বা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্যে। ওদিকে অসাধু ভিআইপি রাজনীতিবিদরা তাদের বিশ্বব্যাপী গোপন ব্যান্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ কোটি টাকা আদান প্রদান করে অস্ত্র বা নিষিদ্ধ জিনিষ কিনছে -কারুরই মাথা ব্যাথা নেই।<br />
<br />
গুয়াতেমালাতে আমেরিকার চাপে একটি বিশেষ কোর্ট এবং দুটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে কপিরাইট আইনের জন্যে। দেড় কোটি মানুষের এই দেশে প্রতি বছর ৬০০০ লোক খুন হয় এবং খুনীদের বিচার হয় না। মাইকেল জ্যাকসনের পাইরেট গান ডাউনলোড করার জন্যে কারও পাঁচ বছরের সাজা হতে পারে - অথচ তাকে খুনের দায়ে ডাক্তারের সাজা হয়েছে একবছর।<br />
<br />
ইন্টারনেটকে সাধারণ মানুষের হাত থেকে ভিআইপিদের কব্জায় নিয়ে আসার জন্যে তোড়জোড় হচ্ছে আমাদের দেশেও। কপিরাইট আর সাইবার আইনের পক্ষে সোচ্চার হচ্ছে কতিপয় গোষ্ঠি। প্রথমে একশ্রেণীর মিডিয়া কর্পোরেট ব্লগ চালু করে মতামত প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে। এটি করছে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। বিভিন্ন সভা সমিতির মাধ্যমে তারা ব্লগ ভিআইপি সাজার চেষ্টায় ব্যস্ত।<br />
<br />
ইন্টারনেটকে ভয় ভীতির উর্ধ্বে রেখে সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য না করতে পারলে এটি অন্য সব মাধ্যমের মতই ভিআইপি নিয়ন্ত্রিত হবে। মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে পারলে কাদের লাভ হয় তা মানুষ চীন, উত্তর কোরিয়া, ইরান ইত্যাদি স্বৈরাচারী শাসকের দেশ থেকে অনুমেয়। আমাদের তাই ভাবতে হবে - আমরা আমাদের এবং সাধারণ মানুষের অধিকারের লক্ষ্যে লড়ব না ভিআইপি হবার ইঁদুর দৌড়ে যোগ দেব।</div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-4930927363920429672011-11-05T04:17:00.000+06:002012-07-23T04:58:57.587+06:00জাগো বাংলাদেশ নিয়ে যত কথা<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
গতকাল অফিসে যাবার সময়ে শেরাটন হোটেলের সামনের মোড়ে দেখলাম হলুদ টিশার্ট পরা কয়েকজন ছেলেমেয়ে বিভিন্ন গাড়ির কাছে এসে কিছু জিজ্ঞেস করছে। গাড়ি সিগন্যালে থামতেই ১৪-১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী এগিয়ে এল। স্যার বলে সম্ভাষণ করে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা শুরু করতেই গাড়ি আবার নড়ল। দ্রুত পকেটে হাত দিয়ে কিছু টাকা হস্তান্তর করতেই Primary Education For All লেখা একটি স্টিকার পেলাম। অন্য গাড়িতে দেখলাম ফুল দেয়া হচ্ছে।<br />
<br />
এরপর অফিস যেতে যেতে ভাবছিলাম যে ওইখানে প্রায়ই পথশিশুরা ফুল নিয়ে দাড়িয়ে থাকে অথচ তাদের কাছ থেকে কালে ভদ্রে কিছু কেনা হয় না। তাহলে আমি ঐ হলুদ পোশাক পড়া কিশোরীকে কেন সাহায্য করলাম?
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="http://www.sachalayatan.com/system/files/jafariqbalsylhet.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="350" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/jafariqbalsylhet.jpg" width="500" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">(ছবি: গতকাল সিলেটে ড: জাফর ইকবাল ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের হলুদ টি শার্ট পরা। সৌজন্যে জাগো বাংলাদেশ ও টিটিএল)</td></tr>
</tbody></table>
<br />
বিভিন্ন ব্লগে এই নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে যার বেশীরভাগেই দেখলাম তথ্যের অভাবে গালগল্প, ব্র্যান্ডিং ও কাঁদা-ছোড়াছুড়ি চলছে। এইসব কিশোর-কিশোরী বা তাদের কে পাঠিয়েছে তা সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? কালকের এই আয়োজনটি কিন্তু রীতিমত পাবলিক ক্যাম্পেইন করা একটি কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকতার উদ্যোগ। <a href="http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=208857">ডেইলি স্টারে</a> এসেছে যে জাগো বাংলাদেশ নামক এনজিওর ভলান্টিয়ার্স ফর বাংলাদেশ শাখার প্রায় ৭০০০ স্বেচ্ছাসেবক যারা বিভিন্ন ইংরেজী ও বাংলা মাধ্যমের স্কুল এবং কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ে তারা দেশের দশটি শহরে রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাড়িয়ে জাতিসংঘের উৎসাহে প্রবর্তিত ইউনিভার্সাল চিলড্রেনস ডে সম্পর্কে জানাবে এবং পথশিশুদের জন্যে অর্থ সংগ্রহ করবে ৩রা নভেম্বর ২০১১ তারিখে। একই দিনে তারা ১৮০০ পথশিশুকে বিভিন্ন খেলার যায়গায় নিয়ে যাবে, তাদের খাবার এবং চিকিৎসা দেবে। এর মূল স্পন্সর আমেরিকান দুতাবাস এবং সহায়তা করেছে এয়ারটেল, পিজ্জা হাট, কেএফসি, ফারইস্ট লি: ওয়ান্ডারল্যান্ড, টিটিএল এবং অন্যান্য সংস্থা। অনেক প্রতিথযশা যেমন জাফর ইকবাল স্যারও তাদের উৎসাহিত করেছেন ( এবং তার বিরুদ্ধে <a href="http://www.somewhereinblog.net/blog/raihanmahmud5/29478091">ফতোয়া দেবার</a> ধৃষ্টতা পেয়েছে ছাগুরা)। জাগো বাংলাদেশ ২০০৭ সাল থেকেই ইউনিভার্সাল চিলড্রেনস ডে পালন করে আসছে।<br />
<br />
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশী যুব্ক করভি রক্ষান্দ ধ্রুবের <a href="http://www.rnw.nl/english/article/youth-idealism-and-effort-change-bangladesh">গল্প স্বপ্নের মতন</a>, অন্তত দেশে বিদেশে সেভাবেই প্রচারিত। বিলেত থেকে ২১ বছর বয়সে আইনে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরে ধ্রুব। কথা ছিল পারিবারিক ব্যবসা সামলাবে সে, কিন্তু মাথায় ভুত চাপল পথশিশুদের জন্যে স্কুল করবে সে। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে রায়ের বাজারে বন্ধুদের সাহায্যে একটি রুম ভাড়া নেয় জাগো এবং একটি ছোট ইংরেজী স্কুল খোলে যেখানে ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের এডএক্সেল কারিকুলামে পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি মেলে খাবার ও চিকিৎসা। বাড়ি যাবার সময় আবার আধা কেজি চালও পায়। ধ্রুব করিৎকর্মা ছেলে, তার যোগাযোগ, সামাজিক মর্যাদা ইত্যাদি কাজে লাগিয়ে দেশী-বিদেশী সাহায্য যোগাড় করে স্কুলটি এগিয়ে নেয়। এর জন্যে আকর্ষনীয় <a href="http://www.slideshare.net/shafeekhan/jaago-rebuild-our-nation-1513096">প্রেজেন্টেশন</a>, <a href="http://www.youtube.com/watch?v=N0EL6k2Jpjg">ভিডিও</a> ও নানা ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নেয়।<br />
<br />
বর্তমানে এই বিল্ডিং এর দুই তলা জুড়ে ৩৬০ জন করে দুই শিফটে ৭২০ জন পথশিশু শিক্ষা নেয়। তাদের ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য কয়েকটি শহরে আরও গুটি কয়েক ছোট স্কুল আছে। ইতিমধ্যে দেশী ও <a href="http://www.emel.com/article?id=79&a_id=2215">আন্তর্জাতিক</a> পুরস্কারও পেয়েছে ধ্রুব। এছাড়াও দ্যা ঢাকা প্রজেক্ট নামে <a href="http://thedhakaproject.blogspot.com/2009_04_01_archive.html">আরেকটি স্কুল আছে</a> যেখানে বিশেষ ভাবে এমিরেটস এর বিমানবালাদের অর্থায়নে বাংলা ও ইংরেজী মাধ্যমে পড়ানো হয়।<br />
<br />
দুবছর আগে বাড়ি থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয়, বেছে নাও - পারিবারিক ব্যবসা না তোমার খামখেয়ালি। ধ্রুব বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলের একটি রুমে আশ্রয় নিয়ে বলে দিনের অধিকাংশ সময়তো এখানেই থাকি, নাহয় আরেকটু থাকলাম। জাগো বাংলাদেশে আরও বিভিন্ন সামাজিক কাজের সাথে জড়িত - <a href="http://www.jaago.com.bd/projects.html">তাদের ওয়েবসাইট অনুযায়ী</a>।<br />
<br />
ইউনিভার্সাল চিলড্রেনস ডের ২০১০ সালের অনুষ্ঠানে প্রায় <a href="http://www.thedailystar.net/campus/2011/01/04/achievement.htm">২০০০ স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেয়</a>। এইসব স্বেচ্ছসেবকদের আনুষ্ঠানিক কাঠামো দিতে অঙ্গসংস্থা <a href="http://volunteerforbangladesh.org/index.php?option=com_content&view=article&id=2&Itemid=26">ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ</a> গঠিত হয় কাকরাইলে এবছর আমেরিকান দুতাবাসের সহযোগীতায়। উদ্দেশ্য আগামী ২ বছরের মধ্যে ২১টি স্বেচ্ছাসেবক দল তৈরি করা। তাদের চুড়ান্ত লক্ষ্য ৬৪টি জেলায় স্বেচ্ছাসেবক দল তৈরি করা। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার - আপনি যোগ দিতে চান? ফেসবুক লগিন ব্যবহার করে যোগ দিতে পারেন। ফেসবুকে তাদের স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা ৬০০০ এর উপরে। এবারের ইউনিভার্সাল চিলড্রেনস ডে উপলক্ষ্যে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ বেশ কটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে দেশজুড়ে -চট্টগ্রাম, ঢাকার <a href="http://www.youtube.com/watch?v=NE0voFxnXvc">আইএসডি</a>, <a href="http://www.youtube.com/watch?v=ZR6uAqXQB_4&feature=related">সেইন্ট যোসেফ</a> ইত্যাদি নামকরা স্কুল ছাড়াও ওয়ান্ডারল্যান্ডে ছিল এইসব আয়োজন। নয়নকাড়া ভিডিও এবং ছবি ফেইসবুক ও ইউটিউবে শেয়ার করা হয়েছে এবং আরও ছাত্রছাত্রী উদ্বুদ্ধ হয়েছে। আমি কেন সেই কিশোরীকে সাহায্য করলাম সেটি এখন খোলাসা হল। এটি ছিল পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া ইভেন্ট এবং এতে একটি স্টানিং ইফেক্ট ছিল। এতজনের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণের পেছনে সামাজিক মিডিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। টুইটারের মাধ্যমে জানা যায় যে ঢাকার উত্তরাংশে পুলিশ গতকাল তাদের কার্যক্রমে বাধা দেয় এবং ধ্রুব গুলশান থানায় গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।<br />
<br />
আজকে <a href="http://www.sachalayatan.com/node/41877#comments">অরিত্রের লেখায়</a> জাগো বাংলাদেশের পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথা এসেছে। অনেকে স্বেচ্ছাসেবকদের পোষাক নিয়ে আপত্তি করেছেন (সাবিহ ওমর <a href="http://www.sachalayatan.com/comment/reply/41877/460661">ভালো জবাব</a> দিয়েছেন তাদের)। অনেকে কত টাকা উঠেছে তার হিসেব চা্চ্ছেন। অনেক স্বেচ্ছাসেবককে টিশার্ট পরিহিত অবস্থায় শিশা বারে দেখা গেছে সেসব ছবি এসেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সবই কিন্তু বিভিন্ন ব্লগে আসার সাথে সাথে তাদের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট হয়ে যাচ্ছে এবং জবাব চাচ্ছে অনেকে। আগ্রহীরা চাইলে <a href="http://www.facebook.com/KorviRakshand?sk=wall">ধ্রুব</a>, <a href="http://www.facebook.com/JaagoFoundation">জাগো ফাউন্ডেশন</a> এবং <a href="http://www.facebook.com/VolunteerforBangladesh">ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ</a> ফেসবুক পেইজে এইসব নিয়ে আলোচনা দেখতে পারেন। সামাজিক মিডিয়ার সুবিধাটা এইখানে - পত্রিকার মত একপেশে রিপোর্ট না। জবাবদিহীতার আশা করা যায়।<br />
<br />
এইসব স্বেচ্ছাসেবক দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের অন্তর্গত - কাজেই গুটিকয়েকের ব্যক্তিগত দুর্নীতিকে জেনেরালাইজ করা হয়ত ঠিক হবে না। ২০১০ সালে ৬ ঘন্টায় তোলা হয়েছিল <a href="http://www.rnw.nl/english/article/youth-idealism-and-effort-change-bangladesh">২৪ লাখ টাকা</a>, এবার শোনা যাচ্ছে ৩৮ লাখ টাকার কথা - জাগো বাংলাদেশ তাদের আয় ব্যয়ের রিপোর্ট প্রদানে স্বচ্ছ হবেন এ আশা রইল - না হলে সবাই যা বোঝার বুঝে যাবেন।<br />
<br />
ধ্রুবর ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে একটি অংশ তুলে ধরার লোভ সামলাতে পারছি না:
<br />
<blockquote>
<b>One parent of a volunteer complained:</b>
I can't find a parking lot at JAAGO School in Karail. Can you please find me a parking lot and please do make a school with parking lot next time?</blockquote>
<br />
<blockquote>
<b>Korvi Rakshand answered:</b>
The kids who comes to the JAAGO School don't have cars. Actually, they don't have 3 meals a day. Right now, JAAGO is trying to arrange education and food for them. Once they study, become rich and can buy cars, we will definitely relocate the school which will have a parking lot and most probably a Helipad also.</blockquote>
এই প্রশ্নোত্তর পর্ব দিয়ে বোঝা যায় যে জাগোকে অনেক প্রতিবন্ধকতার মোকাবেলা করতে হয়েছে বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এতজন স্বেচ্ছাসেবকদের একত্রিত করতে। তবে তাদের জন্যেই দামী স্কুলের এইসব উচ্চবিত্ত ঘরের স্বেচ্ছাসেবকরা যাদের অনেকে আদর করে ফার্মের মুরগি বলে ডাকে তারা এই প্রথমবার অ্যাক্টিভিজমের স্বাদ পাচ্ছে। আমেরিকান দুতাবাসের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠান বলে হয়ত তাদের পিতামাতা তাদের রাস্তায় ছেড়েছে। তারা ভবিষ্যৎে দেশের সংকটময় মুহূর্তগুলোতে এইভাবে নেমে আসবে কিনা এবং কর্পোরেট বেনিয়া গন্ধ ছাড়া উদ্যোগগুলোতে তাদের অংশগ্রহণ কেমন সেটা দেখার আকাঙ্খা রইল। তারাও দেশেরই অংশ এবং আমরা শ্রেণীভেদ করে তাদের যেন দুরে না ঠেলি। স্বেচ্ছাসেবকতা করা তাদেরও অধিকার এবং দেখা যাক তেল গ্যাস রক্ষার মত বা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর মত জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে তাদের ভূমিকা কেমন থাকে।<br />
<br />
এখানে উল্লেখযোগ্য গতকালের আয়োজনে আলোকচিত্রে স্বেচ্ছাসেবা দিয়ে সহায়তা করেছে <a href="http://www.flickr.com/groups/throughthelens/discuss/72157627943896934/page3/">থ্রু দ্যা লেন্স (টিটিএল)</a> নামক অ্যামেচার ফটোগ্রাফারদের সংগঠন (আমার কয়েক বন্ধুও আছে সেখানে)। জাতীয় অন্যান্য অ্যাক্টিভিজমে তাদের সচরাচর দেখা যায় না। ভবিষ্যৎে কি তাদের পাওয়া যাবে?<br />
<br />
জাগো বাংলাদেশ আর ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের উদ্দেশ্য মহৎ হলেও আমেরিকান সরকারের ভূমিকা এখানে প্রশ্নবিদ্ধ। ৬৪টি জেলায় স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্ক হলে তাদের কি লাভ? বিষয়টা এতটা জটিল যে বলতে হয় খুব খেয়াল কৈরা। </div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-42278564392740776142011-10-15T23:31:00.000+06:002011-10-18T23:59:36.809+06:00পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড়িরা কি দূরে সরে যাচ্ছে?<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><img alt="" class="imagecache-halfpage" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/imagecache/halfpage/dsc08661_640x480.jpg" title="" /><br />
<br />
ছুটি এলেই মনটা পালাই পালাই করে কিন্তু আলস্যের কারনে কোথাও যাওয়া হয়না। এবার পুজোর ছুটিতে আড়মোড়া ভেঙ্গে সপরিবারে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি বেরিয়ে এলাম। আমার জন্যে ব্যাপারটি ছিল উত্তেজনাকর, কারন হিল্লি দিল্লি করার সুযোগ হলেও দেখা হয়নি চক্ষু মেলিয়া দেশের ভেতরের এই সবুজ ও নীলের পাহাড়-হ্রদের মেলা। <br />
<br />
এ অঞ্চলের সৌন্দর্য নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই (ছবি দ্রষ্টব্য: <a href="http://www.flickr.com/search/?q=Rangamati">রাঙ্গামাটি</a> , <a href="http://www.flickr.com/search/?w=all&q=khagrachari&m=text">খাগড়াছড়ি</a>, <a href="http://www.flickr.com/search/?w=all&q=Bandarban&m=text">বান্দরবান</a> )। আমাদের সফরসঙ্গী পরিবারের কর্তাটি বললেন দেখুন এইরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে মানুষ অনেক পয়সা খরচ করে বিদেশে যায়। তবে বাস্তব হচ্ছে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম <a href="http://www.somewhereinblog.net/blog/fazlealahiblog/29397258">দিনে দিনে তার রুপ হারাচ্ছে</a>। পর্যটন ও বসতি বাড়ার সাথে পাহাড় কেটে বানানো হচ্ছে বাড়িঘর, হোটেল-রিসোর্ট। বাশ ও সেগুন গাছের গুড়ি ভর্তি সারি সারি ট্রাক তো নিজ চোখেই দেখলাম রাস্তায়। পাহাড় থেকে খাদ্যাভাবে জনপদে নেমে আসে হাতির পাল এমন শুনেছি, কাপ্তাই লেকে আর আগের মত মাছ পাওয়া যায় না। হায় কে কার খবর রাখে।<br />
<br />
সত্যিই এগুলো খবর হয় না। খবর হয় না যখন সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাহাড়ি-বাঙ্গালী নির্বিশেষে চাঁদা তোলে বা অপহরণ করে, পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয়ের উপর হামলা করে। খবর হয়না যখন পাহাড়িদের জীবন, বসতি নিয়ে রাজনীতি করে জ্ঞানপাপী মানুষ আর তাদের এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাই কেড়ে নেয়। খবর হয় না যখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী (বিশেষ করে পুলিশ) টাকার জন্যে নিপীড়িতের পাশে না এসে নির্যাতনকারীর পাশে এসে দাড়ায়। খবর হয় না যখন কল্পনা চাকমারা হারিয়ে যায়। খবর হয়না যখন খাগড়াছড়ির ১৯২টি কাজের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্পের শতভাগ টাকা মেরে দেয় রাজনৈতিক নেতারা যার মধ্যে অধিকাংশই পাহাড়ি। নিজেদের রক্ত নিজেরাই খেয়ে কুমীর বনে যায় (উদাহরণ: ইউনিপের নামে <a href="http://www.somewhereinblog.net/blog/fazlealahiblog/29337768">৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে</a> উদ্দীপন চাকমা )।<br />
<br />
খবর হয় যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানুষ রুখে দাড়ায় এবং নিজের হাতে আইন তুলে নেয়। খবর হয় যখন শান্তিরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী দুপক্ষের মধ্যে এসে দাড়ায় এবং লোক মারা যায়। খবর হয় যখন পাহাড়ি দুইপক্ষ নিজেদের রক্তে গা ভাসায় আর নিরীহ জনগনকে ত্রাসের রাজ্যে রাখে। খবর হয় যখন আদিবাসী নামকরণ নিয়ে সরকারের মনোভাব প্রতিষ্ঠায় অদ্ভুত সব যুক্তি দেখানো হয়।<br />
<br />
এসবের মাঝে একটি জিনিষ আমরা ভুলে যাচ্ছি - তিন পার্বত্য জেলার ১৪টি উপজাতির মনে কি খেলা করছে। এই মূহুর্তে তারা আর বাঙ্গালী দের বিশ্বাস করছে না, এই মূহুর্তে তারা নিজেদের দেশের ভেতরে অবাঞ্ছিত ভাবছে। সংবিধানে আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে ডাকা বিক্ষোভে দুর্গম অঞ্চল থেকে চার ঘন্টা হেটে বর্ষীয়ান পাহাড়ি যোগ দিয়েছেন। তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এরপর হয়ত শান্তিচুক্তি রদ হয়ে আবার সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হবে। কিন্তু এমন তো কথা ছিল না।<br />
<br />
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন এবং মানবেন্দ্র লারমা স্বায়ত্তশাসন সহ বিভিন্ন উপজাতির দাবী তুলে ধরলে তিনি বলেন "তোরা সব বাঙ্গালী হইয়া যা"। ১৯৭৩ সালে সংসদের কাছে তার আহ্বানেও সাড়া দেওয়া হয় না। ফলশ্রুতিতে ১৯৭৪ সালে এম এন লারমা <a href="http://www.blogger.com/url=http://w4study.com/?p=1433">জনসংহতি সমিতির একটি সশস্ত্র গ্রুপ</a> গঠন করেন, যা পরে শান্তিবাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে এবং পরে তারা অত্র অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ১৯৮১ সালে শান্তিবাহিনী দ্বিধাবিভক্ত হয় এবং ১৯৮৩ সালে বিপক্ষ দলের হাতে মানবেন্দ্র মারা যান। তবে তার অনুজ সন্তু লারমার নেতৃত্বে শান্তিবাহিনী গেরিলা যুদ্ধ অব্যহত রাখে। জিয়া এবং এরশাদ সরকারের আমলে শান্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী এবং আশির দশকে উপজাতিদের উপর <a href="http://www.news.chtbd.net/?p=1047">নির্লজ্জ্ব হত্যাকান্ড</a> চালানো হয়। কোন সরকারের আমলেই এইসব হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। এছাড়া গ্রেপ্তার, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মানবাধিকার কর্মীদের হেনস্থা করা, যৌন নিপীড়ন প্রভৃতি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে নিয়মিতই। সাথে সাথে শান্তিবাহিনীরও অনুরূপ মানবাধিকার লংঘনের মূল্য দিতে হয়েছে পাহাড়ি-বাঙ্গালি উভয়কেই।<br />
<br />
এরশাদের আমলে ১৯৮২-৮৩ সালে ২৬ হাজারের ও বেশী ছিন্নমূল ও ভাঙ্গনের ফলে উদ্বাস্তু পরিবারকে চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় পুনর্বাসনের জন্যে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি পরিবারের স্থান হয় খাগড়াছড়িতে। আশির দশকের শেষের দিকে তাদের উপর ‘শান্তিবাহিনী’র হামলার ঘটনা বাড়তে থাকলে সেখান থেকে লোকজনকে সেনাক্যাম্প সংলগ্ন ৮১টি গুচ্ছগ্রামে স্থানান্তর করা হয়। <br />
<br />
১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর সম্পাদিত আওয়ামী লীগের শান্তিচুক্তি নিশ্চয়ই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। এ অবস্থায় আনতে কি পরিমান রাজনৈতিক গণসংযোগ করতে হয়েছে তা অনুমেয়। শান্তিচুক্তির পর তিন পর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আশির দশকের তুলনায় বর্তমানে অর্ধেকের কম সেনাক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রামে রয়েছে। বর্তমানে যা হচ্ছে তাতে উল্টোস্রোত দেখা যাচ্ছে আর সরকারেরও মাথা ব্যাথা নেই। <br />
<br />
শান্তিচুক্তি অনুযায়ী ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর প্রায় দুই হাজার সশস্ত্র সদস্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তবে প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে একটি দল চুক্তি মানতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবীতে ১৯৯৮ সালে গঠন করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। এই বিভাজন অবশ্য জেএসএসকে দমাতে পারেনি এবং তারা দাপটেই কার্যক্রম চালিয়েছে খাগড়াছড়ি অঞ্চল ছাড়া যেখানে বেশীরভাগ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ ছিল ইউপিডিএফ এর। কিন্তু ২০০৬ সালের জরুরী সরকারের সময় সন্তু লারমার একক নেতৃত্ব থেকে দল বাঁচাতে সংস্কারের দাবীতে জনসংহতি থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠন করে বেশ কিছু প্রতিবাদী নেতারা। এদের মধ্যে আছেন সন্তু লারমার ঘনিষ্ট সহকর্মী রূপায়ন দেওয়ান, তাতিন্দ্র লাল চাকমা পেলে, সুধাসিন্ধু খীসা, চন্দ্রশেখর চাকমা,শক্তিমান চাকমা প্রমূখ এবং তারা দলের নাম দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা)। এই বিভাজনে লাভ হয় ইউপিডিএফ এর যার নমুনা দেখা যাচ্ছে এবারকার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে - অনেক অঞ্চলে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।<br />
<br />
বর্তমানে গতানুগতিক রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা একেবারে তলানীতে এসে ঠেকেছে। বিএনপি বরাবরই সেটেলার ভোটব্যাংক ভিত্তিক একটি দল, কাজেই ভবিষ্যতে তাদের ভোট পাবার চান্স কম। ভাড়াটে পাহাড়ী নেতা দিয়ে তারা এতদিন পার পেলেও যেহেতু তারা শান্তিচুক্তি ও সেনা প্রত্যাহারের বিরোধীতা (আওয়ামী লীগ একটি ব্রিগেড এবং ৩৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করে ২০০৯ সালে এবং এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পিটিশন করে তারা) করেছে সব সময়, তাদের আর গ্রহণযোগ্যতা নেই। <br />
<br />
আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতা এখন বিশ্বাস ঘাতকের পর্যায়ে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপুমনি আদিবাসী দিবসে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সংহতি প্রকাশ করেন। আর সেই তিনিই এবছর থেকে তিন পার্বত্য জেলার অধিবাসীদের আদিবাসী সম্বোধন করতে বারণ করেছেন এবং বলেছেন বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই; বিভিন্ন উপজাতি আছে। তার এই অবস্থান পরিবর্তন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ফলশ্রুতিতে হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। আদিবাসী নিয়ে দেশী-বিদেশী যে বৃহত্তর রাজনীতি চলছে তা সামাল দিতেই যদি সরকারের এই পদক্ষেপ হয় তাহলে বলতে হয় এই পদক্ষেপটি চতুরতার সাথে নেয়া হয়নি। এই একটি ইস্যুকে পুজি করে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অনেককে তাদের চেতনায় সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। পার্বত্য অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যর্থতা সম্পর্কে নতুন করে বলার নেই। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সকল নেতারাই ঠিকাদারিতে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আগে উন্নয়ন কার্যক্রমের ৭০ ভাগ লোক পেত এখন পুরোটাই যায় তাদের পেটে। পাহাড়িরা তাদের কেন বিশ্বাস করবে?<br />
<br />
পার্বত্য উপজেলাগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষার হার ভাল। সরকারী স্কুল ছাড়াও ব্র্যাক ও অন্যান্য বেসরকারী স্কুল রয়েছে। আমি প্রচুর ছেলেমেয়েকে দেখেছি স্কুল ড্রেস পড়ে রাস্তায় হাটতে। কিন্তু উচ্চশিক্ষার হার কম - হাতে গোনা গুটিকয়েক কলেজ এবং কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এই অঞ্চলে নেই কোন বিশ্ববিদ্যালয় - প্রধানমন্ত্রী হাসিনা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিলেও পাহাড়িদের একপক্ষ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফলে সেটি এখনও পরিকল্পনা পর্যায়েই আছে। পাহাড়িদের উচ্চশিক্ষার জন্যে তাই বাইরে যেতে হয়। আর উচ্চ শিক্ষিতদের চাকুরির উপায় কি? নেই কোন কলকারখানা, উল্লেখযোগ্য বেসরকারী বাণিজ্য। তাই একমাত্র কাজ মিলে এনজিও বা সাহায্য সংস্থার অফিসে।<br />
<br />
এরপর রয়েছে সাহায্য সংস্থা/এনজিওর দৌরাত্ম্য। এই সব সংস্থায় উচ্চশিক্ষিত ইউপিডিএফ এর কর্মীরা অনায়াসে কাজ পাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ইএনডিপির ২০১৩ পর্যন্ত প্রকল্প রয়েছে হাজার কোটি টাকার। তাদের স্বাস্থ্য কর্মসূচি গুলো খুবই উপযোগী (এবং অকার্যকর সরকারী স্বাস্থ্য সেবার বিকল্প) কিন্তু উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন কমিউনিটিকে তারা ৪ লাখ করে অনুদান দিচ্ছে যা রিপোর্ট মোতাবেক ইউপিডিএফ এর কর্মীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাচ্ছে। ২০০৭ সাল থেকে ইউপিডিএফ সকল মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ফলে কিছু পাহাড়ি কাজ কর্ম বাদ দিয়ে দানে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে এবং তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে লাগানো যাচ্ছে। <br />
<br />
অনেক এনজিওদের <a href="http://shangunews.com/index.php?option=com_content&view=article&id=1584:7&catid=34:2011-07-02-16-11-08&Itemid=1">ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ</a>। মানবাধিকারের ইস্যুকে পুঁজি করে সব দোষ সরকারের ঘাড়ে, শান্তিচুক্তির উপর অথবা সুযোগ বুঝে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে চাপিয়ে দিলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? পাহাড়ের সমস্যার শতভাগ বহিরাগত বা সেনাদের দ্বারা উদ্ভুত নয় আর পাহাড়ের রাজনীতিতেও বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সমীকরণটা ভিন্ন- দুর্নীতিতে পাহাড়ি নেতারাও পিছিয়ে নেই আর ইউপিডিএফ-জেএসএস এর সংঘাত অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। যেখানে ভূমি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও শিক্ষার দিক থেকে বহিরাগতরা পিছিয়ে, সেখানে কিছুসংখ্যক ভূমি সন্ত্রাসীদের জন্যে এসব দরিদ্র মানুষকে ঢালাওভাবে রাজনৈতিক গিনিপিগ বানানো হচ্ছে। এটি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি যা খেলছে সব পক্ষই। <br />
<br />
এদেশ পাহাড়ি-বাঙ্গালি সবার। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন কোনো জনপদ নয় - একে গড়ে তুলতে হবে পাহাড়ি-বাঙ্গালি মিলেই। পাহাড়ি-বাঙ্গালি বা জাতি-উপজাতি কেন্দ্রিক বৈষম্য থাকা চলবে না। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে, উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান, উন্নয়ন ইত্যাদি চালিয়ে যেতে হবে। পাহাড়িদের <a href="http://www.somewhereinblog.net/blog/aditya17/29373628">ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি শ্রদ্ধা</a> শান্তির নিশ্চয়তা দিতে পারে। অথচ সেটা করার জন্যে একসাথে কাজ করার পূর্বশর্ত - পরস্পর বিশ্বাসটুকু হারিয়ে যাচ্ছে।<br />
<br />
বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক পরিস্থিতি। পাহাড়িরা শান্তি চুক্তিতে একটি <a href="http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=206349">ভুয়া প্রতিশ্রুতি</a> ভাবছে। প্রতিনিয়তই নানা গুজব মানুষকে <a href="http://www.somewhereinblog.net/blog/fazlealahiblog/29157847">বিচলিত ও আতঙ্কিত করে</a>। স্থানীয় সূত্রমতে আগামী যে কোন নির্বাচনে এলাকায় একচ্ছত্রভাবে পাহাড়িদের জয় হবে, ইতোমধ্যেই যার আলামত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাওয়া গিয়েছে। এখানে পুরো ১৯৭১ এর ফর্মুলার সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে। বহিরাগতদের অত্যাচার, মানবাধিকার লঙ্ঘন, পাহাড়িদের অধিকার আদায়ের লড়াই, আর নিজভূমে মেজরিটি (যেমন ১৯৭০ এর নির্বাচনে পশ্চিম পাকিস্তানী কোন দল জিততে পারেনি এ বঙ্গে) এই স্ক্রিপ্টটি মিলে যাচ্ছে। এর সমাধান বা তাদের আপন করার কোন পরিকল্পনা নেই সরকারের বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের। তারা আদিবাসী নামকরণ ইস্যুতে তাদের দুরে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের ধারনা সেনাবাহিনীর বুলেটের নীচেই সব ঠিক থাকবে - এভাবে সেনাবাহিনীকেও সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এর পরিণতি কি হবে তা আমরা জানি।<br />
<br />
ফলে পাহাড়িরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে আমাদের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। এই দূরত্ব ঘুচাতে এবং পাহাড়িদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সাধারণ মানুষেরা কি করতে পারি?<br />
<br />
<a href="http://www.sachalayatan.com/node/41565">সচলায়তনে</a> প্রকাশিত</div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com7tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-43932003055638840662011-06-22T00:00:00.042+06:002011-10-19T00:17:06.863+06:00গুগল অনুবাদ, হাস্যকর নয় মোটেই<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">বিশ্বের ৬০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ২৭.৩% হচ্ছে ইংরেজী ভাষী (<a href="http://www.internetworldstats.com/stats7.htm">সূত্র</a>) আর ২২.৬% হচ্ছে চৈনিক ভাষী। অন্যান্য ভাষাভাষীরা অনেক পিছিয়ে (স্প্যানিশ ৭.৮%, জাপানী ৫%, পর্তুগীজ ৪.৩%, জার্মান ৩.৮%, আরবী ৩.৩%) - বাংলা, হিন্দিভাষী বিশাল জনগোষ্ঠী ইন্টারনেটে তাদের ভাষায় কথা বলে তুলনামূলকভাবে কম। রয়েছে আরও অসামঞ্জস্যতা - ৩১৩ বিলিয়ন ওয়েবপেইজের ৬৮.৪% ইংরেজী ভাষায় তার পরে মাত্র ৫.৯% জাপানি ভাষায় আর ৫.৮% জার্মান ভাষায় (<a href="http://www.translate-to-success.com/online-language-web-site-content.html">সূত্র</a>)। ২২.৬% চৈনিক ভাষী ব্যবহারকারী ওয়েব কন্টেন্টের মাত্র ৩.৯% তৈরি করে।<br />
<br />
<img alt="" class="imagecache-halfpage" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/imagecache/halfpage/topinternetusers_0.jpg" title="" /><br />
<br />
এই সব পরিসংখ্যান একটি কথা বলে - আমরা বিশ্বকে জানি বা দেখি ইংরেজী ভাষীদের দৃষ্টিতে - হবেই না কেন বিশ্বের ৬২.৫৫% সংবাদপত্র/ম্যাগাজিন, ২২% বই, ৪৫% জার্নাল, ৩৫% ছবি ও ভিডিও ইংরেজী ভাষায়। কিন্তু এটি একে অপরকে বোঝার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করছে নানা স্টেরিওটাইপ তৈরির মাধ্যমে। আমরা ব্রাজিলের কোন ব্লগারের বক্তব্য জানতে পারব না যদি না কেউ অনুবাদ করে দেয় তার ব্লগ। তেমনি বাংলা ব্লগারের লেখা একজন ব্রাজিলিয় পড়তে পারে না।<br />
<br />
বিশ্ব সমাজকে এগিয়ে নিতে গেলে তাই অনুবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। অনুবাদের কার্যকরী টুলটি সেক্ষেত্রে একটি জরুরী উদ্ভাবন। কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে মেশিন ট্রান্সলেশন কি পর্যায়ে আছে? এক ক্লিকে অনুবাদের ব্যবস্থাটি এখনও নিখুঁত নয়। তার চেয়ে বড় কথা হল মেশিন সব অনুবাদ করে দেবে এই ধারনাটি কম্পিউটার কবিতা লিখবে এরই সমার্থক। <br />
<br />
অনুবাদ একটি শিল্প। একজন অনুবাদকের দুই ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা থাকা লাগে, পাঠকদের কথা চিন্তা করতে হয় - তবেই সে সঠিক অর্থ ফুটিয়ে তুলতে পারে। আমাদের অনেকেরই জানা নেই যে অনুবাদ একটি ১৮-২০ বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি। বিশ্বাস হচ্ছে না? ছবির সাবটাইটেল একটি বড় অনুবাদের জায়গা। এরপর ধরুন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অনেক প্রকাশনা নিয়ম অনুযায়ী সদস্য দেশগুলোর ২৩টি ভাষায় অনূদিত হয়। অনেক পেশাদারী অনুবাদের প্রতিষ্ঠান রয়েছে এসব ক্ষেত্রে কর্মরত। তাদের কাজের সুবিধার জন্যে নানা সফট্ওয়্যারের উদ্ভব হয়েছে - যেমন প্রোপাইটরী সিসট্রান, ট্রাডোস ইত্যাদি - বা ওপেন সোর্স - যেমন লিঙ্গোটেক, লুসি সফটওয়্যার, আপেরিটিয়াম ইত্যাদি। এইসব সফট্ওয়্যারের মূল মন্ত্র হচ্ছে একই বাক্যের অনুবাদ যাতে দুইবার না করতে হয়। সেজন্যে তারা সাহায্য নেয় ট্রান্সলেশন মেমোরির। মেশিন অনুবাদে যেই ভাষায় সবচেয়ে বেশী কন্টেন্ট পাওয়া যায় সেই ভাষায় অনুবাদ সবচেয়ে বোধগম্যভাবে হয়। কিন্তু এইসব ট্রান্সলেশন মেমোরি বিনামূল্যের নয় - বাজারে বিক্রি হয়। তবে যেই সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হোক মানুষ কর্তৃক মান নিয়ন্ত্রণই সফল বাণিজ্যিক অনুবাদের চাবিকাঠী।<br />
<br />
অনুবাদকে তার ব্যয়বহুল ইন্ডাস্ট্রির কবল থেকে মুক্ত করে সার্বজনীন করার লক্ষ্যে ওপেন ট্রান্সলেশন ধারনার উদ্ভব ঘটে। এখানে ক্রাউড সোর্সিং এবং স্বেচ্ছাসেবী অনুবাদের মাধ্যমে মেশিন ট্রান্সলেশন টুলস ব্যবহার করা হয়। <a href="http://translate.google.com/support/toolkit/bin/answer.py?hl=en&answer=147809">গুগলের ট্রান্সলেটর টুলকিট</a> এমন একটি ওপেন ট্রান্সলেশন টুল যেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা নিত্য নতুন অনুবাদ সৃষ্টি করে চলেছে এবং সবার জন্যে উন্মুক্ত ট্রান্সলেশন মেমোরি রিপোজিটরি তৈরি করছে। <br />
<br />
টেড তাদের ভিডিও অনুবাদের জন্যে অর্ধ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। তাদের পেশাদারী সংস্থা দিয়ে করা কিছু বাংলা অনুবাদ দেখে যারপরনাই বিরক্ত হয়েছিলাম এবং তাদের একজনকে বলেছিলাম <a href="http://bn.globalvoicesonline.org/">গ্লোবাল ভয়েসেস বাংলা সংস্করণে</a> স্বেচ্ছাসেবীদের দ্বারা এর থেকে অনেক উঁচু মানের কাজ হয়। তাদের সমস্যা ছিল কাজটি বুঝে নিয়েছিল অবাঙ্গালী কেউ - তাই যা ইচ্ছা বুঝিয়ে দিয়েছিল অনুবাদ সংস্থা। টেড এর পরে কমিউনিটি বেইজড ওপেন ট্রান্সলেশন মডেল চালু করে যা <a href="http://blog.dotsub.com/2011/05/18/teds-open-translation-project-powered-by-dotsub-second-anniversary/">সাফল্য পায়</a>। <br />
<br />
বাংলা বা তামিলের মত বহু ব্যবহৃত ভাষার জন্যে কার্যকরী মেশিন ট্রান্সলেশন টুলস এতদিন তৈরি না হওয়ার পেছনে রয়েছে পর্যাপ্ত উদ্যোগ ও অর্থের অভাব - অনুবাদক ও অন্কুর এর মত গুটিকয়েক প্রকল্প বেশি দুর আগাতে পারেনি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে। <br />
<br />
<img alt="" class="imagecache-halfpage" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/imagecache/halfpage/bangla_translate.jpg" title="" /><br />
<br />
এছাড়াও রয়েছে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ - অনুবাদ কিন্তু শুধু শব্দের প্রতিস্থাপন নয় - রয়েছে ব্যাকরণ, বাক্যের গঠন, রুপক, বাগধারা ইত্যাদির প্রভাব। যেমন ধরুন দক্ষিণ এশীয় ভাষাগুলোতে বাক্যগুলো (subject-object-verb * আমি-ভাত-খাই) নিয়মে গঠিত হয় যেখানে ইংরেজীতে বাক্য গঠিত হয় (subject-verb-object * I eat rice) এই নিয়মে। এছাড়াও পর্যাপ্ত উন্মুক্ত কন্টেন্টের অভাব একটি বড় কারন ছিল। বিষয়টা ব্যাখ্যা করি। একটি মেশিন ট্রান্সলেশন টুলস তিনটি নিয়ম মেনে কাজ করতে পারে:<br />
<br />
ক) রুলস বেইজড (ব্যাকরণের নিয়ম আর অভিধান)<br />
খ) স্ট্যাটিস্টিকাল (দ্বিভাষী ট্রান্সলেশন মেমোরি বা করপাস নিয়ে কাজ করে) আর<br />
গ) হাইব্রিড (উপরের দুয়ের সংমিশ্রণ)<br />
<br />
গুগল প্রথম দিকে রুলস বেইজড প্রক্রিয়ায় অনুবাদ করলেও ২০০৭ সাল থেকে স্ট্যাটিসটিক্যাল মেথড চালু করে। এই প্রক্রিয়ায় বিশালাকার <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Text_corpus">টেক্সট কর্পোরা</a> এর দরকার হয়। এটি কার্যকরী করতে ন্যুনতম ২০ লাখ শব্দ নিয়ে কাজ করতে হয় এবং অনেক কম্পিউটিং শক্তি লাগে। এই প্রক্রিয়ার সুবিধা হল যে এটি অনুবাদকারীকে <a href="http://googletranslate.blogspot.com/2010/12/when-one-translation-just-isnt-enough.html">সুযোগ দেয়</a> বেশ কিছু কাছাকাছি শব্দ থেকে বেছে নিতে। <br />
<br />
[img]http://3.bp.blogspot.com/-aeV8jF52kRI/Tai2LKwMrEI/AAAAAAAAATk/2KLnTwuFBkE/s400/image00.png[/img]<br />
<br />
এই পদ্ধতিতে আরেকটি সুযোগ আছে - ক্রমাগত অনুবাদের মান বৃদ্ধি করা। <a href="http://googletranslate.blogspot.com/2011/06/google-translate-welcomes-you-to-indic.html">গুগল ব্লগ অনুযায়ী</a> আপনি ভুল অনুবাদকে ঠিক করতে পারবেন অনায়াসেই এবং গুগল সেটি মনে রাখবে এবং পরবর্তী বার সঠিক অনুবাদ উপস্থাপন করবে। <br />
<br />
কাজেই আমি মনে করি গুগল ট্রান্সলেইটে বাংলা ভাষাভাষীদের জন্যে একটি যুগান্তকারী টুল। এটি এযাবৎকালে পাওয়া যাওয়া একমাত্র টুল <a href="http://bengalinux.sourceforge.net/cgi-bin/anubadok/index.pl">অনুবাদক অনলাইনের</a> চেয়ে বহুগুণে সমৃদ্ধ। আর এখন বাংলা ভাষা থেকে বিশ্বের ৬২টি ভাষায় (ভুল হলেও) অনুবাদ সম্ভব - এর শক্তি নিশ্চয়ই অনুমেয়। আসুন ওপেন ট্রান্সলেশন ধারনা আপন করে গুগল ট্রান্সলেট এর ভুলগুলো নিজেরা শুদ্ধ করে দেই ভবিষ্যৎ কল্যাণের জন্যে অথবা <a href="http://translate.google.com/support/toolkit/bin/answer.py?hl=en&answer=147809">গুগল ট্রান্সলেটর টুলকিট</a> ব্যবহার করে গুগলের ট্রান্সলেশন মেমরিকে সমৃদ্ধ করি।<br />
<br />
ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা: অনুবাদক, <a href="http://www.internetworldstats.com/stats7.htm">ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটস</a>, গুগল ট্রান্সলেট।<br />
<br />
বিবিধ রেফারেন্স:<br />
<br />
* <a href="http://en.flossmanuals.net/open-translation-tools/">ওপেন ট্রান্সলেশন টুলস ম্যানুয়াল</a><br />
* <a href="http://googletranslate.blogspot.com/2011/06/google-translate-welcomes-you-to-indic.html">গুগল ট্রান্সলেট পাঁচটি উপমহাদেশীয় ভাষা যোগ করেছে </a><br />
* ওপেন ট্রান্সলেশন দিয়ে <a href="http://www.readwriteweb.com/archives/changing_the_world_with_open_translation.php">বিশ্বে পরিবর্তন আনা</a> <br />
* Development of <a href="http://rua.ua.es/dspace/bitstream/10045/12029/1/paper6.pdf">A Morphological analyser for Bengali</a> <br />
* Bootstrapping of a rule based <a href="http://dspace.bracu.ac.bd/handle/10361/756">English-Bangla machine translation system</a> using work done for a sister language - BRAC University Institutional Repository<br />
<br />
<a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/39555">সচলায়তনে প্রকাশিত</a></div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-36847171990892539802011-05-24T00:17:00.021+06:002011-10-19T00:28:19.562+06:00স্বাস্থ্যই সকল ব্যবসার মূল<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">ঢাকায় সচলায়তনের প্রাণভোমরা নজরুল দম্পতির সৌজন্যেই বেশীর ভাগ সচলাড্ডা হয়। এই প্রথা ভাঙ্গতেই সিদ্ধান্ত নিলাম ৯ই মে আমার বাসায় একটি ছোটখাট আড্ডা জমাব সচলদের নিয়ে। সব প্রস্তুতি শেষ করতে করতে পারিবারিক এক অসুস্থতা বাগড়া বসাল। আমার শাশুড়ি সপ্তাহ দুই ধরে খাবারে রুচি হচ্ছিল না বলে খুব দুর্বল হয়ে পড়ায় বিভিন্ন ডাক্তার দেখানোর পর শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হল যে ওনাকে স্কয়্যার হাসপাতালে এক পাকস্থলীর চিকিৎসকের তত্বাবধানে ভর্তি করা হবে। সেই মোতাবেক ৮ই মে সকালে তাকে ভর্তি করানোর জন্যে উদ্যোগ নিলে বলা হল বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সিটের জন্যে। সেদিন সকালে ভর্তি হলে হয়ত গল্পটি অন্যরকম হত। <br />
<br />
কিন্তু বিধাতা আমাদের জন্যে অনেক অভিজ্ঞতা জমা করে রেখেছিলেন।<br />
<br />
সেদিনই তিনি গোসল করতে গিয়ে বাথরুমে পড়ে যান এবং তার পা ভাঙ্গে ও মাথা ফেটে যায়। এর পর গত দুই সপ্তাহেরও বেশী ধরে তিনটি হাসপাতাল ও গণ্ডা দুয়েক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে বোঝাপড়া করে যে অভিজ্ঞতা হল তাতে বাংলাদেশের ব্যক্তিমালিকানাধীন স্বাস্থ্য সেবার চিত্র সম্পর্কে একটি ধারনা পাওয়া যায়। <br />
<br />
<b>অ্যাম্বুলেন্স পর্ব: </b><br />
<br />
আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি যে ওনার পা ভেঙ্গেছে - কিন্তু প্রচণ্ড ব্যাথায় উনি দাড়াতে পারছিলেন না বা পা ভাঁজ করতে পারছিলেন না। তাই অ্যাম্বুলেন্স ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। স্কয়্যারের ইমার্জেন্সির নাম্বারটিতে অনেক চেষ্টা করেও না পাওয়ায় কয়েকশ গজ দুরের হোটেল থেকে রুপান্তরিত হাসপাতালটিতে গেলাম। সামনে গোটা চারেক অ্যাম্বুলেন্স দাড়িয়ে থাকতে দেখে উদ্বেগ কমল। অ্যাম্বুলেন্স চাইতেই বলল কোথা থেকে আসবেন।<br />
<br />
: কাছেই বাসা - তবে আমরা স্কয়্যারে নিয়ে যাব। <br />
: না আমাদের হাসপাতালে না আনলে আমরা অ্যাম্বুলেন্স দেব না।<br />
: আমি তো ভাড়া দেব।<br />
: এই অ্যাম্বুলেন্স আমাদের নিজস্ব ব্যবহারের জন্যে।<br />
<br />
সময় চলে যাচ্ছে দেখে বাড়ি ফিরে একটি গাড়ির পেছনের সিটে লম্বা করে শুইয়ে ওনাকে নিয়ে গেলাম।<br />
<br />
<b>কেবিন পর্ব: </b><br />
<br />
ওনাকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাবার পর জানা গেল যে কোমরের নীচ থেকে তার পা ভেঙ্গেছে - তবে মাথার আঘাতটি গুরুতর নয়। মাথায় চারটে সেলাই আর পায়ে ট্র্যাকশন ব্যান্ডেজ দিয়ে ছেড়ে দেবার আগে ইমার্জেন্সীর ডাক্তাররা বুদ্ধি দিলেন দ্রুত একটি সিট যোগাড় করতে - কারন ওনার পায়ের অপারেশন লাগবে আর অনেকদিন থাকতে হবে। তদবির কালচারে গা ভাসিয়ে ততক্ষণে আমরা বরাদ্দ পেলাম উচ্চমূল্যের একটি ডিলাক্স কেবিন। আমাদের সৌভাগ্য যে মাথা গোঁজার ঠাই পেয়েছিলাম কারন পরবর্তী কয়েক দিন অবস্থানের সময়ও আমাদের কাঙ্খিত সাধারণ কেবিনের দেখা মেলে নি।<br />
<br />
<b>নার্স পর্ব: </b><br />
<br />
স্কয়্যার হাসপাতাল প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নত ও প্রফেশনাল একটি হাসপাতাল। কিন্তু বাঙ্গালীরা সেবা ক্ষেত্রে অতটা প্রফেশনাল না এটা প্রমাণ করতে সেরকম কিছু নার্স জুটল আমাদের কপালে।<br />
<br />
১) : একটি বাটি দিন রুগী বমি করবে<br />
<br />
: (রুগীর জন্যে আনা খাবারের ঢাকনা উপুর করে) এটাতেই করুন এখন - বমির বোল এই ফ্লোরে আর নাই।<br />
<br />
২) : রুগীর শরীর খারাপ লাগছে - একটু মাথাটা মুছিয়ে দিন না কাইন্ডলি।<br />
<br />
: আপনারাই মুছিয়ে দেন - আমার ডিউটি শেষ এখন।<br />
<br />
৩) ইমার্জেন্সী বাটন টেপার পাঁচ মিনিট পরেও নার্সের দেখা না পেয়ে তাকে ডাকতে গেলে<br />
<br />
: আপনারা এত দেরী করছেন কেন? রুগীর শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে।<br />
<br />
: এইটাতো কার্ডিয়াক ফ্লোর আর আমি শুধু একা আছি। আপনাদের অর্থপেডিক্সের ডিউটি ডাক্তারতো বারো তলায় আছে - ডেকে আনছি - অপেক্ষা করেন একটু।<br />
<br />
<b>ডাক্তারদের রোগ নির্ধারণ পর্ব: </b><br />
<br />
মাকে ভর্তি করা হল এক বিশেষজ্ঞ হাড়ের ডাক্তারের তত্বাবধানে (যাকে আমরা চিনি না)। রুগীর অবস্থা সম্পর্কে আমাদের প্রাথমিক ধারণা দিলেন একজন ডিউটি ডাক্তার। তবে অনেক প্রশ্নের উত্তরই ছিল স্যার রাতে আসবেন উনিই বিস্তারিত জানাবেন। সেইদিন রাতে তিনি আসেননি। রাতে মার কাশি ও অনেক শ্বাস কষ্ট হয় কিন্তু সঠিক চিকিৎসা তিনি পান নি।<br />
<br />
পরের দিন সকালে আমি এদের অফিসে গিয়ে খুব রাগারাগি করলাম। বললাম ডাক্তার না থাকলে বলেন আমরা অন্য হাসপাতালে যাই। দশটার দিকে জানানো হলো স্যার স্কয়্যারেই আউটডোরের রুগী দেখেন। সেখানে গিয়ে অনুরোধ করেন। সেখানে যেতেই জানলাম উনি রাউন্ডে বেরিয়েছেন। বো টাই লাগানো ফিটফাট ডাক্তারটি বললেন যে তার অপারেশন লাগবে হাড়ের - জটিল কিছু না তবে ইলেকট্রোলাইট ইম্ব্যালেন্স আছে শরীরে সেটা ঠিক করতে বেশ কয়েকদিন লাগবে। আর শরীরে রক্ত কম (মাথা কেটে অনেক রক্ত ঝড়েছিল) তাই রক্ত দেয়া লাগবে। <br />
<br />
তিনি কিডনি, মেডিসিন ইত্যাদি বেশ কিছু কনসালট্যান্টকে রেফার করে বললেন ওনারা রুগীকে তৈরি করে দিলেই আমি অপারেশন করব। এরপর শুরু হল বিভিন্ন ডাক্তারের আগমন এবং আমাদের রোগের ইতিহাস বারংবার বর্ণনা করার নাটক।<br />
<br />
১) : ওনার ডায়বেটিস কবে থেকে? <br />
: ওনার তো ডায়াবেটিস নেই।<br />
: কিন্তু ফাস্টিং গ্লুকোজ ১৪ কেন? শেষ কবে করিয়েছেন টেস্ট?<br />
: এইতো মাস দুয়েক আগে। কেন বেশি সেতো আপনি ভাল বলতে পারবেন (ওনাকে গ্লুকোজ স্যালাইন দেয়া হয়েছিল)।<br />
<br />
২) : ওনার কিডনির সমস্যার জন্যে কোন ঔষধ খাচ্ছেন কি? <br />
: কিডনির সমস্যা?<br />
: হ্যা জানেন না? ক্রিটেনিন লেভেল খুব হাই। কিডনির টেস্ট শেষ কবে করিয়েছিলেন?<br />
: ওনার হাইপার টেনশন ছাড়া আর কোন বড় অসুখ নেই।<br />
<br />
লক্ষ্য করা হল যে বেশীরভাগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারই নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা দেয় না - মূল অর্থপেডিক্স এর ডাক্তারের কাছে উপদেশ হিসেবে পেশ করে। এরপর সেটার প্রতিফলন হয় উনি যখন পরদিন তার রাউন্ডে আসে তখন। ইতিমধ্যে ওনার শ্বাস নিতে অসুবিধাটি বাড়ে এবং অক্সিজেন দেয়া হয়। আমাদের ক্রনিক অর্গান ফেইলিউর ইত্যাদি গালভরা শব্দ দিয়ে ভয় ও দেখানো হয়। আমরা তখন এক চেনা অর্থোপেডিক্সের ডাক্তারের শরণাপন্ন হই যার পরামর্শে পপুলার হাসপাতালে ওনাকে স্থানান্তর করি।<br />
<br />
<b>রক্তদান পর্ব: </b><br />
<br />
রক্তের জন্যে ফেসবুকে আবেদন করেছিলাম। কিছু সাড়াও পেয়েছি। পরে আত্মীয়ের মধ্যে থেকে দুইজন এগিয়ে আসেন। স্কয়্যার আবার দাতাদের (উচ্চমূল্যের) ১৮টি টেস্ট করে ম্যাচিং করিয়েই রক্ত দেয়া অনুমোদন করে - নাহলে তাদের ব্লাড ব্যাংক থেকে বিক্রি করে। আমাদের প্রথম রক্তদাতা ত্রিশ বছরের একজন যুবক - রক্তদানের পরের দিন তার হাতে লম্বা করে কালশিরা পরে গেল। আমরা যারপরনাই বিব্রত হলাম এবং জানলাম যে রক্ত ওরা নেয় একটি মেশিনের মাধ্যমে - যেটিতে অ্যালার্ম বাজার পরও কোন অ্যাটেন্ডেন্ট ছিল না বলে রক্ত ব্যাগ থেকে উপচে পুনরায় শরীরে গিয়ে এমন হতে পারে।<br />
<br />
<b>আইসিইউ পর্ব: </b><br />
<br />
পপুলারে আসার পর দিন যানা যায় যে ওনার নিউমোনিয়া হয়েছে এবং খুব সম্ভবত এটি হসপিটাল অ্যাকোয়ার্ড নিউমোনিয়া - অর্থ্যাৎ স্কয়্যার থেকেই হয়েছে রুগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিপর্যস্ত থাকার কারনে (অথচ সেখানকার ডাক্তাররা সেটা ধরতে পারে নি)। ওনার শ্বাস কষ্ট বাড়লে তাকে ১৩ তারিখ আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আবার একগাদা টেস্ট করা হয় এবং বলা হয় ওনার হয়েছে প্রাণঘাতি এআরডিএস (অ্যাকোয়ার্ড রেস্পিটরী ডিসট্রেস সিনড্রোম) যেটি বেশ কিছু কারনেই হতে পারে। রুগীর ইলেক্ট্রোলাইটের সমস্যা কেটে গিয়ে শরীরের অবস্থা কিছুটা ভাল হলেও ফুসফুসের অবস্থা ও অক্সিজেন ডিপেন্ডেন্সি অপরিবর্তিত থাকে। এই অবস্থায় অ্যানেস্থেসিস্ট অস্ত্রোপচারে রাজী না হলে ভাঙ্গা পায়ের চিকিৎসা আরও অনিশ্চিত হয়ে যায়।<br />
<br />
১৫ তারিখে তার সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট আসে এবং বলা হয় যে টিউমার জাতীয় কিছু দেখা গেছে তার ফুসফুসে এবং ক্যান্সার কিনা নিশ্চিত করার জন্যে বায়োপসী আর ব্রন্কোস্কপি করা লাগবে। <br />
<br />
আমরা সবাই ভেঙ্গে পড়ি - এবং মনে হয় নির্দিষ্টভাবে রোগ নির্ধারণের আগে এরকম বলাটা মূল শোষক সিস্টেমেরই একটি অংশ। আমরা বিদেশে অবস্থানরত এক আত্মীয় ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হই। তিনি বলেন যে যদি তার ক্যান্সার হয়েও থাকে এখন এই শারীরিক অবস্থায় কোন চিকিৎসা দেয়া যাবে না। ডাক্তারদের উচিৎ তার ফুসফুসের সমস্যা নির্মূল করে আইসিইউ থেকে বের করে আনা এবং পরে ক্যান্সার নির্ধারনের পদক্ষেপ নেয়া।<br />
<br />
<b>জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম পর্ব: </b><br />
<br />
ইতিমধ্যে এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মতামত দেন যে রুগীর সচেতনতা আছে বলে আইসিইউতে রাখা ঠিক হচ্ছে না - তাকে হাই কেয়ার বা সেরকম ইউনিটে রাখা উচিৎ। কারন আইসিউতে ঢোকা রুগীদের মধ্যে বাঁচার চান্স ৫০:৫০ এবং প্রতিদিনই কেউ না কেউ মারা যাচ্ছে। এটি রুগীর উপর প্রভাব ফেলে এবং সত্যিকার অর্থেই মাও হাল ছেড়ে দেয় এই সময়। তবুও তাকে ব্যয়বহুল আইসিইউতেই রাখা হয় এবং অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হতে থাকে এবং শরীর থেকে পর্যাপ্ত কার্বন ডাই অক্সাইড বের করতে পারছিলেন না তিনি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তখন লাইফ সাপোর্টের কথা বললেও পপুলারের ডিউটি ডাক্তাররা উপদেশ দেন যে <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Bipap">বাইপ্যাপ</a> মেশিন নামে একটি মেশিন আছে যেটির মাধ্যমে নল না ঢুকিয়ে এই অবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব। সেটি ভাড়ায় যোগাড় করা হত নাকি আগে। তবে আমাদের এই দরকারের সময়ে সেটি পাওয়া সম্ভব হয় না।<br />
<br />
তখন আমাদের কাছে হাসপাতালের প্রশাসন থেকে অদ্ভুত এক উপদেশ আসে। যেহেতু হাসপাতাল যোগাড় করতে পারছে না - আমরা মেশিনটি কিনে দিতে পারি। মেশিনটির মূল্য ২লাখ থেকে আড়াই লাখের মধ্যে। আমার আর কোন অনুভূতি তখন কাজ করে না। আমাদের আত্মীয় ডাক্তারটি সুদুর বিদেশ থেকে চিৎকার করে বলে তোরা কোথায় গেছিস? বের হ ওখান থেকে - জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি নেই আবার কোন মুখে রুগীকে কিনতে বলে। আমরা লজ্জা - আত্মসম্মানের মাথা খেয়ে হাসপাতালকে পুনরায় অনুরোধ করি কোথাও থেকে যোগাড় করতে -কারন রুগীকে এই অবস্থায় নড়াতে চাচ্ছিলাম না। পরদিন সন্ধ্যায় অবশেষে মেশিনটি আসে কিন্তু ততক্ষণে মার অবস্থা আরও অবনতির দিকে - তাকে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে দিয়ে দেয়া হয়। <br />
<br />
<b>ডাক্তারদের নৈতিকতা পর্ব: </b><br />
<br />
ওনাকে লাইফ সাপোর্টে দেবার আগেই আমরা একটি মেডিকেল বোর্ড বসানোর কথা বলেছিলাম। আমরা দুজনের নাম প্রস্তাব করি এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কয়েকজনের কথা বলে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে তাদের অধিকাংশই বোর্ডে আসতে রাজী হয় না। এদের একজনকে ব্যক্তিগত অনুরোধ করলে তিনি জানান যে তিনি বোর্ডে আসতে না পারলেও একবার এসে রোগী দেখে যাবেন। নিশ্চয়ই ৫ মিনিটে এক হাজার টাকা উপার্জন আর আধা ঘন্টায় দুই হাজার টাকা আয়ের মধ্যে ফারাক আছে। <br />
<br />
অবশেষে মাকে ল্যাব এইডে নেয়া হয় - মূলত উন্নত যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসার আশায়। সেখানে অবশেষে মেডিক্যাল বোর্ড আজ বসে এবং আমি ডাক্তার প্রতি ২ হাজার টাকা করে হাতে নিয়ে বাইরে দাড়িয়ে থাকি। এটা নাকি হাসপাতালের নিয়ম যে বাইরে থেকে ডাক্তার আসলে সেই বিল হাসপাতালের মূল বিলের সাথে যোগ হবে না - রুগী ক্যাশে আলাদা দেবে। এর সাথে আয়কর ফাঁকি বা অন্য কিছুর সম্পর্ক আছে কিনা জানি না তবে আমার বুদ্ধিতে কুলোয় না। আমি এই সিস্টেমের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছি। এনারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সিটি গা্ইডেড বায়োপসী আর ব্রন্কোস্কপী করা হবে কারন তারা বুঝতে পারছেন না রুগীর নিউমোনিয়া, যক্ষা না ক্যান্সার। সেই অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা হবে।<br />
<br />
না মাসে পাঁচ লাখ টাকা বেতনের এইসব ডাক্তারের কাছে বাস্তব জগৎটি ধরা পরে না। চোখের সামনে দেখা অ্যাক্সিডেন্টের পর আইসিউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা সিটি কর্পোরেশনের এক ময়লার ট্রাক ড্রাইভারের আত্মীয়দের কথোপকথন:<br />
<br />
: রুগীর অবস্থা কিরকম? <br />
: ভাল না, বাঁচার চান্স খুবই কম।<br />
: ওনার গলার থিকা নল কবে খুলবেন? <br />
: এটা খুললেতো উনি নিজে শ্বাস নিতে পারবেন না মারা যাবেন। রাখতে হবে।<br />
: শুনছি যে অনেক খরচ।<br />
: হ্যা লাইফ সাপোর্টে থাকলে ৪০০০০-৫০০০০ টাকা খরচ হয় প্রতিদিন। <br />
: তাইলে তো পারুম না।<br />
: এইটা আপনাদের সিদ্ধান্ত।<br />
<br />
কয়েক ঘন্টা পরে:<br />
: আমাদের রুগীকে ছাড়বেন কবে।<br />
: এরকম করেন কেন? রুগী মরতেও তো সময় লাগে।<br />
<br />
<b> প্রতিকার কোথায়: </b><br />
<br />
সময় এসেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ভাববার। জীবনের, স্বজনের প্রতি আমাদের ভালবাসা, দায়িত্ববোধ ও অনুরাগের সুযোগ নিয়ে মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় নিয়ে ছিনিমিনি খেলার জন্যে এক শ্রেণীর স্বাস্থ্য বেনিয়া তৎপর। সরকারী স্বাস্থ্য সেবা সেই শূন্যস্থান পুরণের মত অবস্থায় নেই। প্রতিবেশী ভারতে হেল্থ ইনস্যুরেন্সের চল বাড়ছে বিজ্ঞাপনে দেখলাম। আমাদের দেশে হেল্থ ইন্স্যুরেন্স কই?<br />
<br />
আমার শাশুড়ীকে লাইফ সাপোর্টে দেবার পর উনি কথা বলতে পারেন না আর। কিন্তু ইশারায় অনেক বলেন। যেমন ল্যাব এইডে স্থানান্তর করার আগে উনি হাত জোড় করে কাকুতি মিনতি করছিলেন ওনাকে বাসায় নিয়ে যেতে। হাত গালে দিয়ে দেখালেন যে উনি একটু শুতে চান। ওনাকে আশ্বাস দিয়েছিলাম ওখান থেকে নিয়ে যাব। কিন্তু নিয়ে তুললাম মুদ্রার ওপিঠ আরেকটি হাসপাতালে। এখন তিনি অভিমানে ফ্যালফ্যাল করে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন। আর অনুভুতি শুন্য আমরা আমাদের মাকে এইসব বেনিয়াদের হাতে ফেলে রেখে দায়িত্ব পালন করি। খাই দাই অফিস করি। ভেবেও দেখি না - ওই বেডে আমিও একদিন হয়ত থাকব এমনই ফ্যালফ্যালে দৃষ্টিতে তাকিয়ে।<br />
<br />
<a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/39117">সচলায়তনে প্রকাশিত</a></div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-92095937712321224582010-12-23T00:41:00.000+06:002011-10-19T00:42:34.803+06:00আমাকে শুদ্ধ করতে চাও কে গো তোমরা?<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://www.blacklooks.org/wp-content/uploads/2010/08/BUSI-45c-353x500.jpg" imageanchor="1" style="clear: right; float: right; margin-bottom: 1em; margin-left: 1em;"><img border="0" height="320" src="http://www.blacklooks.org/wp-content/uploads/2010/08/BUSI-45c-353x500.jpg" width="225" /></a></div>পৃথিবীর যাবতীয় অনাচারের অধিকাংশ হয়েছে আত্মগরিমা ও নিজের মতবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। অনেকে মনে করেছে তাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন জাতি নেই তাই তাদেরই দেশ দখল করে বিশ্ব শাসন করা উচিত। আবার অনেকে মনে করেছে তাদের মত মানবতাবাদী (?) বিশ্বে বিরল তাই তারা তাদের মানবতাবাদ বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বে। কেউ কেউ মনে করে তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্মের ধারণকারী, কাজেই অন্যদের নীচু করে দেখে তাদের দাব ...পৃথিবীর যাবতীয় অনাচারের অধিকাংশ হয়েছে আত্মগরিমা ও নিজের মতবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। অনেকে মনে করেছে তাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন জাতি নেই তাই তাদেরই দেশ দখল করে বিশ্ব শাসন করা উচিত। আবার অনেকে মনে করেছে তাদের মত মানবতাবাদী (?) বিশ্বে বিরল তাই তারা তাদের মানবতাবাদ বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বে। কেউ কেউ মনে করে তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্মের ধারণকারী, কাজেই অন্যদের নীচু করে দেখে তাদের দাবিয়ে রাখাটাই জায়েজ। এদের রোষানলে পরে সব সময়ই নির্যাতিত হচ্ছে সংখ্যালঘুরা, নির্মম ভাবে।<br />
<br />
এই ২০১০ সালে আমি বিশ্বের বুকে এমনই এক অনাচারের বিস্তার দেখে স্তম্ভিত। <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Corrective_rape">কারেক্টিভ রেপ</a> বা শোধক ধর্ষণ নামে একটি প্রথা চালু হয়েছে একবিংশ শতকে যা দক্ষিণ আফ্রিকায় অনাচারের পাহাড় তৈরি করছে। সমকামী নারীদের ধর্ষণ করলেই তারা শুদ্ধ সম্ভোগের স্বাদ পাবে এবং পরিশুদ্ধ হয়ে সাধারণ যৌন জীবন যাপন করবে এমন ধারণা একদল লোকের। তাদের মতে এইসব সমকামীদের সত্যিকারের <a href="http://www.iol.co.za/news/south-africa/corrective-rape-makes-you-an-african-woman-1.116543">আফ্রিকার নারী</a> বানানোর এই সুযোগ।<br />
<br />
এক <a href="http://www.telegraph.co.uk/news/worldnews/africaandindianocean/southafrica/4982520/Lesbians-subjected-to-corrective-rape-in-South-Africa.html">রিপোর্ট জানাচ্ছে</a> যে ওয়েস্টার্ন কেপের ৮৬ ভাগ সমকামী নারী ধর্ষণের ভয়ে ভীত। এই ধরণের <a href="http://www.guardian.co.uk/world/2009/mar/12/eudy-simelane-corrective-rape-south-africa">আক্রমণের শিকার</a> দক্ষিণ আফ্রিকার মহিলা ফুটবল দলের তারকা ইউডি যাকে ২০০৯ সালে গণধর্ষণের পর মেরে ফেলা হয়। <br />
<br />
প্রতি বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় ৫০০র ও বেশী সমকামী মহিলা শোধক ধর্ষণের শিকার হচ্ছে এবং ৩০ জনকে মেরে পর্যন্ত ফেলা হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিচার ব্যবস্থা এই শোধক ধর্ষণকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে স্বীকার করে না। ফলে এইসব ধর্ষণকারী স্বল্প জরিমানা দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। <br />
<br />
দক্ষিণ আফ্রিকায় ধর্ষণের জন্যে পুরুষদের এমন অজুহাতের কমতি নেই। নেলসন ম্যান্ডেলার দেশের কতিপয় লোকেরা <a href="http://www.blacklooks.org/2010/08/sexual-violence-at-the-limpopo-river/">জিম্বাবুয়ে থেকে পলায়নরত উদ্বাস্তুদের ধর্ষণ করতেও</a> পিছপা হয় না। হায়, কে কাকে শোধরাতে আসে!<br />
<br />
বুসিসিওয়ে সিগাসা নামে দক্ষিণ আফ্রিকার একজন কবি আর ব্লগার ধর্ষিত হওয়ার ছয় মাস পরে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে জানতে পারেন যে তার দেহে এইচআইভি ভাইরাস ঢুকেছে।<br />
<br />
এখানে রয়েছে তার দু:খের কাহিনীর কিয়দংশ, যা তিনি তার ব্লগ <a href="http://latifah.wordpress.com/2006/12/22/happy-birthday-to-me/">মাই রিয়ালিটিজ</a> এ লিখেছেন:<br />
<blockquote> বেশী দিন হয়নি জানতে পারলাম যে আমি এইচআইভি তে আক্রান্ত। আমি অনেক বেশীবার আক্রান্ত আর ধর্ষিত হয়েছি যার ফলে এই ভাইরাসে আমি আক্রান্ত হয়েছি। কারণ হল যে আমি একজন নারী যে নিজেকে সমকামী বলি একজন মহিলার সাথে আমার সম্পর্কের কারনে। আমাকে আক্রমণকারী আর বিভিন্ন ধর্ষক পুরুষরা এমন করেছে আমাকে বোঝানোর জন্য যে নারী হওয়ার আসল মানে কি। </blockquote>বুসি এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচতে পারেন নি যেহেতু তিনি <a href="http://www.blacklooks.org/2007/03/busisiwe_sigasa_231281_-_120307/">২০০৭ সালের মার্চ মাসে রোগে ভুগে মারা যান</a> । কিন্তু তার ব্লগ আর কবিতা তার জীবনের প্রতি এই অবিচারের শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে রয়ে গেছে।<br />
<br />
জুলুমের শিকার এইসব নারীদের কথা <a href="http://feministing.com/2010/12/13/corrective-rape-testimonies-from-the-continent/">লিপিবদ্ধ করার উদ্যোগ</a> নেয়া হয়েছে। তাদের ছবি নিয়ে <a href="http://www.blacklooks.org/2010/08/unforgotten-faces-acknowledging-black-womyn-of-south-africa/">প্রদর্শনী হচ্ছে</a>। আন্তর্জাতিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্যে। আপনারা চাইলে চেন্জ.অর্গের <a href="http://www.change.org/petitions/view/south_africa_declare_corrective_rape_a_hate-crime?alert_id=wherWCNRRW_dokjqzGOZV&me=aa">এই পিটিশনটি</a> সাইন করতে পারেন। <br />
<br />
<i>বুসির ছবি <a href="http://www.blacklooks.org/2010/08/unforgotten-faces-acknowledging-black-womyn-of-south-africa/">জানেলে মুহলি আর এলেন আইজেনমানের</a> সৌজন্যে </i><br />
<br />
<a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/36887">সচলায়তনে প্রকাশিত</a></div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-50429676704666699472010-11-04T00:43:00.000+06:002011-10-19T00:50:52.340+06:00বাড়ি ফেরা<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><a href="http://farm6.static.flickr.com/5209/5238540242_c0f6e1014d.jpg" imageanchor="1" style="clear: right; float: right; margin-bottom: 1em; margin-left: 1em;"><img border="0" height="320" src="http://farm6.static.flickr.com/5209/5238540242_c0f6e1014d.jpg" width="207" /></a>ঢাকায় ফিরেছি দুই সপ্তাহ আগে। বাবা-মার অসুস্থতার জন্যে দেশে ফেরার তাগিদ ছিল। গত জুনেই এ কারনে ঘুরে গেছি। এবারে একেবারেই ফিরেছি - তাই বেশ প্রশান্তি মনে। তার জন্যে সাহায্য করেছে নিয়তি। জুলাই মাসে আবেদন করেছিলাম ঢাকায় একটি চাকুরির জন্যে। সেটিই ত্বরান্বিত করল বাকি সবকিছু। প্রকল্পটি স্বল্প মেয়াদের কাজেই কয়েক মাস পরেই আবার চাকুরি অনিশ্চিত। কিন্তু সেটি কোন ব্যাপারই নয় আমার জন্যে। আমার দরকার ছিল একটি অজুহাত, ফেরার জন্যে। <br />
<br />
এই ফেরাটা কেমন হল? বাড়ি ফেরার মধ্যে আলাদা একধরনের ভালোলাগা কাজ করে। কারও হয়ত <a href="http://www.choturmatrik.com/blogs/%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BF-%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A5%A4">প্রতিদিন বাড়ি ফিরতে ভাল লাগে</a>। কারও হয়ত কয়েক মাস বা কয়েক বছর পর। আমি এত হিসাব কষি না। বাইরে থাকলে কখনই সেখানকার বসত বাড়িকে নিজের বাড়ি মনে হত না। <br />
<br />
মানুষ একজীবনে সব অসম্পূর্ণতা ধুয়ে মুছে ফেলতে চায়। কিন্তু কালে সেই অসম্পূর্ণতাগুলো জীবনেরই অঙ্গ হয়ে যায়। বাড়ি ফেরা মানে হচ্ছে চেনা জীবনের সেই অসঙ্গতির মধ্যে ফিরে যাওয়া - সেই লোড শেডিং সেই ট্রাফিক। আর কিছু উপরি পাওনা আছে - মায়ের হাতের রান্না ঝোলের স্বাদ পুনরায় আয়েশ করে পাওয়া।<br />
<br />
ঢাকা বদলেছে অনেক - লোক বেড়েছে - খাম্বায় তার বেড়েছে - অসহিষ্ণুতা বেড়েছে। আর বেড়েছে দ্রব্য মূল্য - রিক্সায় উঠেই দশ টাকা, সিএনজি একশ টাকা, ভিক্ষা পাঁচ টাকা। মানুষের বেতন কি বেড়েছে এই জ্যামিতিক হারে? চারিদিকে টাকা আয়ের জন্যে হাহাকার।<br />
<br />
আমার বড় চাচার বড় ছেলে বিদ্যুৎ বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী, চাকুরির বয়স শেষ হল প্রায়। গেলবার হজ্ব করেছেন তাই দাড়ি রেখেছেন। তিনি ঘুষ খান না তাই তার শত্রু অনেক। এবার তার চাকুরি খাবার জোড় তদবির করছে সহকর্মীরা তিনি জামাতের লোক এই অপবাদ দিয়ে। প্রকারান্তরে জামাতের অবস্থানই মজবুত করছে এইসব স্বার্থান্বেষী অর্বাচীনরা।<br />
<br />
প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় ঘন্টাখানেক সিএনজিতে জ্যামে বসে থাকি। মোবাইল ইন্টারনেটের কল্যানে ফেসবুক দেখি, এটা ওটা করি। আর ভাবি জাকার্তা/বার্লিনের মত যদি ওভারপাস আন্ডারপাস হত তাহলে ২০ মিনিটে অফিস পৌছানো যেত। বাস্তবতা এই যে এই অসঙ্গতি গুলো নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। তার পরেও বাড়ি ফেরার মধ্যে আনন্দ আছে।<br />
<br />
সেই আনন্দ নিয়েই এখন ঘুমাতে যাচ্ছি। শুভরাত্রি।<br />
<br />
ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা: <a href="http://www.flickr.com/photos/aigle_dore/5238540242/#/">ময়ান ব্রেন </a><br />
<br />
<a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/36052">সচলায়তনে প্রকাশিত</a></div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-54982500985213571112010-09-16T00:52:00.003+06:002011-10-19T01:18:54.171+06:00যেই লোকটি মাইকেল রকেফেলারকে খেয়ে ফেলেছিল<div dir="ltr" style="text-align: rught;" trbidi="on"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/manwhoate.preview.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/manwhoate.preview.jpg" /></a></div>হ্যা, আঁতকে ওঠার মতই এই শিরোনামটি। '<a href="http://www.broadwayworld.com/article/Dog_Run_Rep_Presents_THE_MAN_WHO_ATE_MICHAEL_ROCKEFELLER_910103_20100826">দ্যা ম্যান হু এইট মাইকেল রকেফেলার</a>' হচ্ছে জেফ কোহেন পরিচালিত নিউ ইয়র্কের অফ ব্রডওয়ের সাম্প্রতিক মঞ্চায়িত একটি (সেপ্টেম্বর ১০ -অক্টোবর ৩, ২০১০) নাটকের নাম যা ক্রিস্টোফার স্টোকসের একই শিরোনামে একটি ছোট গল্প অবলম্বনে রচিত। <br />
<br />
এখন স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগবে এই <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Michael_Rockefeller">মাইকেল রকেফেলার</a> কে। কোন সাধারণ মানুষ হলে এত মনোযোগ পেতেন না যতটুকু মাইকেল রকফেলার পেয়েছেন ১৯৬১ সালে তৎকালীন <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/New_Guinea">নিউ গিনিতে</a> তার অন্তর্ধানের পরে। ১৯৩৮ সালে নিউ ইয়র্কে জন্ম নেয়া মাইকেল তৎকালীন নিউইয়র্কের মেয়র এবং পরবর্তী আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Nelson_Aldrich_Rockefeller">নেলসন অলড্রিচ রকেফেলারের</a> ছেলে। <br />
<br />
আজকের দিনে যেমন বিল গেটস বা আম্বানি পরিবারের সম্পদ ও সাম্রাজ্যের কথা আমাদের মুখে মুখে সেরকমই আমেরিকার <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Rockefeller_family">রকেফেলার পরিবারের</a> নামের পরিচিতি উনবিংশ শতাব্দি শেষ ভাগ থেকে বিশ্বব্যাপী রয়েছে। জন ডি রকেফেলার অবশ্য দানেও সুপরিচিত ছিলেন –- শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় তারই অর্থে তৈরি এবং তিনি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং শিশুদের কল্যাণে (১৯২৫ সালের ৫০০ মিলিয়ন মানে বর্তমানে ৫ বিলিয়ন ডলার)। তাদের পরিবারেরই সন্তান নেলসন ডি রকেফেলার ১৯৫৮ সালে নিউ ইয়র্কের গভর্নর হন। তিনি তিন বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্যে দাড়িয়ে ১৯৭৪ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/M-Rockefeller,-college200.jpg" imageanchor="1" style="clear: left; float: left; margin-bottom: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" src="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/M-Rockefeller,-college200.jpg" /></a>ছবি: কলেজে মাইকেল</div><br />
মাইকেলের বেড়ে ওঠা ছিল শান শওকতের মধ্যে - খেদমতে ছিল প্রচুর কাজের লোক। সেরা স্কুল, ইউরোপে ছুটি কাটাতে যাওয়া এবং আমেরিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় রকফেলার ম্যানসনগুলিতে ভ্রমণ - এগুলো তার জন্যে ছিল নস্যি। মাইকেলের গ্রাজুয়েশন হয় ১৯৬০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী সাহিত্যে এবং তার পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগ দেয়াই তার অবধারিত নিয়তি ছিল। <br />
<br />
কিন্তু একটু পড়ুয়া টাইপের (তার চোখের চশমার জন্যে) মাইকেল বখে যান নি এবং তার ধনের গর্ব ছিল না। তিনি তার প্রচলিত জীবনধারার বাইরে অভিজ্ঞতা লাভের জন্যে পুয়ের্টোরিকোতে এক গ্রীষ্মের ছুটি কাটান মুদি দোকানে কাজ করেন এবং ভেনেজুয়েলাতে তাদের পরিবারের র্যান্চে রাখালের কাজ করেছেন। নতুন যায়গা, মানুষ ও বিষয়ের প্রতি তার আগ্রহ ছিল। এবং সেই আগ্রহ মেটাতে নিয়তির খেলায় মাত্র তেইশ বছর বয়সে নিউ গিনির জঙ্গলে তিনি অন্তর্ধান হন।<br />
<br />
<iframe frameborder="0" height="350" marginheight="0" marginwidth="0" scrolling="no" src="http://maps.google.com/maps?f=q&source=s_q&hl=en&geocode=&q=Papua,+Indonesia&sll=-4.455951,143.371582&sspn=8.42647,16.105957&ie=UTF8&hq=&hnear=Papua,+Indonesia&ll=-4.455951,143.283691&spn=8.422857,16.105957&t=h&z=6&output=embed" width="425"></iframe><br />
<small><a href="http://maps.google.com/maps?f=q&source=embed&hl=en&geocode=&q=Papua,+Indonesia&sll=-4.455951,143.371582&sspn=8.42647,16.105957&ie=UTF8&hq=&hnear=Papua,+Indonesia&ll=-4.455951,143.283691&spn=8.422857,16.105957&t=h&z=6" style="color: blue; text-align: left;">View Larger Map</a></small><br />
<br />
আজও পর্যন্ত <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/New_Guinea">নিউ গিনিকে</a> বেশ রহস্যভরা এলাকা হিসেবে সুবিদিত। গত শতাব্দী জুড়ে ইংরেজ এবং ওলন্দাজ মিশনারীরা সেখানকার জংলী আদিবাসীদের ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং সভ্য জগৎে ফিরে এসে তাদের ছিন্নমস্তক এবং মানুষের মাংস খাবার গল্প ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী মনযোগ আকর্ষণ করেছেন। এই সব জংলীরা বাস করতেন ঘন জঙ্গলে - মাইলের পর মাইল ভেতরে। ওখানে কম সভ্য লোকই যেতে পারত বলে তাদের এইসব মানুষখেকো আদিম আচার তখনও চলছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেখানে নৃতত্ত্ববিদদের বেশ কটি অভিযান চালিত হয় এবং ঘটনাক্রমে মাইকেল ১৯৬১ সালে সেরকম একটি অভিযানে অংশ নিয়ে পাপুয়া নিউ গিনি আসে। <br />
<br />
হার্ভার্ডের গ্রাজুয়েশন শেষে ৬ মাস বাধ্যতামূলক সামরিক ট্রেইনিং এর পরে বাবার ব্যাক্তিগত আর্টের সংগ্রহশালার জন্যে শিল্পকর্ম সংগ্রহ করার জন্যে তার দক্ষিণ আমেরিকার আন্দেজ অঞ্চলে যাবার কথা ছিল। কিন্তু তার রুমমেটের কাছে শুনতে পান যে রবার্ট গার্ডনার নামে হার্ভার্ডের একজন তরুণ প্রফেসর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরের হয়ে নিউ গিনিতে একটি নৃতাত্বিক অভিযানে যাবেন। ঠিক হল যে রকফেলার নিজ খরচে অভিযানে যোগ দেবেন এবং রবার্টের ডকুমেন্টারি দলে সাউন্ড রেকর্ডার এবং ফটোগ্রাফারের কাজ করবেন।<br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/M-Rockefeller-poles-river150.jpg" imageanchor="1" style="clear:right; float:right; margin-left:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="175" width="150" src="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/M-Rockefeller-poles-river150.jpg" /></a></div>তারা তৎকালীন ডাচ নিয়ন্ত্রিত নিউ গিনিতে (বর্তমানে দ্বীপটির এক অংশ ইন্দোনেশিয়ার এবং আরেক অংশ স্বাধীন পাপুয়া নিউ গিনি) এসে বালিয়েম উপত্যকার এনদানি আদিবাসীদের উপর একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করা শুরু করেন। এই অভিযানের ছবিতে দেখা যায় মুখভর্তি দাড়ি ও খাকি প্যান্ট পড়া মাইকেল আদিবাসীদের সাথে কথা বলছেন ও তাদের ছবি তুলছেন। এই অভিযানে মাইকেল <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Asmat_people">আসমাত আদিবাসীদের</a> (বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার অধীনে পাপুয়ার একদল জংলী)সম্পর্কে শোনেন এবং তাদের কাঠের কাজ, মস্তকের খুলিতে কাজ ইত্যাদি সংগ্রহ করতে আগ্রহী হন।<br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/M-Rockefeller-native-boy200.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="230" width="200" src="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/M-Rockefeller-native-boy200.jpg" /></a></div>১৯৬১ সালের জুন মাসে তিনি মূল অভিযান থেকে আলাদা হয়ে আসমাতদের সন্ধানে যান। তিনি স্টিলের কুঠার আর সিগারেট এর বদলে এগুলোর কয়েকটি নমুনা যোগাড় করেন এবং বিস পোল (৩০ ফুট লম্বা কাঠের কারুকার্যখচিত পোল) এবং কাঠের ক্যানো (নৌকা) সংগ্রহ করতে মনস্থ করেন। রকফেলার তার ডায়রিতে লেখেন আসমাত আদিবাসী সম্পর্কে: “এইসব শিল্পের মতই আশ্চর্যজনক হচ্ছে তাদের আচার ও রীতি যা এখনও আদিম রয়ে গেছে। পাঁচ বছর আগেও এরা সবাই <a href="http://en.wikipedia.org/wiki/Headhunting">হেডহান্টিং</a>(ছিন্নমস্তক সংগ্রহ) করত। কিছু গহীন এলাকায় এখনও তারা তা করে।” তবে উদ্ধত ও বিপদজনক আসমাতদের সাথে সমস্যা হওয়ায় তিনি আবার মূল অভিযানে ফিরে যান জুলাই মাসে। সেপ্টেম্বর মাসে তারা সবাই আমেরিকা ফিরে যান।<br />
<br />
বাড়িতে ফিরে মাইকেল শোনেন যে তার বাবা-মার বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে এবং তার মন ভারাক্রান্ত হয়। তিনি আবার নিউ গিনি ফিরে যেতে মনস্থ করেন এবং সেই অভিযানের জন্যে যোগাড়-যন্তর শুরু করেন। এর জন্যে সরকারী অনুমোদনের দরকার ছিল – তবে তার পিতা ক্ষমতার জোরে সহজেই মার্কিন ও ডাচ সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহ করে দেন। দু সপ্তাহ বাড়ি থেকেই তিনি সেপ্টেম্বরেই আবার পাপুয়া নিউ গিনি ফিরে যান।<br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://www.papuaerfgoed.org/files/u1/soortgelijke_20catamaran_1.jpg" imageanchor="1" style="clear:right; float:right; margin-left:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="149" width="240" src="http://www.papuaerfgoed.org/files/u1/soortgelijke_20catamaran_1.jpg" /></a></div>তিনি প্রথমে থামেন উত্তরের উপকুলের হলান্ডিয়াতে (তখনকার ডাচ কলোনির রাজধানী) এবং ডাচ সরকারকে বলেন একজন গাইড জোগাড় করতে। ঠিক হয় ডাচ ব্যুরো অফ নেটিভ অ্যাফেয়ার্সের রেনে ওয়াসিন্ক যাবে তার সাথে। এটি একটি অবিবেচক সিদ্ধান্ত ছিল কারন রেনে একজন নৃতত্ববিদ ছিলেন – অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বুশম্যান নয়। তারা ৩০ ফুট লম্বা একটি মোটর চালিত ক্যানু (নৌকা) কেনেন এবং অক্টোবরের মাঝামাঝি আসমাতদের লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। তারা ডজনের ও বেশী আসমাত গ্রামে যান এবং ডাচ মিশনারীদের সহায়তায় তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তিনি আরও আদিবাসী শিল্পকর্ম যোগাড় করেন এবং এবং ছিন্ন মস্তকের জন্যে ১০টি কুঠার দেবেন বলে ঘোষণা দেন যা পরে ডাচ সরকারী কর্মকর্তা কর্তৃক সমালোচিত হয় (কারণ এটি আদিবাসীদের মানুষ হত্যা করতে উদ্বুদ্ধ করবে)। <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/Rene-Wassink200.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="264" width="200" src="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/Rene-Wassink200.jpg" /></a> <i>ছবিতে: রেনে ওয়াসিন্ক</i> </div>এই অভিযানে তার খুব কষ্ট হলেও বিরল শিল্প কর্ম সংগ্রহের লক্ষ্যে তিনি তা চালিয়ে নিতে থাকেন। ১৯৬১ সালের নভেম্বরের ১৮ তারিখে তারা আইলান্ডেন নদী দিয়ে যাচ্ছিলেন যা আরাফুরা সাগরে এসে মিশেছে। সাগরের বিস্তীর্ণ মোহনায় এসে জোড়াল স্রোতের তোড়ে তাদের নৌকায় পানি ঢোকে ও তা উল্টিয়ে যায়। তাদের সাথের আদিবাসী দুই বালক পেট্রোলের জেরিকেনের তেল ফেলে সেটাকে লাইফবয় করে সাহায্যের জন্যে কুলের সন্ধানে ছুটে যায়। মাইকেল ও রেনে উল্টানো নৌকা ধরে ভাসতে থাকেন খরস্রোতা নদীর মোহনায়। স্রোত নৌকাটাকে এবং সাথে সাথে মাইকেল ও রেনেকেও সাগরের দিকে টেনে নিতে থাকে। তাদের আশা ছিল সাহায্য আসবে সহসাই – এবং এই আশায় একটি রাত ভেসে কাটায় তারা। ভোর পাঁচটার দিকে তারা তীরের দেখা পায় এবং আন্দাজ করে ৪ থেকে ৭ মাইল দুরে তা হবে। তারা নৌকার কাঠ ভেঙ্গে দাড় বাইতে চেষ্টা করে উল্টানো নৌকার দিক পরিবর্তনের জন্যে। কিন্তু ব্যর্থ হয়। তারা ক্রমশই সমুদ্রের দিকে ভেসে যাচ্ছে দেখে মাইকেল সাঁতরে কুলের দিকে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। রেনে তাকে বোঝাবার ব্যর্থ চেষ্টা করে এবং শেষে বলে “মাইকেল তুমি পাগল হয়ে গেছ”। রেনে সাঁতার ভাল মত পারেন না তাই বোটের কাছে থেকে গেলেন। <br />
<br />
সেই আদিবাসী ছেলে দুটি পাঁচ ঘন্টা সাঁতরে তীরে পৌঁছে খবরটি দেয় যে মাইকেল ও রেনে বিপদে পড়েছে। পরদিন সকালে ডাচ সরকার ১২টি নৌকা ও সার্চ প্লেন সহকারে উদ্ধার টিম পাঠায়। নভেম্বরের ১৯ তারিখ বিকেলে রয়্যাল ডাচ নেভি রেনেকে সাগর থেকে উদ্ধার করে। <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/Nelson-Rockefeller-gov150.jpg" imageanchor="1" style="clear:right; float:right; margin-left:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="166" width="150" src="http://i.cdn.turner.com/trutv/trutv.com/graphics/photos/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/Nelson-Rockefeller-gov150.jpg" /></a><i>মাইকেলের বাবা তৎকালীন নিউ ইয়র্কের গভর্নর ও পরবর্তীকালে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট নেলসন রকেফেলার</i></div>খবর পেয়ে গভর্নর নেলসন রকেফেলার পাপুয়া ছুটে আসেন। তার উদ্যোগে আরও দশদিন সার্চ অব্যাহত থাকে, কিন্তু মাইকেলের দেখা মেলে না। <br />
<br />
রেনে মনে করেন যে মাইকেল ভাটার সময় সাঁতরে কুলে যেতে পারেন নি। তবে মাইকলের বাবার গুরুত্ব বিবেচনা করে এরপর সংবাদপত্র বিভিন্ন ধরনের চটকদার সংবাদ তৈরি করতে থাকে (হলুদ সাংবাদিকতা তখনও ছিল)। প্রথম দিকে চাউর হয় কোন কুমীর বা হাঙ্গর মাইকেলকে খেয়েছে তাই সে কুলে পৌঁছাতে পারে নি। এর পর বিভিন্ন সময় প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে খবর এসেছে মাইকেলকে জঙ্গলিরা ধরে রেখেছে বা সে স্বেচ্ছায় তাদের সাথে আছে। এ জন্যে মাইকেলের পরিবার কখনই তার ফিরে আসার আশা ছাড়ে নি।<br />
<br />
মাইকেলের এই ঘটনা নিয়ে বেশ কটি বই লেখা হয়েছে, টিভিতে ডকুমেন্টারি ও চলচ্চিত্রায়ন হয়েছে যাতে তার রহস্যময় অন্তর্ধানের বিভিন্ন ব্যাখ্যা করা হয়েছে। <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://www.papuaerfgoed.org/files/u1/MiltMachlin_MR_1.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="181" width="240" src="http://www.papuaerfgoed.org/files/u1/MiltMachlin_MR_1.jpg" /></a> <i>ছবি: সাংবাদিক মিল্ট মাখলিন</i></div>আট বছর পরে সাংবাদিক মিল্ট মাখলিন নিউ গিনিতে পৌছান মাইকেল রকেফেলারের অন্তর্ধান রহস্য তদন্ত করতে। তিনি আসমাতদের গ্রামে কাজ করা এক ডাচ মিশনারী উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে জঙ্গলিরা তাকে ধরে খেয়ে ফেলেছে। এই মিশনারী জানান যে মাইকেল যেখানে অদৃশ্য হয়েছে তার অনতিদুরেই পাঁচজন আসমাত লোককে ডাচ পুলিশ বছর দুই আগে হত্যা করে। তারা প্রতিশোধ নেবার জন্যে মুখিয়ে ছিল। পানিতে থাকা অবস্থায়ই জঙ্গলিরা তীর মেরে মাইকেলকে আহত করে। এর পর তাকে ডাঙ্গায় তোলা হয় এবং মাথা কেটে নেয়া হয়। তার শরীরের কিছু অংশ রেঁধে তারা খায় এবং বাকি অংশ মাটিতে পুঁতে ফেলে। দুজন আদিবাসী যোদ্ধা জানায় যে তারা একজন সাদা চামড়ার উইচ ডক্টরকে ধরে মাথা কেটে ফেলে এবং তার যাদু এখন তাদের কাছে। এদের একজন যাদু হিসেবে মাইকেলের চশমা দেখায়। <br />
<br />
কেউ কেউ এমনও বলেছে যে ডাচ সরকার জঙ্গলি দ্বারা মাইকেলের মৃত্যুর ঘটনা লুকিয়েছে তখন কারণ এতে পর্যটক/অভিযান আসা বন্ধ হয়ে যেত। <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://www.agamemnon.com/images/SFMRsm.jpg" imageanchor="1" style="clear:right; float:right; margin-left:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="189" width="150" src="http://www.agamemnon.com/images/SFMRsm.jpg" /></a></div>১৯৭২ সালে প্রকাশিত মিল্ট মাখলিন এর 'দ্যা সার্চ ফর মাইকেল রকফেলার' বইটি অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র তৈরি হচ্ছে যা এ বছরই বের হবার কথা। ১৯৯৫ সালে ডিসকভারী চ্যানেলে মাইকেলের উপর একটি ডকুমেন্টারীতে তার পরিবারের লোকজনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। <br />
<br />
পরিস্থিতি এখন অনেক বদলেছে - নিউ গিনির এক অংশ এখন ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া প্রদেশ এবং অপর অংশ স্বাধীন পাপুয়া নিউ গিনি। কিন্তু কিছু জিনিষ এখনও বদলায়নি। ২০০৫ সালে নিউ ইয়র্কার পত্রিকা ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ার ইরিন জায়াতে একটি অভিযাত্রার খবর ছাপায় যেখানে এক জঙ্গলী গোত্রের সাথে সভ্য জগৎের মানুষের প্রথম দেখা হয়। যা বোঝায় যে এই অঞ্চলের বহু এলাকা এখনও সভ্য মানুষের যোগাযোগের বাইরে। <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://www.papuaerfgoed.org/files/u1/dead-birds-01_1.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="164" width="240" src="http://www.papuaerfgoed.org/files/u1/dead-birds-01_1.jpg" /></a></div>মজার ব্যাপার হচ্ছে <a href="http://akrockefeller.com/history/">এই সাইটটি</a> এ কে রকফেলারের নামে যাকে বলা হয় মাইকেল রকফেলারের মিশ্র সন্তান যে ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থনে বিভিন্ন কর্মকান্ড করে যাচ্ছে।<br />
<br />
মাইকেল রকেফেলারের সংগৃহীত অনেক শিল্পকর্ম এখন মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টস (মোমা) এর মাইকেল সি রকেফেলার কালেকশনে আছে (মাইকলের বাবা এই জাদুঘরের একজন ট্রাস্টি ছিলেন)। <br />
<br />
ছবি এবং অন্যান্য গল্পের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি নিম্নলিখিত সাইটগুলির কাছে:<br />
<br />
১) <a href="http://www.papuaerfgoed.org/en/The_disappearance_of_Michael_Rockefeller">মাইকেল রকেফেলারের অন্তর্ধান</a> - পাপুয়া হেরিটেজ সোসাইটি<br />
<br />
২) <a href="http://www.trutv.com/library/crime/notorious_murders/celebrity/michael_rockefeller/index.html">মাইকেল রকেফেলার</a> - ডেভিড ক্রাইচেক, ট্রুটিভি ক্রাইম লাইব্রেরী<br />
<br />
আরও কিছু সহায়ক লিঙ্ক:<br />
<br />
১) <a href="http://www.agamemnon.com/rockefeller.html">দ্যা সার্চ ফর মাইকেল রকেফেলার</a> - আগামেমনন ফিল্মস <br />
<br />
২) ইন্দোনেশিয়ার <a href="http://www.thisblogrules.com/2010/05/first-photos-of-a-tribe-living-in-rainforest-trees.html">পাপুয়া রেইন ফরেস্টের আদিবাসীদের ছবি</a> - যারা সভ্য জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন<br />
<br />
৩) লিওনার্দ নিময়ের উপস্থাপনায় টিভি ডকুমেন্টারি ইউটিউবে দেখুন:<br />
<br />
<a href="http://www.youtube.com/watch?v=ktAXM6Tm1d0">পর্ব ১</a> | <a href="http://www.youtube.com/watch?v=ds1Aa52XR9M&feature=related">পর্ব ২</a> | <a href="http://www.youtube.com/watch?v=5X4NPsS_5zk&feature=related">পর্ব ৩</a> <br />
<br />
<a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/35115">সচলায়তনে প্রকাশিত</a></div>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-14525091725545725562010-09-12T10:51:00.009+06:002010-09-13T10:55:49.008+06:00ফ্রি মানে মাগনা নয় - পর্ব তিন<ul><li><a class="bb-url" href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/34943" target="_blank">ফ্রি মানে মাগনা নয় - পর্ব এক</a> </li>
<li><a class="bb-url" href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/35001" target="_blank">ফ্রি মানে মাগনা নয় - পর্ব দুই</a></li>
</ul><span style="font-weight: bold;">পর্ব তিন:</span><br />
<br />
ইন্টারনেটের জন্মই হয়েছিল একে অপরের সাথে তথ্য ভাগ (share) করার জন্যে। আমরা বিগত দশকে উইকিপিডিয়া, ফেসবুক, ফ্লিকার ইত্যাদি যে সব উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ দেখেছি সেগুলো কিন্তু সফল হয়েছে আমার আপনার স্বেচ্ছাসেবার ফলে বেশী পরিমাণে বিষয়বস্তু (content) তৈরীর মাধ্যমে। ইন্টারনেট সেইসব ব্যক্তির উপর ভরসা করে যারা স্বাধীন ভাবে আবেগ দিয়ে তাদের সময় এখানে ব্যয় করে। এইসব স্বেচ্ছাসেবীরা অধিকাংশই আপাত:দৃষ্টিতে বিনামূল্যে কাজ করলেও তাদের কিন্তু কিছুটা প্রাপ্তি আছে যা মূল্যে পরিমাপযোগ্য নয়। সে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকে।<br />
<br />
<a href="http://farm1.static.flickr.com/248/3264112407_278e67eb32.jpg" rel="lightbox[post-35042]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://farm1.static.flickr.com/248/3264112407_278e67eb32.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">ছবি ফ্লিকার থেকে <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/funch/3264112407/" target="_blank">লোটে গ্রোনকারের</a> সৌজন্যে। সিসি <a class="bb-url" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-sa/2.0/deed.en" target="_blank">বাই-এনসি-এসএ</a>।</span><br />
<br />
মানুষ কেন বিনামূল্যে কন্টেন্ট তৈরি করতে পছন্দ করে? এই পৃথিবীতে অনেকে আছে যারা নিজে থেকে অনেক কিছু করতে করতে চায় আপাতদৃষ্টিতে কোন লাভের আশা ছাড়াই। এটাও কিন্তু নতুন কিছু নয়। ধরুন অনেক বাঙ্গালী পছন্দ করে অন্যকে উপদেশ দিতে। ঔষধ, পথ্য থেকে শুরু করে এহেন কোন বিষয় নেই যা আমরা উপদেশ হিসেবে পাই। এগুলো কিন্তু উন্নত বিশ্বে মানুষ পেশাজীবীদের কাছ থেকে সাধারণত যোগাড় করে অথচ আমরা বিনামূল্যেই তা পাই।<br />
<br />
বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে পেশাজীবী উপদেশক, যেমন বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা স্থপতি এদের সাথে পাল্লা দিয়ে অপেশাদার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষও তাদের মতামত দিতে পারছে। ফলে বিশেষজ্ঞ অভিমতের মূল্য হঠাৎ করেই কমে গেছে। আগে রাজনীতি সম্পর্কে কলাম লিখতেন নামভারী রাজনীতিক/বুদ্ধিজীবীরা। বর্তমানে ব্লগে নাম না জানা সাধারণ নাগরিকের কাছ থেকে গভীর বিশ্লেষণ পাওয়া যায় তাও আবার বিনামূল্যে। এই সব অপেশাদারদের কি প্রণোদনা দেয় বিনে পয়সায় এই সেবা দেবার?<br />
<br />
এই সব কাজ কিন্তু আসলে আল্ট্রু্ইজম (নি;স্বার্থ ত্যাগ) বা সাহায্য নয়। অ্যাডাম স্মিথ বলেছেন ”আলোকপ্রাপ্ত ব্যাক্তিগত ইচ্ছা মানব জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পদ”। আলোকপ্রাপ্ত বা সংস্কারমুক্ত ব্যাক্তিগত ইচ্ছা' বা <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Enlightened_self-interest" target="_blank">এনলাইটেন্ড সেল্ফ ইন্টারেস্ট</a>' নৈতিকতার নীতিবিদ্যার একটি দর্শন যা বলে যে যেসব ব্যক্তি অন্যের লাভের জন্যে কাজ করে বা অন্যকে সহায়তা করে, আদতে তার নিজের ব্যাক্তিগত ইচ্ছাই পূরণ করে। এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে এই ব্যাক্তিগত ইচ্ছা যদি সংস্কারমুক্ত না হয় বা কুটকৌশল সমৃদ্ধ হয় তাহলে এই দর্শন কার্যকরী হবে না এবং হিতে বিপরীত হতে পারে।<br />
মানুষ অনেক কিছুই বিনামূল্যে করে দেয় তার নিজস্ব কারণে - অনেকে মজা করার জন্যে করে, কারণ তাদের ভাল লাগে - কারণ তারা তাদের প্রতি অন্যের দৃষ্টি ফেরাতে চায় – তাদের মতামতগুলো প্রচার করতে চায় এবং চায় অন্যরা তাদের সমর্থন করুক – এছাড়াও অনেক ব্যাক্তিগত কারণ থাকে তাদের।<br />
<br />
লেখক ক্রিস অ্যান্ডারসন তার ফ্রি বইতে এই ব্যাপারটিকে সরলীকরণ করেছেন: "মানুষের শারীরিক চাহিদা গুলো যখন মিটে যায় মানুষের জন্যে কাঙ্খিত পণ্য হয় সামাজিক মূলধন" (<a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Social_capital" target="_blank">Social Capital</a>) - অর্থাৎ, আমাদের পারিপার্শিক সমাজে আমাদের সুনাম, প্রভাব, প্রতিপত্তি ইত্যাদি।<br />
<br />
২০০৭ সালে ওরাইলি মিডিয়ার লেখক <a class="bb-url" href="http://www.oreillynet.com/pub/au/36?all=yes" target="_blank">অ্যান্ডি ওরাম</a> একটি গবেষণা করেন ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা অপেশাদার কন্টেন্টগুলো নিয়ে যেগুলো বিশ্বব্যাপী ব্যাবহারকারীরা তৈরি করেছে কোন অর্থনৈতিক সুবিধা ছাড়াই। তিনি এর পরিমাণ ও উন্নত মান দেখে অবাক হন - গেমস, হার্ডওয়ার ও সফ্টওয়ারের ইনস্ট্রাকশন ম্যানুয়াল, পণ্যের রিভিউ যা বাণিজ্যিক বিক্রেতাদের সেবার সংস্করণ থেকে অনেকগুণ সমৃদ্ধ। তিনি এরপর দীর্ঘমেয়াদী একটি <a class="bb-url" href="http://onlamp.com/pub/a/onlamp/2007/06/14/why-do-people-write-free-documentation-results-of-a-survey.html" target="_blank">জরিপ</a> করেন জানার জন্যে যে কি মানুষকে প্রণোদনা দেয় এইসব বিনামূল্যে করে দেবার।<br />
<br />
<a href="http://farm4.static.flickr.com/3283/3070101527_1b44b177e8_z.jpg?zz=1" rel="lightbox[post-35042]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://farm4.static.flickr.com/3283/3070101527_1b44b177e8_z.jpg?zz=1" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">ছবি ফ্লিকার থেকে <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/petefletch/3070101527/" target="_blank">পিট ফ্লেচ</a> এর সৌজন্যে। সিসি <a class="bb-url" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/2.0/deed.en" target="_blank">বাই-এনসি-এনডি</a>।</span><br />
<br />
জরিপের ফলাফলের তালিকায় প্রথম ছিল কমিউনিটি - মানুষ এগুলো করে কমিউনিটি(তার পারিপার্শিক সমাজ) দ্বারা প্রণোদিত হয়ে, দ্বিতীয়টি হচ্ছে ব্যাক্তিগত উন্নয়ন, অর্থাৎ অনুশীলন মানুষকে উন্নত কিছু তৈরি করতে সহায়তা করে। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে জ্ঞান ভাগ করে নেয়া - অনেকেরই কিছু অর্জিত জ্ঞান থাকে যা প্রয়োগের সুযোগ হয় না - তাই ইন্টারনেটের কল্যাণে তারা উপযুক্ত কমিউনিটি খুঁজে সেগুলো দ্বারা অপরকে সহায়তা করতে সচেষ্ট হয় কোনরূপ প্রতিদানের আশা না করেই। মজার বিষয় হচ্ছে - সুনাম বা খ্যাতির আকাঙ্খা এই তালিকার নীচের দিকে ছিল। আর মানুষ কিভাবে সময় পায় এগুলো করার অন্য কোন কিছু করা বাদ দিয়ে যা তাকে সেরকম সামাজিক বা মানসিক প্রশান্তি এনে দেবে না? আমার নিজের কথাই ধরুন - এক জীবনে রকের আড্ডায় অনেক সময় অহেতুক ব্যয় করেছি - এখন হয়ত ফুরসত পেলে করণীয় বেছে নিতে হলে ব্লগিংকেই বেছে নেব দুটোর মধ্যে।<br />
<br />
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কর্মস্থল ও অন্যান্য স্থানে আমরা যেসব কাজ করে থাকি তাতে কিন্তু আমাদের জ্ঞান ও শক্তি বা ইচ্ছার কিছু অংশ অলস ভাবে থেকে যায় – সেগুলো সম্পূর্ণ ব্যবহার করার সুযোগ হয় না। সমাজবিজ্ঞানীরা একে বলেন <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Cognitive_Surplus" target="_blank">কগনিটিভ সারপ্লাস</a>। আমরা সেসব ক্ষেত্র আমাদের শ্রম বিনামূল্যে দিতে পছন্দ করি যা আমাদের বলার সুযোগ, সম্মান লাভ, অন্যের মনযোগ ও পাঠকশ্রেণী এনে দিতে সাহায্য করে। সংক্ষেপে বলতে হয় এসব কাজ বিনামূল্যে করলেও আমরা এর থেকে অর্থের বিনিময়ে চাকুরির থেকে বেশী পরিমান সন্তুষ্টি লাভ করি।<br />
<br />
আমরা ইন্টারনেটের বৃদ্ধির সাথে এই ব্যাপারটি মিলিয়ে দেখতে পারি। বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষ নতুন কিছু তৈরি করে চলেছে ইন্টারনেটে যার বদলে বেশী বা কম পরিচিতি পাচ্ছে যা হয়ত তার পূর্বের জীবন যাত্রার মাধ্যমে সম্ভব হত না। এভাবেই ফ্রি কন্টেন্টের জোয়ার বইছে।<br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">ইন্টারনেটে স্বেচ্ছাসেবা এবং দানের অর্থনীতি (<a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Gift_economy" target="_blank">gift economy</a>)</span>:<br />
<br />
অনেক সময় আপনি অনেক বিনামূল্যের জিনিষ ব্যবহার করেন এবং হয়ত জানতেও পারেন না যে কিভাবে এর জন্যে আপনাকে মূল্য দিতে হচ্ছে। যেমন ধরুন বিনে পয়সার একটি ম্যাগাজিন পেলেন সেটা আসলে বিজ্ঞাপনদাতাদের কর্তৃক ভর্তুকি দেয়ার ফলে আপনি বিনামূল্যে পেয়েছেন। এই খরচটি ঐ নির্দিষ্ট পণ্যের বাজেটে ধরা আছে এবং আপনি বা অন্য কেউ যখন সেই পণ্যটি বেশী মূল্যে কিনছেন তখন ম্যাগাজিনটির দাম পরিশোধিত হয়ে যাচ্ছে। এটি একটি ত্রিমুখী মডেল যেখানে ম্যাগাজিন কোম্পানি বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে পাঠকদের বিক্রি করছে তাদের পণ্যের সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে।<br />
<br />
গিফ্ট ইকোনমি বা দানের অর্থনীতিতে এই ভর্তুকির পরিমাণ আরও সুক্ষ্ণ। আপনারা যে সচলায়তনে ব্লগ করেন -– যদিও ধরুন এখানে বিজ্ঞাপনের কারবার নেই, এর মানে এই নয় যে পাঠক আপনার ব্লগ পড়লে কোন মূল্যের স্থানান্তর হয় না। প্রতিটি পাঠক তার সময় ব্যয় করে আপনার ব্লগ পড়লে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়ে - এবং এর পরিমাপযোগ্য অর্থনৈতিক মূল্য না থাকলেও অবশ্যই ধনাত্মক (বা ঋণাত্মক) মূল্য আছে। সচল লিলেনদার ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রচুর বন্ধু লাইক মারলেন এবং পরবর্তী বইমেলায় তিনি এই জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে একটি বই বের করার সাহস পেলেন। তিনি অবশ্যই ব্যতিক্রম - কারণ অনেকেরই জনপ্রিয়তা ও অর্থ উপার্জন করা হয় না - এটি অবশ্য সিস্টেমের ব্যর্থতা নয়, তারা হয়ত চান না বা পারেন না।<br />
<br />
<a href="http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/0b/Paulo_Coelho_nrkbeta.jpg/800px-Paulo_Coelho_nrkbeta.jpg" rel="lightbox[post-35042]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/0b/Paulo_Coelho_nrkbeta.jpg/800px-Paulo_Coelho_nrkbeta.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">পাওলো কোয়েলহো, ছবি <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Paolo_Coelho" target="_blank">উইকিমিডিয়া কমন্সের</a> সৌজন্যে</span><br />
<br />
ব্রাজিলের লেখক <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Paolo_Coelho" target="_blank">পাওলো কোয়েলহো</a> তার উপন্যাস ও অন্যান্য লেখা ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিনামূল্যে পাঠকদের দেবার পক্ষপাতি। তার অনেক উপন্যাসের পুরোটা বা কিছু অধ্যায় তিনি <a class="bb-url" href="http://paulocoelhoblog.com/" target="_blank">তার ব্লগে</a> নিয়মিত তুলে দেন এবং পাঠকদের সাথে সে নিয়ে আলোচনায় মত্ত হন। কপিরাইটের সাধারণ ধারণা যে পাইরেসী লেখকের আয় কমায় - তার ক্ষেত্রে খাটে নি। তার একটি উপন্যাসের রাশিয়ান সংস্করণ একজন পাঠক ইন্টারনেটে তুলে দেয়। সেই উপন্যাস জনপ্রিয় হওয়ায় পরবর্তী ৩ বছরে তার সেই উপন্যাসের বিভিন্ন ভাষার সংস্করণ ১০ লাখের বেশি বিক্রি হয়। অর্থাৎ এইখানে বিনামূল্যের অর্থনীতির নতুন এক মাত্রা তৈরি হচ্ছে।<br />
<br />
দানের অর্থনীতির আরেকটি উদাহরণ - আপনি গুগলে যখনই কোন কিছু সার্চ করেন আপনি তাদের বিজ্ঞাপন নিশানা করার মডেলকে উন্নত করার কাজে লাগেন, অর্থাৎ আপনার নিজের দরকারের একটি সার্চকে গুগুল তার লাভের জন্যে কাজে লাগায়। ফলে বিজ্ঞাপনদাতারা আরও আকর্ষিত হয় গুগলে বিজ্ঞাপন দিতে। আপনি হয়ত জানেনও না যে আপনি একটি বিনে পয়সার সেবা ব্যবহার করলেন আসলে আপনারই শ্রমের বিনিময়ে।<br />
<br />
ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট ফ্রেড উইলসনের নামকরণকৃত <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Freemium" target="_blank">ফ্রিমিয়াম</a> মডেলটি ব্যবহার করা হয় সফ্টওয়্যারের ক্ষেত্রে। ফ্লিকারের প্রিমিয়াম ভার্সনের মূল্য বছরে ২৫ ডলার। দেখা গেছে একটি গতানুগতিক অনলাইন সাইটের ক্ষেত্রে শতকরা ৫% প্রিমিয়াম ভোক্তা বাকী ৯৫% বিনামূল্যের ভোক্তার খরচকে বহন করে। এখানে তারা সেটা পারে কারণ এই ৯৫% ভোক্তাকে সেবা দেওয়ার প্রান্তিক খরচ খুবই কম – প্রায় শুণ্যের কাছাকাছি - কারন তাদের পরিকাঠামো মূলত প্রিমিয়াম ভোক্তাদের সেবার জন্যে নিবেদিত ,– অন্যান্যরা বাই প্রডাক্ট। ফ্লিকার সব ভোক্তাদের উপর ফি ধার্য করে না - কারণ তাহলে নতুন কেউ আসবে না এই সেবা নিতে। ফলে তাদের মধ্য থেকে প্রিমিয়াম গ্রাহক হবার সম্ভাবনা কমে যাবে। এ ছাড়াও তাদের নানা রকম আয়ের উৎস আছে যার মাধ্যমে অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো চলতে পারে ও লাভের মুখ দেখে।<br />
<br />
<br />
<a href="http://farm4.static.flickr.com/3093/2765981920_61f81eb8be.jpg" rel="lightbox[post-35042]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://farm4.static.flickr.com/3093/2765981920_61f81eb8be.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">ছবি ফ্লিকার থেকে <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/daviderickson/2765981920/" target="_blank">ডেভিড এরিকসন</a> এর সৌজন্যে, সিসি বাই-এনসি লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত </span><br />
<br />
আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত দুটি মডেলের কথা আলোচনা করলাম –বিনে পয়সার পণ্যের – কিছু অর্থমূল্য বা শূণ্য অর্থমূল্য। কিন্তু তৃতীয় আরেকটি মডেল আছে - তা হচ্ছে ঋণাত্মক মূল্য – বা পণ্য ব্যবহারের জন্যে টাকা পাওয়া। ক্যাশব্যাক বা গিফট ভাউচার এরকম মডেলের উদাহরণ। যদিও এগুলো আসলে এক ধরণের মূল্য ছাড়, ভোক্তাদের বোঝানো হয় যে তারা টাকা সত্যিই ফেরত পাচ্ছে।<br />
<br />
এখন আসা যাক ফ্রি পণ্যের অসুবিধার কথা। মাগনা পাইলে মানুষ আলকাতরাও খায় এই প্রবাদবাক্য সবক্ষেত্রেই খাটে। তবে আসল কথা হচ্ছে বিনামূল্যের পণ্যের প্রতি মানুষের সাধারণত: অবজ্ঞা থাকে। আমি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করার পর আমাকে একটি সাইকেল কিনে দেয়া হয়েছিল। কষ্টের প্রতিদান হিসেবে প্রাপ্ত বলে সেই সাইকেল আমি খুব যত্নের সাথে চালাতাম। অথচ আমার ছোট ভাই নটরডেমে ভর্তি হবার পর কলেজে সেটি বেখেয়ালে হারিয়ে ফেলে - কারণ তার সেই টান ছিল না সাইকেলটির প্রতি। কাজেই কোন পণ্যের যদি খুব সামান্য মূল্যও থাকে বা ব্যবহারের কঠিন শর্ত থাকে তাহলে তা ব্যবহারে দায়িত্বশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়।<br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">গুগলের ফ্রি পণ্যের সাম্রাজ্য</span><br />
<br />
গুগলের সাম্রাজ্য অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ফ্রি পণ্যের ক্ষেত্রে। বর্তমানে গুগলের রয়েছে ১০০টিরও বেশী পণ্য এবং তাদের বেশীরভাগই ফ্রি - সত্যিই কোন লুকানো খরচ নেই। এবং এই দিয়েই তাদের সাম্রাজ্য গড়া হয়েছে। তারা তাদের সার্চ ইঞ্জিন আর কিছু সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে এত পয়সা আয় করে যে তারা সত্যিই অন্য সব সেবা বিনামূল্যে দিতে পারে যেগুলো বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের আকর্ষণ করে রাখে। এবং ভোক্তা বাড়ার সাথে সাথে তাদের আয় এবং সেবার মানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে নতুন নতুন ধারণা বাজারে ছাড়া এটা না ভেবেই যে সেটা কি বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে কি না। গুগলের সাফল্যের ধারাবাহিকতা এখানে দেখা যাক:<br />
<br />
১৯৯৯-২০০১ - সার্চ ইঞ্জিনকে আরও কার্যকরী করায় সক্ষম<br />
২০০১-২০০৩ - এডসেন্সের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দাতাদের পছন্দ মত বিজ্ঞাপন তৈরি ও স্থাপনার সুযোগ করে দেয়া এবং সবচেয়ে ভাল যায়গার জন্যে একে অপরের মধ্যে প্রতিযোগিতা করা।<br />
২০০৩ - বর্তমান পর্যন্ত - অনেক ধরণের সেবা তৈরি করা<br />
<br />
<a href="http://farm1.static.flickr.com/172/433336499_6dbedef371.jpg" rel="lightbox[post-35042]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://farm1.static.flickr.com/172/433336499_6dbedef371.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">ছবি ফ্লিকার থেকে <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/alainbachellier/433336499/" target="_blank">অ্যালাঁ বাখেলিয়ের</a> এর সৌজন্যে। সিসি <a class="bb-url" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/2.0/deed.en" target="_blank">বাই-এনসি-এনডি</a>।</span><br />
<br />
১০ বছরের মাথায় আজকে গুগল ২০ বিলিয়ন ডলার কোম্পানি এবং এর সবকিছু ফ্রি পণ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। গুগল কিন্তু থেমে নেই - তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে ডাটা সেন্টার তৈরি করছে তাদের সেবার গতি বাড়ানোর জন্যে ও মান উন্নয়নের জন্যে। তাদের পঞ্চাশটির কাছাকাছি ডাটা সেন্টারে এখন আছে ৫ লাখেরও বেশী সার্ভার - যা একসময় তাদের অন্য প্রতিযোগীর কাছ থেকে অনেক তফাৎ তৈরি করবে। এতে যা হচ্ছে তা হচ্ছে নতুন নতুন ব্যবহারকারী বাড়ছে এবং মাথাপ্রতি সেবার খরচ কমে যাচ্ছে। ফলে তারা আরও বেশী বিনামূল্যের সেবা দিতে পারছে।<br />
<br />
গুগলের ডাইরেক্টরি সার্ভিস <a class="bb-url" href="http://www.google.com/goog411/index.html" target="_blank">গুগ ৪১১</a> এর কথাই ধরুন। যেখানে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী এওএল এই সেবার জন্যে টাকা নেয় গুগল তা দেয় বিনে পয়সায়। কিভাবে? প্রতিবার যখন ভোক্তারা তথ্য চেয়ে গুগ ৪১১কে ফোন করে তারা রেখে যায় গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট - তাদের কণ্ঠ - যা বিভিন্ন অ্যাক্সেন্টের ও গতির। এই তথ্য কাজে লাগিয়ে গুগল তাদের ভয়েস রেকগনিশন সার্চ ইঞ্জিন সফটওয়্যার উন্নত করার চেষ্টায় রত আছে। বিনামূল্যে এই সেবা না দিলে এইসব রিসার্চ কন্টেন্ট তাদের পয়সা দিয়ে কিনতে হত।<br />
<br />
গুগলের সুবিধা হচ্ছে এর বিভিন্ন নতুন ধারণা যদি সফল নাও হয় এর ক্ষতি নেই। ব্যর্থ উদ্যোগ যেমন গুগল ওয়েভ, অর্কুট ইত্যাদির ও লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী আছে। তাই নতুন পণ্য বাজারে ছাড়ার আগে এরা প্রচুর ব্যবহারকারীকে বেটা টেস্টিংয়ের জন্যে নিয়োগ করতে পারে (বিনে পয়সায়) এবং ফল আশানুরুপ না হলে সেটি বাদ দিয়ে নতুন কোন উদ্যোগ শুরু করতে পারে।<br />
<br />
দ্যা বিগ সুইচের লেখক নিকোলাস কার বলেছেন “গুগল চায় তথ্য প্রবাহ হোক বিনামূল্যে। কারণ যখন তথ্য পাবার মূল্য কমে যাবে এটি আরও বেশী পরিমানে আয়ের উৎস হবে তাদের জন্যে”।<br />
<br />
ওয়ালমার্ট এবং এইচএনএমের মত ডিসকাউন্ট স্টোরের চাপে পিষ্ট ছোট ছোট স্টাইল বুটিকগুলো বর্তমানে নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি এবং অনেক ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যৎে গুগল সাম্রাজ্যের ফ্রির এই যথেচ্ছাচার মনোপলি ঠেকাতে সেরকম শৈল্পিক বুটিক বা ছোট নতুন ধারণার ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান যায়গা করে নিতে পারবে কি না সেটি দেখার বিষয়।<br />
<br />
<span style="font-style: italic;">পরবর্তী পর্বে থাকবে ফ্রি সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবকদের কাজের মূল্য নিশ্চিত করা (ওপেন সোর্স, কপিরাইট/কপিলেফ্ট) ইত্যাদি</span><br />
<br />
<span style="font-style: italic;">প্রথম প্রকাশ: <a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/35042">সচলায়তন </a></span>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com4tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-60366531642442705072010-09-10T10:46:00.002+06:002010-09-13T10:51:07.784+06:00ফ্রি মানে মাগনা নয় - পর্ব দুই<a class="bb-url" href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/34943" target="_blank">ফ্রি মানে মাগনা নয় - পর্ব এক</a><br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">পর্ব: দুই</span><br />
<br />
আগের পর্বে আলাপ করেছিলাম একবিংশ শতাব্দীর ফ্রি বা বিনে পয়সার ডিজিটাল পণ্যের ধারণা সম্পর্কে যা আমাদের ভবিষ্যতকে বদলে দেবে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই হয়ত বলবে যাহ্ এটি কোন ব্যাপার হলো? আমরা তো দেখে আসছি ইয়াহু, জিমেইল ইত্যাদি বিনে পয়সায়ই পাওয়া যায়। আমরা ৫০ টাকায়ই সফ্টওয়ারের সিডি কিনতে পাচ্ছি - এ আবার নতুন কি? মাইক্রসফ্ট অফিস, ফটোশপ, বিজয় ইত্যাদি প্রপাইটরি সফ্টওয়্যার হলে কি হবে - এলিফ্যান্ট রোড থেকে কম্পিউটার কেনার সময়তো এগুলো সাথেই এসেছে। ইন্টারনেট থেকে র্যাপিড শেয়ার বা বিট টরেন্ট ব্যবহার করে গান বা মুভি ডাউনলোড করা যায় বিনামূল্যেই। আমার এগুলো সম্পর্কে জেনে কি হবে? - বিনে পয়সায় আর এগুলো পাব না?<br />
<br />
<a href="http://www.freepixels.com/photos/18/med_100206_cr_internet_05_10.jpg" rel="lightbox[post-35001]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://www.freepixels.com/photos/18/med_100206_cr_internet_05_10.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">ছবি: <a class="bb-url" href="http://www.freepixels.com/Abstract_and_Concept/Internet/pic1897.html" target="_blank">ফ্রি পিক্সেলসের</a> সৌজন্যে</span><br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">ফ্রি গেলানোর সংস্কৃতি</span>: <br />
<br />
গবেষণায় দেখা গেছে যখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ে তখন তারা পণ্যের সুবিধাগুলোর দিকে বেশী মনোযোগী হয়। ইন্টারনেট থেকে আপনার পছন্দের গান বিনামূল্যে ডাউনলোড করা সম্ভব, যদিও আপনাকে এর জন্যে প্রচুর খুঁজতে হবে, র্যাপিড শেয়ার থেকে আধঘন্টায় একটি করে ডাউনলোড করতে পারবেন – ইত্যাদি নানা বাধা পেরিয়ে যেই এমপিথ্রি ফরম্যাটের গানটি পেলেন দেখলেন যে সেটার রেকর্ডিং ভাল না (সাউন্ড কম) এবং অ্যালবাম ইনফর্মেশনে ভুল আছে। আপনি যদি চাকুরিবিহীন শিক্ষার্থী হন তাহলে হয়ত আপনার এই এক-দুই ঘন্টার কষ্ট বেশ অ্যডভেঞ্চারের মতই মনে হবে। আপনার কাছে মাগনা পণ্য বেশী আকর্ষণীয় – কারণ আপনার সময় আছে অনেক এবং ক্রয়ক্ষমতা কম। কিন্তু এখন আই টিউন্স থেকে ৯৯ সেন্টে (ধরুন ৭০ টাকা) একটি গান ডাউনলোড করা যায় - কোয়ালিটি ভাল। আপনার যখন ক্রয়ক্ষমতা হবে এবং সময় থাকবে কম, তখন আপনি চিন্তা করবেন এই এক দুই ঘন্টা ব্যয় করলে ন্যূনতম মজুরী কত আপনাকে ছাড় দিতে হতে পারে এবং তার থেকে ৯৯ সেন্ট কম কি না। এবং তখন নিশ্চয়ই আপনি কোয়ালিটির উপর গুরুত্ব দেবেন।<br />
<br />
এই ব্যাপারে একটি প্রত্যক্ষ উদাহরণ দেই। ১৯৯২ সালে মাইক্রোসফট চীনের বাজারে প্রবেশ করে এবং পাইরেসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। কিন্তু চাইনিজ সফ্টওয়্যার নকলবাজদের কাছে তাদের সিরিয়াল নম্বর, হলোগ্রাম, ওইএম কপি ইত্যাদি নানা বাধাদানকারী প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। ১৯৯৮ সালে বিল গেটস ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন: "যদিও চীনে প্রতিবছরে ৩০ লাখ পিসি বিক্রি হয়, তারা আমাদের আসল সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে না। অবশ্য তারা একদিন ব্যবহার করবে। তাই তারা এখন চুরি করতে চাইলে আমরা চুরি করতে দেব। তাহলে তারা আমাদের সফ্টওয়্যারেই মজে থাকবে। আমরা আগামী দশকের কোন এক সময়ে হয়ত কোন এক উপায়ে তাদের কাছ থেকে মূল্য আদায় করতে পারব।” এমনটি হয়ত মোস্তফা জব্বার তার বিজয় নিয়েও ভাবেন, তাই পাইরেটেড বিজয় সম্পর্কে কিছু না বলে অভ্রের পেছনে লাগেন।<br />
<br />
এই তো সেদিন মাইক্রোসফ্ট প্রথমবারের মত এক চাইনিজ কোম্পানির বিরুদ্ধে <a class="bb-url" href="http://english.peopledaily.com.cn/90001/90778/90858/90864/6976701.html" target="_blank">পাইরেসীর মামলা করে জিতল</a>। তাদের প্রচেষ্টা থাকবে চায়ের নেশা করিয়ে চা বিক্রি করে টাকা কামানো। চীন এখন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। কম্পিউটারের দাম কমেছে - অনেকেই নেটবুক কিনছে ২৫০ ডলারের মধ্যে - আর মাইক্রোসফ্ট? তাদের অপারেটিং সিস্টেমের দাম পাঁচগুণ কমিয়ে ২০ ডলারে বিক্রি করছে। চীনারা তো পাইরেটেড উইন্ডোজেই এতদিন মজে ছিল –কাজেই এই বিশ ডলার খরচ তাদের কাছে কোন ব্যাপার না। পাইরেসী নির্ভরতা তৈরি করেছে এতদিন - ফলে এখন মাইক্রোসফটের অনেক বাজার বেড়েছে - কারন চীনের লোক কম নয় - ইকনমি অফ স্কেলের সুবিধা নেয়া যায় এখানে। আমাদের দেশের স্কুলগুলোতে মাইক্রোসফ্ট ১০০০০ কম্পিউটার দেবে বলেছিল – এও সেই ডিজিটাল ঔপনিবেশিকতারই পরিকল্পনা।<br />
<br />
শুধু ডিজিটাল পণ্যে নয়, চীন নকল করে না এমন কোন জিনিষ নেই। যেহেতু সস্তায় পাওয়া যায় তাই তারা ব্র্যাণ্ডের পণ্যই ব্যবহার করে (যেমন আমরা লিভাইসের জিন্স পাই এলিফ্যান্ট রোড থেকে)। কিন্তু বর্তমানে চীনাদের আয় বাড়ার ফলে অনেক নির্বাহী এখন সত্যিকারের ব্র্যান্ডের পণ্য কিনছেন। কেউ কেউ কয়েক মাসের বেতন একটি হাতব্যাগ বা স্যুটের পেছনে খরচ করে। ফলে নামী-দামী ব্র্যান্ডের বাজার কিন্তু কমছে না। ফ্যাশন জগতে সব সময় নতুন সীজনের পণ্যকে তুলে ধরা হয়। পুরোনো বছরের পণ্যের প্রতি লোকজনের আগ্রহ কমে যখন এটি পাইরেটেড হয়ে যায় বা কম মূল্যে ব্যাপক উৎপাদন করে বাজারে ছাড়া হয়- অর্থাৎ আর এক্সক্লুসিভ থাকে না। ফলে যাদের টাকা আছে তারা নতুন মডেলের কাপড়ের দিকে ছোটে - এটাও বাণিজ্যেরই একটি মডেল।<br />
<br />
চীনের মত যখন আমাদের দেশেও যখন লোকের আয় বাড়বে তখন আমরাও পয়সা দিয়েই এক্সক্লুসিভ সফ্টওয়্যার বা পণ্য কিনব।<br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">ফ্রি অর্থনৈতিক মডেল:</span><br />
<br />
ডিজিটাল জগৎের নতুন এক ধারা তৈরি হচ্ছে যা বলছে যে কোন সফ্টওয়্যার তৈরি হলে এটি কোন এক পর্যায়ে এসে বিনে পয়সায় হয়ে যাবে, এর প্রান্তিক খরচ এবং বিক্রয়মূল্য উভয় ক্ষেত্রেই। এটি কোটি কোটি টাকার একটি অর্থনীতি তৈরি করছে - এবং এই প্রথম যার প্রাথমিক মূল্য হচ্ছে শূণ্য।<br />
<br />
<br />
<a href="http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/b/b3/Etech05_Chris.jpg/430px-Etech05_Chris.jpg" rel="lightbox[post-35001]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/b/b3/Etech05_Chris.jpg/430px-Etech05_Chris.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a><br />
<span style="font-style: italic;">লেখক <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Chris_Anderson_%28writer%29" target="_blank">ক্রিস অ্যান্ডারসন</a>। ছবি <a class="bb-url" href="http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/b/b3/Etech05_Chris.jpg/430px-Etech05_Chris.jpg" target="_blank"> ছবি উইকিমিডিয়া কমন্সের সৌজন্যে</a></span><br />
<br />
ক্রিস এন্ডারসনের মতে অ্যাটম অর্থনীতি - অর্থাৎ আমাদের চারপাশের ভোগ্যপণ্যের মূল্য প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে। অথচ অনলাইন জগৎ নিয়ে গঠিত বিটস অর্থনীতিতে জিনিষের মূল্য প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। বিংশ শতাব্দী ছিল মূলত: একটি অ্যাটম অর্থনীতি এবং একবিংশ শতাব্দিতে বিটস অর্থনীতি গেড়ে বসছে। <br />
অ্যাটম অর্থনীতিতে সব বিনামূল্যের পণ্যই পাওয়া যায় অন্য পণ্যের জন্যে ক্রয়মূল্য প্রদান করে সরাসরি বা অন্য কোন ভাবে। অথচ বিটস অর্থনীতিতে পণ্য সত্যিকারের ফ্রি হতে পারে, যেখানে ভোক্তা ও ক্রেতার মধ্যে টাকার ব্যাপারটি উল্লেখিত হয় না। অ্যাটম অর্থনীতিতে মানুষরা সন্দেহপ্রবণ থাকে যে কোথায় লুকানো খরচ আছে। ঐদিকে বিটস অর্থনীতিতে থাকে একটি বিশ্বাসের সম্পর্ক যে কখনও লুকানো খরচ থাকবে না। অনেক শোনা গিয়েছিল যে হটমেইল ব্যবহার আর বিনামূল্যে থাকবে না - তবে সেরকম কিছু হয় নি এখনও – তাই ধরে নেয়া যায় যে এটি বিনামূল্য থাকবে।<br />
<br />
অনেক নতুন ব্যান্ড এখন তাদের গান বিনামূল্যে ইন্টারনেটে প্রকাশ করে। তাদের উদ্দেশ্য গানকে অনেক শ্রোতার কাছে<br />
পৌঁছে দেয়া এবং অনেক ভক্ত তৈরি করা। জনপ্রিয়তা পেলে তারা পরে ঠিকই আয় করতে পারে রেকর্ড লেবেল বা কনসার্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অল্টারনেটিভ রক ব্যান্ড রেডিওহেড তাদের ৭ম অ্যালবাম '<a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/In_Rainbows" target="_blank">ইন রেইনবোজ</a>' এর ডিজিটাল ডাউনলোড বের করে এক অভিনব শর্তে যে এর মূল্য তাদের ভক্ত শ্রোতারাই ঠিক করবেন। অর্থাৎ আপনার পয়সা না থাকলে বিনামূল্যেই পেতে পারেন। মূল ব্যাপারটি হচ্ছে ডিজিটাল পণ্যের বিপণন ও সরবরাহ (প্যাকেজিং) খরচ শূন্যের কোঠায় কাজেই বিনামূল্যে পণ্য সরবরাহে খরচ ন্যূনতম। তাদের ব্যান্ড ম্যানেজার জানায় যে যদিও কেউ কেউ বিনামূল্য বা এক পেনিতে এটি কিনেছে - বেশীর ভাগই ক্রয় ক্ষমতাসহ ক্রেতা এবং তারা বাজার মূল্যে পরিশোধ করেছে।<br />
<br />
<a href="http://www.freepixels.com/photos/20/med_141205_trdp_3500.jpg" rel="lightbox[post-35001]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://www.freepixels.com/photos/20/med_141205_trdp_3500.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a><span style="font-style: italic;">ছবি: <a class="bb-url" href="http://www.freepixels.com/Objects/Computers_and_Technology/pic1023.html" target="_blank">ফ্রি পিক্সেলসের</a> সৌজন্যে</span><br />
<br />
এই ফ্রিকোনমিক্স বা বিনামূল্যের সংস্কৃতি বেড়ে উঠেছে ডিজিটাল যুগের প্রযুক্তির কল্যাণে। <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Moores_Law" target="_blank">মুর'স ল</a> অনুযায়ী প্রতি দুই বছরে কম্পিউটারের প্রসেসিং পাওয়ারের উৎপাদনমূল্য কমে আসে অর্ধেক দামে এবং ব্যান্ডউইদথ আর হার্ডডিস্কের ক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদনমূল্য কমছে আরও দ্রুত হারে। ইন্টারনেটের পণ্যগুলোর খরচের ব্যাপারে এই সবগুলোর সমষ্টি কাজ করছে অর্থাৎ এর মূল্যহ্রাস হচ্ছে বছরে ৫০% হারে - সহজ করে বললে - ইউটিউবের একটি ভিডিও প্রচার করতে আজকে তাদের যা খরচ হচ্ছে আগামী বছর এর অর্ধেক খরচ হবে। এই দাম কমার ধারায় সবারই একই লক্ষ্য প্রান্তিক উৎপাদন ও ক্রয়মূল্য শুণ্যতে নিয়ে যাওয়া। ফলে ইউটিউব বিনা পয়সায় সেবা রাখতে উৎসাহিত হচ্ছে এবং বেশী ব্যবহারকারী যোগ দিয়ে কোম্পানির নতুন আয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে।<br />
<br />
আজকালকার অভিনব সব অনলাইনের ব্যবসায়িক ধারণার মধ্যে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে বিনামূল্যের পণ্যের মাধ্যমে আয়ের চেষ্টা করা। আপনি সত্যি বিনামূল্যে পণ্য বিক্রি করে আয় করতে পারেন। অনেক সময় আপনি যা বিলিয়ে দিচ্ছেন তার বিনিময়ে আরও অনেক বেশী পাচ্ছেন। কেন এমন হয়?<br />
<br />
মুফতে জিনিষের ধারণাটি পুরোনো, কিন্তু এটি এমনভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে যে আমাদেরকে মানুষের মনস্তত্ত্ব ও আচার ব্যবহার ও অর্থনৈতিক প্রণোদনার উপর কিছু মৌলিক ধারণা সম্পর্কে পুনরায় ভাবাচ্ছে। মুস্তফা জব্বারের বিজয় সফটওয়্যারের মত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্যে এই ব্যাপারটি বোঝা আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারন তাদের ইতিমধ্যে এই সব বিনামূল্যের পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে বা ভবিষ্যতে হবে।<br />
<br />
ফ্রির যে বিভিন্ন রকম নমুনা আমরা চারিদিকে দেখতে পাই তা থেকে এর মানে অনেক রকম হতে পারে: <br />
<ul><li> ফ্রি মডেল ১ - একটি কিনলে একটি ফ্রি মানে হচ্ছে ৫০% মূল্যহ্রাস, একটি পণ্যের সাথে আরেকটি পণ্য ফ্রি হচ্ছে একদিক দিয়ে মূল্যহ্রাস এবং অন্যদিক দিয়ে বিপণন – অর্থাৎ আদতে এগুলো বিনামূল্যের নয়।</li>
</ul><ul><li>ফ্রি মডেল ২ - <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Freemium" target="_blank">ফ্রিমিয়াম মডেল</a> - কিছু সফটওয়্যার আছে - মৌলিক বা ট্রায়াল সংস্করণগুলো ফ্রি থাকে - কিন্তু কিছুদিন পরে কিনতে হয় বা সব ফিচার ব্যবহার করতে গেলে টাকা দিতে হয় – এগুলোকে ঠিক ফ্রি বলা যায় না।</li>
<li>ফ্রি মডেল ৩ - আপনি বিনামূল্যে সেবা ব্যবহার করলেন - এবং সাইটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেটির খরচ বহন করলেন - যত বেশী ব্যবহারকারী - তত বেশী বিজ্ঞাপন থেকে আয় এবং আরও ব্যাপক সেবা দান। তারপরে রয়েছে বিজ্ঞাপনের প্রচার মাধ্যম। অনেকদিন ধরেই বিজ্ঞাপনের ভর্তুকি টিভি অনুষ্ঠান বা সংবাদপত্রকে বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে সাহায্য করছে। এই মডেলের প্রথম প্রয়োগ হয়েছে শত বছর আগে - কাজেই এটাকেও নতুন ধারণা বলা যাবে না।</li>
</ul><ul><li>ফ্রি মডেল ৪ - <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Gift_economy" target="_blank">গিফট ইকোনমি (দানের অর্থনীতি)</a> - একটি সেবা প্রদান করে মনযোগ আকর্ষণ এবং অন্যভাবে খরচের টাকা যোগানো - এ বিষয়ে পরের পর্বে বিস্তারিত বলব। </li>
</ul><a href="http://farm1.static.flickr.com/133/352600845_a9ac554e57.jpg" rel="lightbox[post-35001]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://farm1.static.flickr.com/133/352600845_a9ac554e57.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a> <span style="font-style: italic;">ছবি: ফ্লিকার থেকে <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/enixii/352600845/" target="_blank">এনিক্সির</a> সৌজন্যে। সিসি - বাই লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত</span><br />
<br />
তাহলে নতুন ধারণাগুলো কি যেগুলো সত্যিই বিনা মূল্যে পাওয়া যায়? ফ্লিকারের কথাই ধরুন –- বেশীর ভাগ ব্যবহারকারীদের জন্যেই এ ছবির সাইটটি ফ্রি (পেশাজীবি সংস্করণ ছাড়া) এবং এরা বিজ্ঞাপনও নেয় না। গুগলের সেবাগুলোরও বেশীরভাগই বিনামূল্যে - এবং বিজ্ঞাপন বিহীন বা তারা তাদের বিজ্ঞাপন মডেল একটি নতুন ধারণার উপরে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এর পরে রয়েছে ব্যবহারকারী দের সাহায্যে (ক্রাউডসোর্সিং) প্রতিষ্ঠিত উইকিপিডিয়া এবং ব্লগ প্লাটফর্মগুলো। এদের সাফল্যের পেছনে রয়েছে মূল্যের বিনিময়ে পরিমাপযোগ্য নয় এমন সব প্রণোদনা: জনপ্রিয়তা, বিশ্বস্ততা, বাক স্বাধীনতার প্রকাশ ইত্যাদি।<br />
<br />
এই যেসব ফ্রিকোনমিক্স মডেলের কথা বললাম সবগুলোরই মধ্যে মিলে যায় একটি বিষয় –যে তারা অর্থকে স্থানান্তরিত করে পণ্য থেকে পণ্যে, ব্যবহারকারী থেকে ব্যবহারকারীর কাছে, বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎে - অথবা ভোক্তা বাজার থেকে অর্থবিহীন প্রণোদনার বাজারে । অর্থনীতিবিদরা একে বলে ক্রস সাবসিডিজ।<br />
<br />
ক্রস সাবসিডিজের মূল বিষয় হচ্ছে যে আসলেই কোন ফ্রি লাঞ্চ নেই। আপনাকে যেই সাবসিডিজ দেয়া হচ্ছে সেটা অবশ্যই অন্য কারও কাছ থেকে আদায় করা হবে যারা বেশী মূল্য দিতে প্রস্তুত। আমি রায়ান এয়ারে বার্লিন থেকে রোমে গিয়েছি ৪০ ইউরো রিটার্ন টিকিটে (মূল টিকেট ছিল ১ ইউরো যাওয়া, ১০ ইউরো আসা এবং বাকিটা ট্যাক্স এবং অন্যান্য - চোখ ঘুরে যাবার মত ভাড়া, কারণ বাড়ী থেকে বার্লিন শোনেফেল্ড বিমান বন্দরে ট্যাক্সি করে যেতে লাগে ৩৫ ইউরো)। কেবিন লাগেজ ছাড়া আলাদা চেক ইন লাগেজ নিলে ২০ ইউরো বেশি। প্লেনে খাওয়া দাওয়া করলে ১৫ – ২০ ইউরো। বার্লিন থেকে রোমের প্রতিটি সিটের খরচ নাকি ৭০ ইউরো রিটার্ন অর্থাৎ রায়ান এয়ারের আদতে লস নেই। মাস দুয়েক আগে টিকেট কিনেছে এমন বিশ থেকে পঞ্চাশজন হয়ত এমন কম ভাড়ায় ভ্রমণ করতে পেরেছে। যারা ১ দিন আগে টিকেট কিনেছে তাদের জন্যে এক মুখী ভাড়া ১২০ ইউরো। অর্থাৎ যার প্রয়োজন আছে সে ছয়গুণ বেশী দিচ্ছে - এই হচ্ছে ক্রস সাবসিডিজের মডেল।<br />
<br />
পরবর্তী পর্বে থাকছে: <br />
<br />
<i>গিফট ইকোনমি ও গুগলের ডিজিটাল পণ্য বাণিজ্য</i><br />
<br />
<i>প্রথম প্রকাশ: <a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/35001">সচলায়তন </a></i>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-11357011959722585062010-09-08T10:42:00.001+06:002010-09-13T10:45:05.800+06:00ফ্রি মানে মাগনা নয় - পর্ব একনব্বুইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় বাংলাদেশে ইন্টারনেট যখন এল তখন এটি ছিল খুবই একটি খরুচে প্রযুক্তি। মাইক্রোসফ্ট অফিস/উইন্ডোজ সহ দামী কম্পিউটারের সাথে আট হাজার টাকা দিয়ে মডেম কেন, ইমেইলের জন্যে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে আইএসপির ডায়ালআপ অ্যাকাউন্ট খোল - ইত্যাদি - এর সাথে সাথে ফোন বিল ও আইএসপির মিনিট প্রতি চার্জের ব্যাপারটি তো ছিলই। কিন্তু আজকের কথা চিন্তা করুন, ফোনেই থাকে মডেম আর বাংলাদেশে ৩০০ টাকা দিলে মোবাইল ইন্টারনেটের বেসিক প্যাকেজ পাওয়া যায়। ইমেইলের জন্যে তো কোন টাকা দিতে হয় না, জিমেইল হটমেইল ইত্যাদি প্রচুর স্টোরেজসহ ব্যবহার করা যায় মাগনা। লিনাক্স তো আছেই, সফ্টওয়্যারের মধ্যে ওপেন সোর্সের কল্যাণে অভ্র, ওয়ার্ড প্রসেসর, স্প্রেডশীট ইত্যাদি মায় অ্যান্টিভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে বিনা মূল্যে - এবং পাইরেটেড সফ্টওয়্যার ব্যবহার করার গ্লানিটুকু নেই মনে।<br />
<br />
শুধু তাই নয় আজকাল ফেসবুক, অর্কুট ইত্যাদি সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট, মাইক্রোব্লগিং এবং ব্লগিং সাইট সবই বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। অনেক বাংলা প্লাটফর্ম বের হয়েছে যার তৈরির জন্যে বেশ অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় হয় বা হচ্ছে কিন্তু তাদের অনেকেই কোন বিজ্ঞাপন বা অন্য কোন ভাবে আয়ের উপায় রাখেনি।<br />
<br />
<a href="http://farm4.static.flickr.com/3003/2474783234_a8c5555d29.jpg" rel="lightbox[post-34943]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://farm4.static.flickr.com/3003/2474783234_a8c5555d29.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a><br />
আমাদের মনে তাই মাঝে মধ্যেই উঁকি দেয় যে এই নতুন মাগনা সংস্কৃতি, মাগনা অর্থনীতির স্বরূপটি কি? কিভাবে সম্ভব হচ্ছে বিনেপয়সায় এত সব সেবা পাওয়া যেখানে পূর্বে এত খরচ করতে হত? <br />
<br />
এই বিষয়টি নিয়ে প্রথম পড়ি ওয়াইয়ার্ড ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Chris_Anderson_%28writer%29" target="_blank">ক্রিস অ্যান্ডারসনের</a> একটি সম্পাদকীয়তে। তিনি এ নিয়ে 'ফ্রি' নামে একটি বইও প্রকাশ করেন গত বছর। সেটির অডিওবুকটি ডাউনলোড করে এবং এ বিষয়ে আরও কিছু পড়াশোনা করার পর মনে হল এ নিয়ে কিছু লিখলে মন্দ হয় না। পড়ার সুবিধার্থে এ সিরিজটি বেশ কয়েক পর্ব নেবে।<br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">ফ্রির একাল এবং সেকাল</span><br />
<br />
ফ্রি বা বিনেপয়সায় কথাটির মানে আমরা সবাই জানি কিন্তু এই শব্দটির যথেচ্ছা ব্যবহার মাঝে মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বা রহস্যেরও সৃষ্টি করে। আমাদের বাপ-দাদাদের আমলে কোন কিছু বিনেপয়সায় পাওয়ার মানে একরকম ছিল আর বর্তমান কালে ফ্রির মানে আরেক রকম। এই ব্যাপারটি অনেকেই খেয়াল করে না। আজকালকার দিনে কেউ কোন কিছু বিনেপয়সায় দিয়ে দিলে দেখতে হবে এর সাথে কি কি শর্ত জড়িয়ে থাকতে পারে, আবার হয়ত নাও পারে। ফ্রি লাঞ্চ বলে এমন কিছু নেই এই কথাটির মর্ম পরিবর্তিত হচ্ছে। এখন ফ্রি লাঞ্চ খাওয়ালে হয়ত আপনি দ্বিগুণ ভাবে আপনার টাকা ফেরত পেতে পারেন, এবং অবশ্যই যাকে খাওয়াচ্ছেন তার থেকে না, অন্য কারও কাছ থেকে, অন্য কোনো ভাবে।<br />
<br />
এই ফ্রি পণ্য বিপণন জগতের অংশ হবার পেছনে একটি ইতিহাস রয়েছে। বিংশ শতাব্দিতে শুরুর দিকে কিং জিলেট ডিসপোজেবল দাড়ি কামানোর ব্লেড উদ্ভাবন করলেন এবং তা বাজারজাত করা শুরু করলেন। ১৯০৩ সালে প্রথম বছর তার বিক্রি হল ৫১টি রেজর এবং ১৬৮টি ব্লেড। এতে দমে না গিয়ে কিন্তু পরের দুই দশকে তিনি লক্ষ লক্ষ রেজর এবং ব্লেড বিক্রি করলেন তার নতুন ধারণা কাজে পরিণত করে। কি সেই যুগান্তকারী ধারণা? তিনি নামমাত্র মূল্যে লক্ষ লক্ষ রেজর বিক্রি করলেন –- রেজর বিনামূল্যে দেয়া হতে লাগল অন্যান্য পণ্যের সাথে - যেমন কফি, মশলা ইত্যাদি। ফলে তিনি কয়েকগুণ পরিমাণ ব্লেডের চাহিদা উৎপন্ন করতে পারলেন যা তার কোম্পানিকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে গেল।<br />
এই মডেলটি এখনও সারা বিশ্বে প্রযোজ্য - ফোন ১ ইউরোতে দেয়া হয় দুই বছরের নির্দিষ্ট পরিমাণ ন্যূনতম ব্যবহারের শর্তে যার মাধ্যমে ফোনের দাম উঠে যায়। ভিডিওগেমের কন্সোলের মূল্য কম রাখা হয় এবং পরে ভিডিও গেমের উচ্চ মূল্য তা পুষিয়ে নেয়।<br />
<br />
জিলেটের কল্যাণে এই ধরণের ফ্রি পণ্যের ধারণা মানুষের কাছে আর নতুন নয়। আপনি একটি কিনলে একটি ফ্রি পাবেন - অর্থাৎ শর্ত একটি থাকছেই। কারণ ওই বিনামূল্যের জিনিষটি আরেকটি নতুন পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করে। ফ্রি শব্দটির অনেক প্রভাব আছে ভোক্তার মনস্তত্বের উপরে, এটি নতুন বাজার সৃষ্টি করতে, পুরোনো বাজার সম্প্রসারণে এবং পণ্যের প্রচারে সাহায্য করে। অর্থাৎ আদতে ফ্রি মানে লাভহীন নয়।<br />
<br />
তবে গত দশকে আর এক ধরণের ফ্রি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এই সংস্কৃতির মূল ধারনা বেড়ে উঠেছে একাধিক মূল্যসহ ও মূল্যহীন পণ্যের মধ্যে সম্পৃক্তির ধারনা ছাপিয়ে - অর্থাৎ পণ্যের মূল্য এত কমে গেছে যে সেগুলো সত্যিই বিনেপয়সায় দিয়ে দেওয়া যায় এবং হয়তোবা একটি নতুন পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করা যায়। কী, গোলমেলে লাগছে?<br />
<br />
<a href="http://www.wired.com/images/article/magazine/1603/ff_free_webmail_f.jpg" rel="lightbox[post-34943]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://www.wired.com/images/article/magazine/1603/ff_free_webmail_f.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a><br />
<a class="bb-url" href="http://www.wired.com/techbiz/it/magazine/16-03/ff_free_webmail" target="_blank">চার্ট: স্টিভেন লেকার্ট আর নিকোলাস ফেলটন</a><br />
<br />
এই গুগল সংস্কৃতির কথাই চিন্তা করুন, ডিজিটাল জগৎে আমরা এখন অনেক কিছুই ফ্রি পেতে অভ্যস্ত। মনে আছে বছর তের আগে আইএসএনের ডায়ালআপ কানেকশন নেবার সময় প্রথম ইমেইল অ্যাকাউন্ট হয়েছিল আমার। উচ্চ সংযোগ মূল্য তো ছিলই তখন ফোনের বিল ইন্টারনেট মিলিয়ে প্রচুর খরচ হত সেটি ব্যবহার করতে। এখন বাইরে কোন রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে হয়ত ফ্রি ওয়াইফাই পাওয়া যায় যেটা ব্যবহার করে আমার জিমেইল আর হটমেইলের মেইল চেক করে নেই। দুটোর কোনটির জন্যেই টাকা দিতে হয়নি এখন পর্যন্ত, আবার জিমেইলের জিটক আমেরিকা আর কানাডার ফোন নম্বরে বিনে পয়সায় কথা বলার সুযোগও করে দিল বিনেপয়সায় -– কোথায় রাখি এ আনন্দ! সবই ফ্রি।<br />
<br />
তবে আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে যে গুগল কীভাবে চলে? তার আয়ের উৎস অনলাইন বিজ্ঞাপন এবং আরও নানা কিছু - সে বিষয়ে পরে আসছি - কিন্তু জেনে রাখুন গুগল কিন্তু সরাসরি আপনার কাছে এই বিনেপয়সার সেবার জন্যে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করছে না (তাদের পণ্য আছে ঠিকই – - গুগল প্রিমিয়াম ভার্সন ইত্যাদি)।<br />
<br />
এ অবস্থায় আসতে অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষার মধ্যে যেতে হয়েছে এই অনলাইন ইন্ডাস্ট্রিকে। অনেকদিন মূল্য প্রদান সাপেক্ষে সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থা রাখলেও ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমস তার অনলাইন ভার্সন উন্মুক্ত করে দেয় এবং পাঠকরা এখন বিনে পয়সায় পড়তে পারে। এটাই হচ্ছে বর্তমান বাস্তবতা।<br />
<br />
ক্রিস এন্ডারসন তার ফ্রি নামক বইতে বলেছেন যে একবিংশ শতাব্দীর ফ্রি হচ্ছে নতুন ধরনের ফ্রি, এবং এই ধারণাটি আমাদের ভবিষ্যৎকে বদলে দেবে। বর্তমানের বিনে পয়সার ধারণাটি কোন লুকানো পণ্য বিক্রি করার ধারণা নয় বরং এক পকেট থেকে আরেক পকেটে টাকা স্থানান্তরের একটি উপায় আপনার কাছ থেকে সরাসরি কোন সুবিধা না নিয়ে। এটি একটি পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক মডেল।<br />
<br />
<span style="font-style: italic;">পরবর্তী পর্বে থাকছে ফ্রির অর্থনৈতিক মডেল।</span><br />
<br />
ছবি: <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/marcomolinari_it/2474783234/" target="_blank">মার্কো মলিনারির সৌজন্যে</a>, ক্রিয়েটিভ কমন্স <a class="bb-url" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/2.0/deed.en" target="_blank">লাইসেন্সের আওতায়</a> ব্যবহৃত।Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-9053095330474617652010-07-07T01:56:00.000+06:002010-07-07T01:56:04.001+06:00বন্ধু বিনে<img src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjHsWaAm5iSPk6pQuYqJ1MeC6ywUW-BtnGg5i-B5nwffEJUQ7Zdsme6sTooRD0lrA6-S5p2chNccEGvcNMl93Pg__oUCREsXQGKcnSD0T8tQ4BV6rZtwLpuAUxREB-WgDo4aN8iDQ/s400/DSC07203+%5B640x480%5D.JPG" width="400" height="300" alt="টিএসসি" /><br />
<br />
আমার পাঁচ বছরের প্রবাস জীবনে যে ব্যপারটি বুঝেছি তা হচ্ছে বন্ধুর উপস্থিতির চাইতে তার অনুপস্থিতি বেশি উপলব্ধি করা যায়। আমাদের দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বন্ধু, সহপাঠী বা সহকর্মীর যেরকম একটি স্থান আছে আমাদের জীবনে, জার্মানীতে গিয়ে বুঝলাম যে সেখানকার সমাজ ভিন্ন। দুই মাস একসাথে যাদের সাথে ইন্টার্নশিপ করেছি, কফি ও লান্চের সময় কাটিয়েছি অনেক গল্প করে, ঘুণাক্ষরেও কি ভেবেছি তাদের সাথে কোনও যোগাযোগ থাকবে না পরবর্তীতে? বিদায় নেবার সময় সবাই ফোন নম্বর, ইমেইল বিনিময় করলাম। সেটাই ছিল শেষ যোগাযোগ। পিটার আসত দেড়শত কিলোমিটার দুরে পোলিশ বর্ডারে অবস্থিত ফ্রান্কফুর্ট (ওডার) থেকে। পরে একবার সে শহরে যখন গেলাম, তাকে ফোন দিলাম। ভেবেছিলাম, তার সাথে সম্ভব হলে দেখা করব। কিন্তু ফোনে কথা বলার পর তার আগ্রহ দেখিনি। হয়ত আমার আগেই জানানো উচিৎ ছিল - কারণ কাজের সময় ছুটি নেয়ার ব্যাপার আছে - অথবা হয়ত আমিই কারণ। এরপর নিজেকেই গুটিয়ে নিয়েছি। <br />
<br />
কিন্তু বন্ধু বিনে জীবন কি পরিপূর্ণ হয়? তাই প্রবাসে ভরসা ছিল ফোন। ঢাকার যে বন্ধুর সাথে একদিন দেখা বা কথা না হলে মনে হত কি যেন অপূর্ণ রয়ে গেছে সে বন্ধুর সাথে কথা বলা হতো প্রথমদিকে মাসে- দুইমাসে একবার করে। তারপর একসময় দুরত্ব বাড়তে লাগল সমস্ত বন্ধুদের সাথে। ততদিনে ব্লগের মাধ্যমে অনেক পরিচিতি বাড়ল। অনেকের সাথে অনলাইনে ভাল সখ্যতাও হল। এখনতো এমন হয় কোন নতুন শহরে গেলে আগে পরিচিত ব্লগার খুঁজি। দুরের আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা হবার বদলে তাদের সাথে দেখা করাটাকেই গুরুত্ব দেই। কারণ মনে হয় যে বন্ধুত্বের জন্যে মনটি হাহাকার করে।<br />
<br />
এখন ফেসবুকের কল্যাণে বন্ধু কথাটার মানে পাল্টে যাচ্ছে। ফেসবুকে বন্ধুর সংখ্যা এখন স্ট্যাটাস সিম্বলে পরিণত হয়েছে। আমরা সগর্বে ঘোষণা দেই আমাদের বন্ধু সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে এবং মুখিয়ে থাকি ওবামা, তসলিমার মত নামি দামীদের (আসল বা নকলের ধার ধারি না) বন্ধুর তালিকায় যোগ করতে। কারো সাথে এভাবে পরিচিত হতে যাই: জানেন আমি না আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড, আপনার ওই স্ট্যাটাসটা না চমৎকার! -ওহ! তাই নাকি (চূড়ান্ত বিস্ময়)!<br />
<br />
বন্ধুত্ব একটি খুব সহজ কথা, সহজেই ব্যবহার করা যায়। প্রতিদিন আমরা হরে দরে এই শব্দটি ব্যবহার করি। তবে বন্ধুত্বের আসল মানে, আসল গভীরতা এই শব্দটিতে ধরা দেয় না। আমাদের জীবনে অনেকের সাথেই মেলামেশা হয়। কিন্তু আসল বন্ধু হয় কজন? <br />
<br />
আরেকটি ব্যপার হল বন্ধুত্ব আসলে শিল্প বা দার্শনিকতার মত নির্দিষ্ট কোন বিষয় নয়। আপনি একে কোন সংজ্ঞায় ফেলতে পারবে না বা এর নেই কোন নির্দিষ্ট পরিমাপযোগ্য সার্থকতা। অথচ জীবনকে সার্থক করতে একটি ভাল বন্ধুত্বই যথেষ্ট। বন্ধুত্বের আসল পরীক্ষা হল যে বন্ধুত্বের কোন বাহ্যিক প্রদর্শন ছাড়া একসাথে থাকতে পারা - কারণ জীবনের ছোটখাট বিষয়ও তাদের সাথে উপভোগ করা যায়। আসল বন্ধুত্ব তড়িৎ যোগাযোগ বা স্বল্প পরিচয়ের কোন ব্যাপার নয়, একে অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে পোক্ত হতে হয়। আমাদের পরিচিতদের মধ্যে থেকে অনেকের নামই আমরা স্মরণ করতে পারি না। আবার অনেকে আমাদের জীবনে গভীরভাবে দাগ কাটে - তাদের সাথে কথা বলতে - একসাথে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি - সেটাই বন্ধুত্ব।<br />
<br />
ফেসবুক সম্পর্কে <a href="http://www.dw-world.de/dw/article/0,,5153280,00.html">অনেকেই সন্দিহান</a> হলেও আমি কিন্তু একে খুবই উপযোগী একটি টুল হিসেবে দেখি। ফেসবুকের কল্যাণে আমি আমার দুরে সরে যাওয়া অনেক বন্ধুদের সাথে পুন:যোগাযোগ করতে পেরেছি। আমার নিত্য যোগাযোগের যেই বন্ধুটির কথা আগে বললাম সে কম্পুকানা হওয়ায় অনেকদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর এখন সে আইফোনে ফেসবুকে ঢুকে - তাই প্রায়ই টুকটাক কথা হয়। ছবি দেখে মাপা হয় কার কত ভূরি বেড়েছে। ফেসবুক তোমাকে সালাম। <br />
<br />
আমাদের সাংস্কৃতিক দলটির কাজের খবর পাই ইয়াহু মেইলিং লিস্ট থেকে। আমি দুরে থেকেও সব সংবাদ পাই বন্ধুদের - বিয়ে-সন্তান-মৃত্যু। প্রযুক্তি আমাদের সাহায্য করে সেই পুরোনো বন্ধুত্বের ছোঁয়া দিতে। <br />
<br />
<img src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj8T3gNAUgnpPXXglErSyHFzqsA3iF65HSVsZz9xsV_5eG7bYwWHB9Sx5DcJsZSKas3Ml4o5uaonbhKUnclmHUautwvzyzWcuOaP5cwsHjtZqecL6Z5D1poHG-XCI_z_AmCzeDBIw/s320/DSC07201+%5B640x480%5D.JPG" width="400" height="300" alt="টিএসসি" /><br />
<br />
সম্প্রতি দেশে গিয়েছিলাম এবং কিছু পুরোনো বন্ধুদের সাথে আবার অনেক অনেক দিন পরে দেখা হল টিএসসিতে। নব্বুই দশকের মাঝামাঝি সময়ে আমরা যখন টিএসসি দাপিয়ে বেড়াতাম সে সময়ের সাথে এখন কতটুকু পরিবর্তন এসেছে সেটি দেখার আগ্রহ ছিল সবার। এখন টিএসসির প্রবেশ পথে ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকে তরুণেরা (কারণ বিনামূল্যে ওয়াইফাই ইন্টারনেট) - তবে ভেতরে সেই চিরচেনা জড় হয়ে বসা আড্ডা - কারও সাংস্কৃতিক চর্চা। আমাদের জীবনে এতদিনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দুই বন্ধুর বিয়ে হয়ে বাচ্চা হবার পর তাদের ছাড়াছাড়িও হয়ে গেল। অনেকদিন পরে আবার তারা একসাথে একই আড্ডায়। ফিরে গিয়েছিলাম সেইসব দিনগুলোতে। চাকুরী- বিয়ে- বাচ্চা সহ নানা বিষয় নিয়ে আলাপের মধ্যে সেইসব দিনের স্মৃতি রোমন্থন - কিভাবে আমরা রোজার সময় রাত করে রিহার্সেল শেষ করে শাঁখারীবাজারে সোমদার বাসায় সারারাত কির্তন শুনে ভোরবেলায় হোটেলে সেহেরি খেয়েছিলাম। মাস্টারকার্ডের বিজ্ঞাপনের মত করে বলি - প্রাইসলেস।<br />
<br />
প্রবাস জীবনে এই সুখ নেই। দেশে অনেকদিন থেকে যাদের জীবনের পরবর্তী সময় প্রবাসে কাটে, তাদের সেখানে অনেক চেনামুখ জোটে, বন্ধু জোটে না। বন্ধুদের জন্যেই ফিরে আসতে হয় স্বদেশ।<br />
<br />
প্রথম প্রকাশ: <a href="http://www.amrabondhu.com/rezwan/1514">আমরা বন্ধু</a>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com2tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-52154848932190327672010-06-16T10:34:00.011+06:002010-09-13T10:41:50.477+06:00কেনিয়ার কবি<img align="left" alt="" class="image img_assist_custom" height="100" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/mind+fields_0.img_assist_custom.jpg" title="" width="100" /><span style="font-style: italic;">আজকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব কেনিয়ার নতুন প্রজন্মের এক কবি ও জনপ্রিয় ব্লগারকে। সাথে বোনাস হিসেবে থাকছে তার একটি কবিতার অনুবাদ।</span><br />
<br />
এবার চিলিতে <a class="bb-url" href="http://summit2010.globalvoicesonline.org/" target="_blank">গ্লোবাল ভয়েসেস নাগরিক মিডিয়া সম্মিলনে</a> জড়ো হয়েছিল বিশ্বের ৬০টিরও অধিক দেশের দেড় শতাধিক ব্লগার। এবার কলেবর বিস্তৃত হওয়ায় সম্মিলনের সময় অনেক নতুন মুখের সাথেই সৌজন্য বিনিময়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত আলাপ করার তেমন সুযোগ হয়নি। এদের অনেকেরই সাথে পূর্বে ইমেইলে যোগাযোগ রয়েছে - অনেকের লেখাই পড়েছি বা অনুবাদ করেছি আগে - তাই কারও কারও সাথে পরিচিত হবার যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। এদেরই একজনের কথা বলছি আজ আলাদা করে। <br />
<br />
<div><img alt="কেনিয়ার কবি এনজেরি ওয়াঙ্গারি" class="image preview" height="214" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/njeri1.preview.jpg" title="কেনিয়ার কবি এনজেরি ওয়াঙ্গারি" width="320" /><span class="caption" style="width: 318px;"><b>কেনিয়ার কবি এনজেরি ওয়াঙ্গারি</b></span></div>একদল লোকের ভীড়ে ২৮ বছর বয়সী কেনিয়ার তরুণী এনজেরি ওয়াঙ্গারিকে আলাদা করে চেনা যায়। পরনে তার আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী পোশাক এবং মাথায় কাপড় বাঁধা। এনজেরি একজন আইটি গ্রাজুয়েট এবং একটি পাবলিশিং হাউজের সিস্টেম এডমিনিষ্ট্রেটর হিসেবে কাজ করছে। পেশায় আইটি বিশেষজ্ঞ হলেও তার মূল পরিচয় সে কবি, আবৃত্তিকার এবং ব্লগার। আফ্রিকার ব্লগ এগ্রেগেটর - <a class="bb-url" href="http://afrigator.com/" target="_blank">আফ্রিগেটর</a> অনুযায়ী তার ব্লগ <a class="bb-url" href="http://www.kenyanpoet.blogspot.com/" target="_blank">কেনিয়ান পোয়েট</a> কেনিয়া ও সারা আফ্রিকার জনপ্রিয় ব্লগগুলোর একটি। গ্লোবাল ভয়েসেসে সে কেনিয়া এবং আফ্রিকার কাব্যসাহিত্য এবং শিল্প বিষয়ে ব্লগগুলো নিয়ে <a class="bb-url" href="http://globalvoicesonline.org/author/njeri-wangari/" target="_blank">লিখে থাকে</a>।<br />
<br />
এনজেরির কবিতার সাথে ভালবাসা ২০০৪ সাল থেকে। তার প্রেমিকের সাথে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল - এমন টালমাটাল সময়ে ভাবল সে তার অনুভূতিগুলো লিখে রাখলে কেমন হয়। এভাবেই কবিতা লেখার শুরু। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিল যে কবিতার খাতাগুলো নিজের কাছেই রয়ে যাচ্ছিল - সেগুলো প্রকাশ করা হচ্ছিল না তাই অন্য কবি বা পাঠকের কাছে পৌঁছুচ্ছিল না। ২০০৬ সালে শুরু করা তার ব্লগ <a class="bb-url" href="http://www.kenyanpoet.blogspot.com/" target="_blank">কেনিয়ান পোয়েট</a> পাঠকদের সাথে সেই দুরত্ব ঘুঁচিয়ে দেয় কিছু পরিমাণে। প্রথমে সে তার কবিতা প্রকাশ করে জানার চেষ্টা করত কিভাবে পাঠকরা সেগুলোকে দেখছেন, সমালোচনা করছেন বা অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। শুধু কবিতাই নয় তার ব্লগে পরবর্তীতে সে শিল্পকলা, সঙ্গীত, সমালোচনা ইত্যাদি অনেক বিষয় নিয়ে লেখা শুরু করে।<br />
<br />
এছাড়াও তার রয়েছে একটি শক্তিশালী কণ্ঠ। পারফর্মেন্স পোয়েট্রির চল রয়েছে কেনিয়াতে - এমনকি এখন কর্পোরেট অনুষ্ঠানেও ডাক পড়ে কবিদের। চারজন কেনিয়ান কবির সঙ্গে এনজেরি গঠন করেন আবৃত্তি দল <a class="bb-url" href="http://mstariwanne.blogspot.com/" target="_blank">মেসতারিওয়ান্নে </a> এবং তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত তাদের কবিতা পরিবেশন করছেন বছর দুয়েক ধরে। তার সহকবি মাইক কোয়াম্বোর <a class="bb-url" href="http://mstariwanne.blogspot.com/2009/04/revolution.html" target="_blank">বিপ্লব</a> নামক কবিতা পড়লে বোঝা যায় তাদের প্রতিভার ছটা। এনজেরিকে এখন কেনিয়ার অন্যতম নতুন প্রজন্মের কবি বলে ধরা হয়।<br />
<br />
মূল সম্মিলনের শেষের দিনে সে একটি কবিতা পড়ে শোনায়। এখানে ভিডিওটি আছে (অ্যামেচার ভিডিও - তাই সাউন্ড একটু জোরে দিতে হবে):<br />
<br />
<div><object height="385" width="640"><param name="movie" value="http://www.youtube.com/v/g8-rO-DfZNA?fs=1&hl=en_US"></param><param name="allowFullScreen" value="true"></param><param name="allowscriptaccess" value="always"></param><embed src="http://www.youtube.com/v/g8-rO-DfZNA?fs=1&hl=en_US" type="application/x-shockwave-flash" allowscriptaccess="always" allowfullscreen="true" width="640" height="385"></embed></object></div><br />
<br />
ইংরেজী ভাষায় লেখা 'ডিজিটাল হৃদয়' নামে সেই কবিতাটি <a class="bb-url" href="http://www.mashada.com/blogs/Kenyanpoet/2009/02/" target="_blank">এখানে পাওয়া যাবে</a>।<br />
আমি এর অনুবাদ করার চেষ্টা করেছি:<br />
<br />
****************************************<br />
<br />
<span style="font-weight: bold;">'ডিজিটাল হৃদয়' </span><br />
<br />
- <span style="font-style: italic;">এনজেরি ওয়াঙ্গারি</span><br />
<br />
<span style="font-style: italic;">এক সময় ছিল যখন মুখ, চোখ, কান, একটুকু ছোঁয়া<br />
গুরুত্বপূর্ণ ছিল একটি কথোপকথন চালানোর জন্যে,<br />
মানুষেরা একে অপরের বা প্রকৃতির অনেক কাছে ছিল<br />
দেখা, শোনা, ছোঁয়ার মাধ্যমে।</span><br />
<br />
<span style="font-style: italic;">এক ঝাক অতিথি পাখির দেখা পাওয়া মানে ছিল ঝড়ের পূর্বাভাষ,<br />
হয়ত ঋতু পরিবর্তনের চিহ্ন বা কোন বিপদ সংকেত।<br />
বাতাসে উদ্বেলিত বৃক্ষরাজির মৃদু স্বরে ফিসফাস<br />
আমাদের মনে শান্তি এনে দিত।</span><br />
<span style="font-style: italic;"><br />
গাছের ডালের সশব্দে ঝরে পড়া, পাখির কলতান<br />
আমাদের আত্মার সাথে বাস্তবের প্রেমবন্ধন তৈরি করত।</span> <br />
<span style="font-style: italic;">এখন সামনা সামনি দেখা হওয়ার বদলে আমাদের দেখা হয় ফেসবুকে<br />
আমাদের স্বর এখন বোতাম যা থেকে আমরা শব্দ বের করি কীবোর্ডে চেপে<br />
আমাদের হাসি আর আবেগ প্রকাশিত হয় স্মাইলি আর ইমোটিকনের মাধ্যমে<br />
হৃদয় আর আমাদের ঠোঁটকে অস্থির করে তোলে না "ভালবাসি" বলার জন্যে<br />
কারণ হৃদয় ও মনের ভাব প্রকাশ করি আমরা ক্ষুদ্র টেক্সট বার্তার মাধ্যমে<br />
বলে বোঝাতে পারি আমাদের মনের কথা ১৬০ বর্ণের ভেতরে।</span><br />
<span style="font-style: italic;"><br />
দরকার নেই আর হৃদয় দিয়ে আবেগময় কণ্ঠে অগণিত বাক্যে অনুনয়<br />
আমাদের আঙ্গুলগুলো এখন সেইসব আবেগ ধারণে সক্ষম যেগুলো<br />
আমাদের ঠোঁট, আঁখি এবং বদনের মাধ্যমে একটি বইয়ে ধারণ করা যেত না।<br />
এইসব শীতল মেশিন আমাদের আচরণকে যান্ত্রিক করে দেয় রোবটের মত<br />
শুধু এটুকুই প্রভেদ যে রোবটের সামনে থিতু হয়ে বসে থাকি আমরা।</span><br />
<br />
<span style="font-style: italic;">আমরা ডিজিটাল বিশ্বের কাছে আমাদের জীবন, মুহূর্ত এবং আত্মাকে বিকিয়ে দিচ্ছি।<br />
সেইসব অচেনা মানুষ যাদের হয়ত কোনদিনই বাড়িতে আমন্ত্রণ করতাম না,<br />
তারা এখন আমাদের খাটের নীচে উঁকি দেয়, আমাদের বাথরুমের ভেতরে তাকায়<br />
আর আমাদের পোশাক উন্মোচন করে দেখে।<br />
আমাদের নিয়ে কল্পনার ফানুশ ওড়ায়, স্বমৈথুন করে<br />
এবং আমাদের ডিজিটাল পরিচয়কে ক্রমাগত অনুসরণ করে।</span><br />
<br />
<span style="font-style: italic;">মাছিকে মরণ আলিঙ্গনে জড়ায় যেই মাকড়সার জাল তারই মত<br />
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জালে আমরা নিজেদের জড়িয়েছি।<br />
বিট এবং বাইট দ্বারা সংযুক্ত এই পৃথিবীতে আমরা হারিয়েছি আমাদের হৃৎস্পন্দন<br />
আমাদের পঞ্চেন্দ্রিয় প্রতিস্থাপিত হয়েছে ইলেকট্রনিক গ্যাজেট দ্বারা।</span><br />
<br />
<span style="font-style: italic;">জিজ্ঞাসি তোমারে,<br />
আমরা কি কাছে আসছি একে অপরের? না প্রযুক্তির?<br />
কারণ এই ডিজিটাল সময়ে শূণ্য এবং একের মাঝখানে<br />
আমাদের হৃদয় হারিয়েছি কোথাও।</span><br />
<br />
****************************************************<br />
<br />
মৃদুভাষী এই কবির সাথে এক ডিনারে আলাপ হলো বেশ অনেকক্ষণ। তার সাথে সামনাসামনি এই মুহূর্তগুলোকে ডিজিটাল যোগাযোগের চেয়ে অনেক মূল্য দেই আমি।<br />
<br />
<span style="font-style: italic;">ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা আলেক্সেই সিডোরেন্কো</span> <br />
<br />
এনজেরি ওয়াঙ্গারির সাক্ষাৎকার:<br />
* <a class="bb-url" href="http://afrinnovator.com/2010/02/05/interview-with-kenyanpoet-a-top-lady-blogger-in-africa/" target="_blank">আফ্রিনোভেটর</a><br />
* <a class="bb-url" href="http://www.ict.go.ke/oldsite/index.php?option=com_content&task=view&id=161&Itemid=395" target="_blank">কেনিয়া আইসিটি বোর্ড</a><br />
* <a class="bb-url" href="http://globalvoicesonline.org/2009/02/17/blogging-has-given-kenyan-poetry-a-larger-meaning-and-exposure/" target="_blank">গ্লোবাল ভয়েসেস</a><br />
<br />
এনজেরির একমাত্র প্রকাশিত কবিতার বই <a class="bb-url" href="http://www.amazon.com/Mines-Mind-Fields-Spoken-Words/dp/0981036252/ref=sr_1_1?ie=UTF8&s=books&qid=1274099958&sr=8-1" target="_blank">পাওয়া যাবে এখানে</a>। <br />
<br />
প্রথম প্রকাশ: <a href="http://www.sachalayatan.com/rezwan/33051">সচলায়তন</a>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-60958720930148668962010-05-21T02:33:00.002+06:002010-07-07T02:37:09.459+06:00মদিরার দেশ চিলি<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="http://farm1.static.flickr.com/203/464952701_ebfaa6e021.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" height="300" src="http://farm1.static.flickr.com/203/464952701_ebfaa6e021.jpg" width="400" /></a></div><br />
দক্ষিণ আমেরিকা সম্পর্কে আমার ধারণা কম থাকায় চিলিতে এসে আমার বিস্ময়ের অন্ত নেই। প্রথমত: ভেবেছিলাম যে এখানে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূতদের পাশাপাশি নেটিভ বা আদিবাসীদের দেখা পাব (যেমন বলিভিয়ায় আদিবাসী ৬০%)। কিন্তু দেখলাম যে বেশীর ভাগ মানুষই আর্য এবং কিছু আদিবাসীদের শংকর দেখা যায়। আর্জেন্টিনার পাশাপাশি চিলি এমন এক দক্ষিণ আমেরিকার দেশ যেখানে ১৬শ শতাব্দী থেকে আসতে শুরু করা ইউরোপীয় অভিবাসীরা (আইরিশ, স্কটিশ, জার্মান, স্প্যানিশ ইত্যাদি) ইনকা আদিবাসীদের সংখ্যালঘু করে দিয়েছে। মূল আদিবাসীদের দেখতে গেলে নাকি উত্তর বা দক্ষিণ কোনে রিজার্ভে যেতে হবে। চিলির কেউ কেউ তার পূর্বপুরুষ স্প্যানিয়ার্ড বা জার্মান বলে বড়াই করে আলাপের মধ্যে। অবকাঠামোর দিক দিয়ে চিলি যে কোন ইউরোপীয় শহরের মতই এবং ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। ওদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ বলিভিয়া বা পেরু এখনও পিছিয়ে আছে। বলিভিয়ার বন্ধু এডিকে তাদের দেশের সাথে পার্থক্য কি জিজ্ঞেস করতে সে বলল চিলি তো ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড।<br />
<br />
পাবলো নেরুদা, সালভাদর আলেন্দে, পিনোশের দেশ চিলি। সেখানে যেতে ২০০০০ কি.মি. এর বেশী ভ্রমণ করতে হল প্রায় দুদিন ধরে। ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে দুবাই। তারপর লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার উপর দিয়ে উড়ে পার হতে হল অতলান্তিক মহাসাগর। বিমান নামল ব্রাজিলের রিও দি জেনেইরোর উপর দিয়ে গিয়ে সাও পাওলো শহরে। সেখান থেকে ল্যাটিন আমেরিকার বিমান ল্যান বয়ে নিয়ে গেল চিলির সান্টিয়াগো। <br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(32327, 554, 385); return false;" target="_blank"><img alt="ফ্রান্সেস্কা" class="image preview" height="222" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/Franscesca.preview.jpg" title="ফ্রান্সেস্কা" width="320" /></a><span class="caption" style="width: 318px;"><strong>ফ্রান্সেস্কা</strong></span></span><br />
আমরা রওনা হয়েছি একটি মদিরা বাগান পর্যটনে। চিলির মদ বিশ্বখ্যাত এবং তাদের রপ্তানি আয়ের অন্যতম উৎস (বিশ্বের পঞ্চম মদ রপ্তানিকারী দেশ)। রাজধানী সান্তিয়াগো শহর থেকে ৩৪ কি.মি. দুরে মাইপো উপত্যকা চিলির অন্যতম আঙ্গুর বাগান ও মদিরা প্রস্তুতকারী অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত। আমাদের গাইড ফ্রান্সেসকা - ছোটখাট গড়নের স্বর্ণকেশী - প্রথমেই জেনে নিল আমাদের নামধাম – আমরা কোন ধরনের পানীয় পছন্দ করি ইত্যাদি। সান্তিয়াগোতে দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ মলের ট্যুর অফিস প্রাঙ্গণ থেকে বাস চলা শুরু করলে নিরলসভাবে সে ইংরেজী ও স্প্যানিশ উভয় ভাষায় বলে গেল চিলির মদের ইন্ডাষ্ট্রির ইতিহাস।<br />
<br />
১৬শ শতাব্দীর আগে দেশটিতে মদ উৎপাদিত হত না। স্প্যানিশ ঔপনিবেশিকরা প্রথম আঙ্গুরের বীজ নিয়ে আসে। তখন ধনীরা বাসার বাগানে আঙ্গুরের গাছ লাগাত। ১৮ শতাব্দীর দিকে ফরাসী মদের প্রকারভেদ – যেমন কাবার্নে সভিনিওঁ এবং মার্লট এদেশে প্রস্তুত হওয়া শুরু করে। এই শতাব্দীতেই সারা বিশ্বজুড়ে আঙ্গুরের ফলনে একটি মড়ক লাগে এবং মদের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়। সেটি কিন্তু চিলিকে স্পর্শ করে না। ফলে চিলির মদের চাহিদা সারা বিশ্বে বেড়ে যায়। চিলি সেই মড়ক থেকে কিভাবে বাঁচল সে নিয়ে ফ্রান্সেসকা একটি লম্বা গল্প বলল। <br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(32333, 350, 589); return false;" target="_blank"><img alt="চিলির আঙ্গুর বাগানের অঞ্চলসমূহ" class="image preview" height="320" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/chile+wine+region.preview.jpg" title="চিলির আঙ্গুর বাগানের
অঞ্চলসমূহ" width="190" /></a><span class="caption" style="width: 188px;"><strong>চিলির আঙ্গুর বাগানের অঞ্চলসমূহ</strong></span></span><br />
<br />
দেশটির দৈর্ঘ ৪২০০ কি.মি. কিন্তু প্রস্থ খুবই কম – - গড়ে মাত্র ১৫০ কি.মি.। এত বিশাল দেশে বৈচিত্রও কম না। উত্তরে আতাকামা মরুভূমি, পূর্বে বলিভিয়ার সীমানা ঘেষে আন্দেজ পর্বতমালা, পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর, ও দক্ষিণে হিমবাহ দেশটিকে ঘিরে রেখেছে। ফ্রান্সেসকার ভাষায় চারিদিকে এই সুরক্ষা বলয়ই চিলিকে বাঁচিয়েছে। এছাড়াও ভাল মদ উৎপাদনের জন্যে তিনটি বিষয় দরকার হয়। মাটি, আবহাওয়া ও ভাল জাতের আঙ্গুরের ফলন। প্রকৃতি এদেশকে এই উপাদানগুলো উজাড় করে ঢেলে দিয়েছে। <br />
<br />
তারপর সে গল্প করল কার্মিনেরে মদের কথা যা একটি বিশেষ আঙ্গুর দিয়ে তৈরি হয়। একমাত্র চিলিতেই এই মদের সেরা সংস্করণ (১০০% খাঁটি) উৎপন্ন হয়। তার কাছ থেকে জানলাম মদের প্রকারভেদ সম্পর্কে এবং ফার্মেন্টেশন ও ডিস্টিলেশন পদ্ধতি সম্পর্কে। লাল আর সাদা মদের পার্থক্য, কোন ধরণের আঙ্গুর দিয়ে সেগুলো তৈরি হয়, বিভিন্ন স্বাদ – ড্রাই, সেমি ড্রাই, মিষ্টি, টক ইত্যাদি কিভাবে বানানো হয়... <br />
<br />
চিলির উত্তরের দিকে একটি বিশেষ মদ তৈরি হয় যার নাম পিসকো। পিসকো সাওয়ার বা টক পিসকো ডিস্টিলেশন পদ্ধতিতে তৈরি হয় (যেমন হুইস্কি) এবং এতে লেবুর রস মেশানো হয়। এই পানীয়টি অনেকটা ককটেলের মত সুস্বাদু কিন্তু খুব কড়া। এই মদের উৎপত্তি নিয়ে পেরুর সাথে তাদের মতভেদ আছে।<br />
<br />
আরেকটি ব্যাপার আমি লক্ষ্য করেছি যে দক্ষিণ আমেরিকার লোকজন কোকা কোলা জাতীয় কোমল পানীয় খুব পান করে। এবং মদের সাথে কোক মিশিয়ে সেই পানীয়র নতুন নামকরণ করা হয়। যেমন পিসকো আর কোলা - পিসকোলা অথবা রণ (এক ধরণের মদ) এবং কোলা - রনকোলা। <br />
<br />
সান্টিয়াগো শহরটির অদুরেই আন্দেজ পর্বতমালা থেকে নেমে আসা মাপুই নদী দেখলাম। নদী কি বলব, পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়ার মত। নদী থেকে জেগে ওঠা চরের মত যায়গায় দেখলাম গাড়ি পার্ক করা আছে। এবারের শীতে (এখন ওখানে শীত) অন্য সময়কার মত বৃষ্টি হচ্ছে না। বৃষ্টি আসলেই নাকি এইসব নদী ফুলে ফেঁপে ওঠে। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(32329, 3072, 2304); return false;" target="_blank"><img alt="কন্চা ই টোরো" class="image preview" height="240" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06965.preview.JPG" title="কন্চা ই টোরো" width="320" /></a><span class="caption" style="width: 318px;"><strong>কন্চা ই টোরো</strong></span></span><br />
<br />
আমাদের গন্তব্য <a class="bb-url" href="http://www.conchaytoro.com/" target="_blank">কন্চা ই টোরো</a> নামে একটি ভাইনইয়ার্ড যা একটি পরিবারের নাম এবং তারা এই মদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করে ১৮৮৩ সালে। এককালে এইসব পরিবারই মদের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেন্জ এ নিবন্ধিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (বিশ্বের সেরা দশটি মদ উৎপাদনকারীর মধ্যে পরে)। <br />
<br />
সারা চিলি জুড়ে এর মোট আঙ্গুর বাগানের পরিমাণ ৮০০০ হেক্টরের ও বেশী। মাপুই উপত্যকায় কন্চা ই টোরোর ফ্যাক্টরি প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখলাম সেখানে আরও পর্যটক রয়েছে। আমাদের একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে একটি ভিডিও দেখান হল কন্চা ই টোরোর ইতিহাস সম্পর্কে - এটিকে বেশী পরিমাণে বিজ্ঞাপনই মনে হল। তার পর বেশ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম পরবর্তী গাইডের জন্যে। ততক্ষণে ফ্রান্সেসকার সাথে অন্যান্য বিষয়ে আলাপ হল। সে নাট্যকলার পড়াশোনা করেছে – কিন্তু আক্ষেপের সাথে জানালো এই বিষয় শিখে চাকুরী পাওয়া বেশ কঠিন। যদিও সে নাটক ভালবাসে তবুও সে আবার পর্যটন কলা শেখা শুরু করেছে - কারণ এর চাহিদা বেশ।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(32328, 305, 399); return false;" target="_blank"><img alt="মাক্সিমিলিয়ানো" class="image preview" height="320" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/maximiliano.preview.jpg" title="মাক্সিমিলিয়ানো" width="245" /></a><span class="caption" style="width: 243px;"><strong>মাক্সিমিলিয়ানো</strong></span></span><br />
<br />
প্রচুর স্প্যানিশ ভাষার পর্যটকের ভিড়ে আমি এবং মরোক্কোর হিশাম এর জন্যে এরপর আসল পরবর্তী ইংরেজী ভাষার গাইড মাক্সিমিলিয়ানো। তরুণ এই গাইড ইতিহাসের গ্রাজুয়েট এবং পেশায় সাংবাদিক - একটি জনপ্রিয় দৈনিকে সে স্পোর্টস রিপোর্টার। আমরা এগোলাম সেই মালিক পরিবারটির বাগান বাড়ির দিকে। গত ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে পুরোনো এই বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে - তাই বন্ধ ছিল। মাক্সিমিলিয়ানো বলছিল - ৫ জন লোকের জন্যে ২৮টি রুম - ভেবে দেখতে পারো? সামনের উঠোনটি অনেকটা ইংরেজ স্থাপত্যের ধাঁচে করা। এর পাশেই ভাইনইয়ার্ড বা মদের ক্ষেত - ফলন তোলা হয়ে গেছে - তাই আঙ্গুর বিহীন গাছগুলো দাড়িয়ে আছে। মাক্সিমিলিয়ানো মজার মানুষ - আমাদের সম্পর্কে তার উৎসাহের কমতি নেই। আমরা জানালাম নিজের দেশ সম্পর্কে আর সে আলাপ করল চিলির ইতিহাস নিয়ে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সালভাদর আলেন্দে দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিলে (কলকারখানা রাষ্ট্রীয়করণ ইত্যাদি) এবং কিউবার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলে যুক্তরাষ্ট্রীয় জোট তাদের বয়কট করা শুরু করে। ফলস্বরূপ বিদেশী বিনিয়োগ কমে যায় ও দেশে মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ইত্যাদি বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের মদদে ১৯৭৩ সালে পিনোশে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে এবং পরবর্তীতে স্বৈরাচার হিসেবে দেশকে শাসন করেন ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। তার শাসনামলে প্রচুর বিরোধী দলীয় কর্মীদের মেরে ফেলা হয়েছে - অনেকের কোন হদিস পাওয়া যায় নি। <br />
<br />
তবে মাক্সিমিলিয়ানো বলল মজার কথা - পিনোশের আমলে অর্থনীতি মুক্ত হয়, মুদ্রাস্ফীতি কমে, যার ফল এখন চিলি ভোগ করছে। মাক্সিমিলিয়ানোর ও দেখলাম খুব গর্ব তাদের ইউরোপীয় বংশ নিয়ে - বলল যে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে চিলির সুসম্পর্ক নেই। হয়ত তাদের ইউরোপীয় ঐতিহ্যই তাদের অন্যরকম করে ভাবতে সাহায্য করে।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(32330, 3072, 2304); return false;" target="_blank"><img alt="মদের ব্যারেল" class="image preview" height="240" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06984.preview.JPG" title="মদের ব্যারেল" width="320" /></a><span class="caption" style="width: 318px;"><strong>মদের ব্যারেল</strong></span></span><br />
<br />
আমাদের খেয়াল হল তখন যে আমরা মদিরা নিয়ে আলোচনা ভুলে গিয়ে এইসব আলোচনা করছি। সে এরপর আমাদের ওয়াইন সেলারে নিয়ে গেল। বিভিন্ন রুমে সারি সারি মদের ব্যারেল রাখা তাপমাত্রা, আলো ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রিত মাটির নীচের কক্ষে। একটু পরপর পানির ছিটা দেয়া হচ্ছে ছাদে লাগানো পাইপ থেকে। জানলাম একেকটি ওক কাঠের ওয়াইন ব্যারেলের দাম ১০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হয় কারণ - সেগুলোর কাঠ বিশেষ ঘ্রাণযুক্ত হয় যার প্রভাব কিছু পরিমাণে হলেও মদের উপরে পরে। প্রতিটি ব্যারেল মাত্র ৪-৫ মৌসুম ব্যবহার করা যায় - এরপর বিক্রি করা হয় স্কটল্যান্ডে - যেখানে সেগুলোতে হুইস্কি বানানো হয়। ব্যারেল কমদামি এমনকি লৌহজাতীয় পদার্থেরও হয় এবং বলাই বাহুল্য - মদ এর দামও নির্ভর করে কোন ব্যারেলে এটি রাখা হয়েছে তার উপরে। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(32334, 3072, 2304); return false;" target="_blank"><img alt="মদিরা" class="image preview" height="240" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06975.preview.JPG" title="মদিরা" width="320" /></a><span class="caption" style="width: 318px;"><strong>মদিরা</strong></span></span><br />
<br />
তারপর ছিল ওয়াইন টেস্টিং পর্ব - এবং স্মৃতি হিসেবে কাচের গ্লাসটি রইল সাথে। ফেরার পথে ভাবছিলাম কিভাবে তারা তাদের মদের ইণ্ডাস্ট্রিকেও পর্যটনের অংশ করে নিয়েছে। মাক্সিমিলিয়ানো ও ফ্রান্সেসকা আমার দেখা সবচেয়ে শিক্ষিত গাইড। তাদের প্রজন্মের কঠোর পরিশ্রমই হয়ত জাতিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।<br />
<br />
১) প্রথম ছবিটি <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/vtveen/464952701/" target="_blank">ফ্লিকার থেকে</a><br />
<br />
২) বাকি ছবিগুলো আমার এবং হিশামের তোলা।Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-70999013337856997052010-05-02T02:26:00.001+06:002010-07-07T02:32:16.134+06:00যোগজাকার্তার পথে পথে (২)পূর্বের পর্ব - <a class="bb-url" href="http://amibangladeshi.blogspot.com/2010/04/blog-post_29.html" target="_blank">বড়বুদুর বৌদ্ধমন্দির</a><br />
<br />
সমগ্র ইন্দোনেশিয়াতে প্রায় <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/List_of_volcanoes_in_Indonesia" target="_blank">১৫০টি</a> আগ্নেয়গিরি রয়েছে যার মধ্যে ১৩০টি সুপ্ত এবং <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Pacific_Ring_of_Fire" target="_blank">প্যাসিফিক রিংস অফ ফায়ারের</a> উপরে অবস্থিত। কাজেই যে কোন পর্যটন স্থানে অবধারিতভাবে একটি আগ্নেয়গিরির সন্ধান পাওয়া যায়। বড়বুদুর দেখা হয়ে গেল সকাল এগারটার মধ্যে এবং আমাদের পরবর্তী গন্তব্য প্রামবানান মন্দির। ড্রাইভার বেশ ভাল ইংরেজী বলে - সেটি এক বিস্ময় ছিল, কারন জাকার্তাতেও অনেক ট্যাক্সি ড্রাইভারই ইংরেজী বলতে পারে না। তো তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে প্রামবানান যাবার পথে কি কি দেখা যায়। সেই <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Merapi_volcano" target="_blank">মেরাপি পাহাড়ের</a> আগ্নেয়গিরির কথা বলল। অত:পর আমাদের পাহাড়ী রাস্তা বেয়ে ওপরে ওঠা শুরু হল। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31867, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="২০০৬ সালে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট খাল" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05961+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="২০০৬ সালে
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট খাল" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>২০০৬ সালে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট খাল</strong></span></span><br />
<br />
গুনুঙ মেরাপি মানে হচ্ছে আগুনের পাহাড় - নামকরণ এমন কেন হয়েছে বুঝতেই পারছেন। ১৫৪৮ সাল থেকে এটি নিয়মিত লাভা উদগিরণ করে আসছে। স্থানীয় জাভানীজরা পাহাড়কে শান্ত রাখতে বিভিন্ন ধরনের পুজো/ভেট দিয়ে থাকে সুলতানের রাজত্ব গ্রহণের বার্ষিকীতে। বছরে প্রায় ৩০০ দিনই এর চূড়ায় ধোঁয়া দেখা যায়। তাদের সর্বশেষ এখানে উদগিরণ হয়েছে ২০০৬ সালে যোগজাকার্তার ভূমিকম্পের পূর্বে। সে সময় ২ জন মারা গিয়েছিল। আমাদের ড্রাইভারই গাইডের কাজ করল - সে গিয়ে দেখাল পাহাড়ের কাছে একটি শেল্টার আছে - সেখানে অনেক লোক আশ্রয় নিলেও দুজন পর্যটক ছাত্র পৌঁছুতে পারে নি শেষ পর্যন্ত। তবে আমাদের কপাল খারাপ। মেঘে ঢাকা চূড়ার কারনে উপরে কিছুই দেখা গেল না। মূল পাহাড়টিতে ওঠা নিষিদ্ধ - পথও নেই। আমাদের সামনে ছিল শুধু লাভা উদগিরণে তৈরি হওয়া একটি খালের মত যায়গা। এটি দেখেই দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে হল। অথচ কয়েক মাস আগে বান্দুং এর কাছে তাংকুবান পেরাহু আগ্নেয়গিরিতে গিয়েছিলাম যেখানে বিশাল এক জ্বালামুখ ছিল - দেখার মত জিনিষ।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31868, 450, 338); return false;" target="_blank"><img alt="প্রামবানান মন্দির কমপ্লেক্স" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05965+%5B640x480%5D.thumbnail_0.JPG" title="প্রামবানান মন্দির কমপ্লেক্স" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>প্রামবানান মন্দির কমপ্লেক্স</strong></span></span><br />
<br />
এরপর আমরা দুপুরের খাবার সেরে <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Prambanan" target="_blank">প্রামবানান</a> মন্দিরে পৌঁছালাম। এটি <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Trimurti" target="_blank">ত্রিমূর্তিকে</a> (শিব, ব্রহ্মা, আর বিষ্ণু) উৎসর্গকৃত নবম শতাব্দীতে নির্মিত একটি মন্দির কমপ্লেক্স যেখানে আদিকালে ২৩৭টি মন্দিরের স্থাপনা ছিল। ইন্দোনেশিয়ার এই সর্ববৃহৎ হিন্দু মন্দিরকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হয়েছে। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31871, 450,
600); return false;" target="_blank"><img alt="২৩৭টি মন্দির স্থাপনার একটি" class="image thumbnail" height="200" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05973+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="২৩৭টি মন্দির স্থাপনার একটি" width="150" /></a><span class="caption" style="width: 148px;"><strong>২৩৭টি মন্দির স্থাপনার একটি</strong></span></span><br />
<br />
শৈলেন্দ্র সাম্রাজ্যের প্রভাবে পদানত হিন্দু সন্জয় সাম্রাজ্য আবার ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে এবং বড়বুদুরের জবাবে তারা প্রামবানান মন্দির তৈরি করে। এটি <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Mataram_Kingdom" target="_blank">মাতারাম রাজ্যের</a> রাজকীয় মন্দির হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই মন্দিরের অসম্ভব সুন্দর কারুকার্য সেই সাম্রাজ্যের অর্থবল ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31870, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="চান্দি মানে বাহাসায় মন্দির" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05971+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="চান্দি মানে বাহাসায় মন্দির" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>চান্দি মানে বাহাসায় মন্দির</strong></span></span><br />
<br />
তবে ৯২৯ সালে মাতারাম সাম্রাজ্যের শেষ রাজা <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Mpu_Sindok" target="_blank">মপু সিন্দক</a> সাম্রাজ্যটিকে পূর্ব জাভার দিকে সরিয়ে নেন (মেরাপি আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণে)। তবে সেটাই মন্দিরটির পতনের কারণ হয়ে দাড়ায় - এটি পরিত্যক্ত হয়। ১৬ শতাব্দীতে মেরাপি পাহাড়ের অগ্নুৎপাত ও ভূমিকম্পে মন্দিরটির প্রভূত ক্ষতি সাধিত হয়। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31869, 360, 480); return false;" target="_blank"><img alt="প্রামবানান মন্দির কমপ্লেক্স" class="image thumbnail" height="200" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05970+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="প্রামবানান মন্দির কমপ্লেক্স" width="150" /></a><span class="caption" style="width: 148px;"><strong>প্রামবানান মন্দির কমপ্লেক্স</strong></span></span><br />
<br />
১৮ শতকের প্রথম দিকে ব্রিটিশ শাসনের সময় কলিন ম্যাকেন্জি নামক একজন সার্ভেয়ার মন্দিরটি আবিষ্কার করেন। ১৮৮০ সালে ডাচ নৃতত্ত্ববিদদের দ্বারা খননের সময় বেশ অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ চুরি যায় মন্দির থেকে। এরপর ১৯৩০ সাল থেকে আবার এটি পুনর্নিমাণ শুরু হয় এবং ১৯৫৩ সালে প্রধান মন্দিরটি পূর্বাবস্থায় আসে। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31875, 450,
338); return false;" target="_blank"><img alt="চমৎকার সব টাওয়ারগুলো - প্রতিটি আলাদা মন্দির" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05981+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="চমৎকার সব
টাওয়ারগুলো - প্রতিটি আলাদা মন্দির" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>চমৎকার সব টাওয়ারগুলো - প্রতিটি আলাদা মন্দির</strong></span></span><br />
<br />
এরপর বিভিন্ন সরকারের আমলে এটির উপর আরও কাজ হলেও চুরি যাওয়া পাথরের অংশগুলির অভাবে অনেক অংশেরই পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় নি।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31872, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="নান্দি মোষ - শিব ঠাকুরের বাহন" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05976+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="নান্দি মোষ - শিব ঠাকুরের
বাহন" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>নান্দি মোষ - শিব ঠাকুরের বাহন</strong></span></span><br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31878, 360, 480); return false;" target="_blank"><img alt="মন্দিরের ভেতরে দেবতা মূর্তি" class="image thumbnail" height="200" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05988+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="মন্দিরের ভেতরে দেবতা মূর্তি" width="150" /></a><span class="caption" style="width: 148px;"><strong>মন্দিরের ভেতরে দেবতা মূর্তি</strong></span></span><br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31880, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="মন্দিরের চারিদিকে কারুকার্যখচিত পথ" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05993+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="মন্দিরের চারিদিকে
কারুকার্যখচিত পথ" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>মন্দিরের চারিদিকে কারুকার্যখচিত পথ</strong></span></span><br />
<br />
তবুও যা দেখলাম তাতে আমরা অভিভূত। ২০০৬ সালের ভূমিকম্পে এর বেশ ক্ষতি সাধন হলেও পাথরের গাঁথুনি কত মজবুত চিন্তা করেন - যে বড় কোন কাঠামোগত ক্ষতি হয় নি ২৩৭টির মধ্যে যে কয়টি চুড়া দাড়িয়ে আছে সেগুলোর। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31873, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="মন্দিরের দেয়ালের কারুকার্য" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05977+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="মন্দিরের দেয়ালের কারুকার্য" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>মন্দিরের দেয়ালের কারুকার্য</strong></span></span><br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31877, 450, 338); return false;" target="_blank"><img alt="পাথরের কারুকার্য" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05987+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="পাথরের কারুকার্য" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>পাথরের কারুকার্য</strong></span></span><br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31883, 360, 480); return false;" target="_blank"><img alt="চুড়া পর্যন্ত কারুকার্যখচিত" class="image thumbnail" height="200" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06006+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="চুড়া পর্যন্ত কারুকার্যখচিত" width="150" /></a><span class="caption" style="width: 148px;"><strong>চুড়া পর্যন্ত কারুকার্যখচিত</strong></span></span><br />
<br />
মাঝখানের বড় শিব মন্দিরটি পুনর্নির্মাণের জন্যে বন্ধ ছিল সেখানকার সিকিউরিটি গার্ড আমাদের জিজ্ঞেস করতে লাগল যে আমরা দেখতে চাই কি না। অর্থাৎ ঘুষ দিলে সেখানে যাওয়া যাবে। অন্ধকার নির্জন যায়গায় গেলে নিরাপত্তাজনিত কি সমস্যা হতে পারে চিন্তা করে আর গেলাম না। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31882, 640,
480); return false;" target="_blank"><img alt="মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ - এককালে এগুলো দাড়িয়ে ছিল।" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05999+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="মন্দিরের
ধ্বংসস্তূপ - এককালে এগুলো দাড়িয়ে ছিল।" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ - এককালে এগুলো দাড়িয়ে ছিল।</strong></span></span><br />
<br />
তবে শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেবার ব্যাপারটি ভাল লাগল না। এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31884, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="আমরা আছি গুটি কয় দাড়িয়ে - বাকি সব ঝরে গেছে।" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06015+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="আমরা আছি গুটি
কয় দাড়িয়ে - বাকি সব ঝরে গেছে।" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>আমরা আছি গুটি কয় দাড়িয়ে - বাকি সব ঝরে গেছে।</strong></span></span><br />
<br />
কমপ্লেক্সের অনেক যায়গা জুড়ে মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ, সেগুলো হয়ত কোনদিন পশ্চিমা অর্থসাহায্যে মাথা তুলে দাড়াবে দুর্নীতিগ্রস্তদের উদর পুরে বা হয়ত এভাবেই থাকবে। তবে বিদেশীদের কাছ থেকে টিকেট নেয়া হয় জনপ্রতি ১৩ ডলার করে - যে পরিমাণ অর্থ আসে সেটা দিয়ে নিশ্চয়ই রক্ষণাবেক্ষণ ভালভাবেই করার কথা।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31885, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="যোগজাকার্তার ট্রেডমার্ক রিক্সা" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06032+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="যোগজাকার্তার ট্রেডমার্ক
রিক্সা" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>যোগজাকার্তার ট্রেডমার্ক রিক্সা</strong></span></span><br />
<br />
এর পরদিন আমরা যোগজাকার্তার ট্রেডমার্ক রিক্সায় চড়ে <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Taman_Sari_%28Yogyakarta%29" target="_blank">তামান সারি ওয়াটার ক্যাসল</a> দেখতে গেলাম। এটি রাজপ্রাসাদ বা ক্রাতোন এর দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। ১৮ শতাব্দীতে সুলতানের জন্যে তৈরি এই স্থাপনাটিকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এটি একটি বিশ্রামাগার, একটি অস্ত্রাগার, লুকানোর জায়গা ইত্যাদি। তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যে এর মধ্যে একটি ঝর্ণার জলে পূর্ণ পুকুর আছে যাকে সুলতান তার স্নানঘর বা হারেম হিসেবে ব্যবহার করত। মূল কম্পাউন্ডে অনেক সঙ্গীতশিল্পী সুর তুলত এবং নর্তকীরা নাচত। এরপর তারা বড় পুকুরে স্নান করে তাদের বিশ্রামাগারে চলে যেত এবং রাজা সেখান থেকে তার রাতের সঙ্গিনীদেরকে পছন্দ করতেন। এরপর তারা একটি ছোট পুকুরে সুলতানকে গোসল করাত এবং সেখানে বিশ্রামাগারে রাজার শয্যসঙ্গিনী হত। <br />
<br />
মূল কম্পাউন্ডের বাইরে এই এলাকাটিতে এখন সুলতানদের চাকরবাকরদের পরিবারদের বিশাল একটি সমাজ থাকে। তারা বিভিন্ন বাটিকের কাপড় তৈরি করে ও পর্যটকদের কাছে বেচে। <br />
<br />
যোগজাকার্তা হস্তশিল্প ও বাটিকের জিনিষপত্রের জন্যে খুব প্রসিদ্ধ। সেটি নিয়ে লিখতে গেলে আরেকটি পোস্ট হবে। তাই এখানেই শেষ করছি। <br />
<br />
* প্রথম ছবিটি মেরাপি পাহাড়ের - <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/File:Blethrow_merapi1.jpg" target="_blank">উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে</a>। বাকিগুলো আমার তোলা।Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-42881956950899311652010-04-29T02:20:00.001+06:002010-07-07T02:25:28.786+06:00যোগজাকার্তার পথে পথে<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31844, 739, 485); return false;" target="_blank"><img alt="উপর থেকে বড়বুদুরের ছবি" class="image thumbnail" height="131" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/borobudur+elevated+shot.thumbnail.jpg" title="উপর থেকে বড়বুদুরের ছবি" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>উপর থেকে বড়বুদুরের ছবি</strong></span></span><br />
ইন্দোনেশিয়া আসার পর বিভিন্ন পোস্টার ও লিফলেটে একটি অপূর্ব ঐতিহাসিক স্থাপনার ছবি দেখে আমি খুব অভিভূত ছিলাম - সেটি হচ্ছে জাভা দ্বীপের বড়বুদুর বৌদ্ধ মন্দির। ১৭০০০ এরও বেশী দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়ার সৌন্দর্য্য জাকার্তার বাইরে না গেলে বোঝা যায় না - কিন্তু সময় ও সুযোগের অভাবে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী বান্দুং, বোগর এবং একটু দুরে পেলা বুহান রাতু ছাড়া কোথাও যাওয়া হয়নি। দেশ থেকে আব্বা এসেছিলেন এবং সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হল এবার দুরে কোথাও যাব। ঠিক হল যোগজাকার্তা যাব এবং বড়বুদুর দেখার আকাঙ্খাটি পূরণ হল অবশেষে। <br />
<br />
যোগজাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী থেকে মাত্র ৪৪৩ কিলোমিটার দুরে (ইউরোপ হলে ৪-৫ ঘন্টার গাড়িভ্রমণ)। কিন্তু যাতায়াতের উপায়গুলো শুনে চোখ কপালে উঠে যাবার যোগাড়। গাড়িতে লাগবে ১২ ঘন্টা - যদি যানজট অনুকূলে থাকে। ট্রেনে যাওয়া সহজ উপায় - সেটাতে ৮ ঘন্টা লাগবে। আর নাহলে তো বিমান আছেই। ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন দ্বীপে ভ্রমণের অন্যতম কার্যকরী উপায় স্থানীয় কিছু এয়ারলাইন্স। তবে তাদের ভাল সেফটি রেকর্ড আছে এমন শুনিনি, বিশেষ করে <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Adam_Air" target="_blank">আদম পরিবহনের</a> গোত্তা মারার পর থেকে। আমাদের ত্রাতা হয়ে আসলো কম খরুচে আন্তর্জাতিক পরিবহন এয়ার এশিয়া - তাদের অন্তত বিমানগুলো নতুন। দেখা গেল তাদের এক প্রমোশন রেটে বিমান ভাড়া ট্রেন ভাড়ার প্রায় সমান (জনপ্রতি ৫০ ডলার)। তাই সময় বাঁচাতে (৫০ মিনিটের ফ্লাইট) এয়ার এশিয়ার কাঁধে ভর করলাম সবাই। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31843, 760, 742); return false;" target="_blank"><img alt="যোগজাকার্তা ট্যুরিস্ট ম্যাপ" class="image thumbnail" height="195" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/Jogja_tourist_map.thumbnail.jpg" title="যোগজাকার্তা ট্যুরিস্ট ম্যাপ" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>যোগজাকার্তা ট্যুরিস্ট ম্যাপ</strong></span></span><br />
<br />
জাভা দ্বীপের মধ্যভাগের অন্যতম সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক প্রদেশ <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Yogyakarta" target="_blank">যোগজাকার্তার</a> (সংক্ষেপে যোগজা) পত্তন হয় ১৭৫৫ সালে। বর্তমানে এটি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে ছোট প্রদেশ যার রাজধানী একই নামে। ১৭৫৫ সালে মাতারাম সাম্রাজ্যের রাজকুমার মান্কুবুমি তার সুলতানাতের রাজধানী হিসেবে একে ঘোষণা করেন। বর্তমানেও এটি সুলতান কর্তৃক শাসিত - ইন্দোনেশিয়ার একমাত্র প্রদেশ এটি যা এরকম বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। জাভা দ্বীপের শিল্প ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে একে ধরা হয়। ১৯৪৬ সালে নব ঘোষিত ইন্দোনেশিয়া রিপাবলিকের রাজধানী এখানে স্থানান্তরিত হয় ১৯৫০ সাল পর্যন্ত - যে পর্যন্ত ডাচরা ইন্দোনেশিয়া পুনর্দখল করে রেখেছিল।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30897, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="যোগজাকার্তা - আদিসুতজিপতো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর" class="image
thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05908+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="যোগজাকার্তা - আদিসুতজিপতো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>যোগজাকার্তা - আদিসুতজিপতো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর</strong></span></span><br />
<br />
<a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Yogyakarta_%28city%29" target="_blank">যোগজাকার্তা</a> যেই দিক দিয়ে জাকার্তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা - সেটি হচ্ছে ৩৩ বর্গ কি.মি.র শহরে মাত্র ৫ লাখ লোকের বসবাস। বেশ ছিমছাম, গুছানো একটি শহর যা পর্যটকে পূর্ণ থাকে। এটি বিশ্ববিদ্যালয় শহরও বটে - এখানে বেশ কটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে সমগ্র ইন্দোনেশিয়া থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়তে আসে। <br />
হোটেলে ওঠার কিছু পরেই বের হয়ে গেলাম বিচের দিকে - ৭ সিটের গাড়ি ভাড়া করা ছিল (২৪ ঘন্টায় ৫০ ডলার)। কিন্তু পথে সুলতানের প্রাসাদ (ক্রাতোন) দেখে যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। শুনেছিলাম যে বীচে তাজা সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায় কিনতে যা আপনার সামনেই গ্রীল করে দেবে। ওখানে গিয়ে দেখি একটি যায়গায় কিছু মাছ বিক্রি হচ্ছে - কিন্তু চারিদিকে খুব অন্ধকার। আর দুরে রেস্টুরেন্ট আছে কিন্তু সেখানের পরিবেশ ভাল লাগল না। অত:পর শহরের দিকে ফেরত আসলাম এবং পথে একটি সিফুড রেস্টুরেন্টে রাতের ভোজ সারলাম।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30899, 360, 480); return false;" target="_blank"><img alt="বড়বুদুর" class="image thumbnail" height="200" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05918+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="বড়বুদুর" width="150" /></a><span class="caption" style="width: 148px;"><strong>বড়বুদুর</strong></span></span><br />
<br />
পরদিন ভোরে আমাদের বড়বুদুর মিশন শুরু হলো। নবম শতাব্দিতে নির্মিত এই বৌদ্ধমন্দিরটি (বর্তমানে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। চৌদ্দ শতাব্দীতে মুসলমানদের কাছে পতনের পূর্বে জাভা দ্বীপ হিন্দু এবং বৌদ্ধ শাসিত ছিল। <br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30900, 450, 338); return false;" target="_blank"><img alt="বড়বুদুরের একাংশ" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05924+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="বড়বুদুরের একাংশ" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>বড়বুদুরের একাংশ</strong></span></span><br />
<br />
বড়বুদুর স্থাপনাটি একাধারে গৌতম বুদ্ধের সম্মানে একটি মন্দির এবং বৌদ্ধদের একটি তীর্থস্থান। এই তীর্থযাত্রার শুরু হত মন্দিরের নীচ থেকে বৃত্তাকার পথে ঘুরে ঘুরে <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Buddhist_cosmology#K.C4.81madh.C4.81tu" target="_blank">কামধাতু</a>, <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Rupajhana" target="_blank">রুপধাতু</a> এবং <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Arupajhana" target="_blank">অরুপধাতু</a> - বৌদ্ধধর্মের এই তিনটি আধ্যাত্মিক স্তরে পৌঁছানোর চেষ্টা করত। এই যাত্রা পথে তাদের সহায় হত ২৬৭২টি গল্প চিত্রায়িত রিলিফ প্যানেল -যা এখনও বিদ্যমান। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30901, 450, 338); return false;" target="_blank"><img alt="২৬৭২টি রিলিফ প্যানেলের একটি" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05926+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="২৬৭২টি রিলিফ প্যানেলের একটি" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>২৬৭২টি রিলিফ প্যানেলের একটি</strong></span></span><br />
<br />
এটি মালয় <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Srivijaya" target="_blank">শ্রীবিজয়া</a> সাম্রাজ্যের অধীনে <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Sailendra" target="_blank">শৈলেন্দ্ররাজবংশের</a> দ্বারা নির্মিত। এটি তৈরি করতে ৭৫ বছর লেগেছে এবং ৮২৫ সালে শেষ হয়।<br />
<br />
চৌদ্দশত সালের পর অনেক জাভাবাসী মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করলে এই মন্দিরটি পরিত্যক্ত ঘোষিত হয় এবং পরবর্তী শতকগুলোতে আগ্নেয়গিরির ছাইভস্ম এবং জঙ্গল দ্বারা ঢেকে যায়। ঊনবিংশ শতকের শুরুতে ব্রিটিশ শাসকরা এটি খুঁজে বের করে এবং পরে ডাচ শাসকরা এর সংস্কার শুরু করে এবং বিশ্বে পরিচিতি পায় এটি। এখনও বছরে একবার এখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হয়।<br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31846, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="মন্দিরে পর্যটকদের ভীড়" class="image
thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05923+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="মন্দিরে পর্যটকদের ভীড়" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>মন্দিরে পর্যটকদের ভীড়</strong></span></span><br />
<br />
মন্দিরটিকে ভালভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে দেখা গেল। আর বিদেশী ট্যুরিস্টদের জন্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশ্রামাগার, চলন প্রতিবন্ধীদের জন্যে হুইল চেয়ার ইত্যাদি। অবশ্য থাকবে না কেন - স্থানীয় পর্যটকদের চেয়ে বিদেশীদের কাছ থেকে দশগুণ টিকেটের দাম নেয়া হয়।<br />
<br />
সামনে থেকে এটি দেখা অবশ্যই একটি বিস্ময় ছিল। আর সেই তীর্থযাত্রার স্থান দিয়ে ঘুরে ঘুরে উপরে যাওয়া। সেই রিলিফগুলো সম্পর্কে জার্মান, জাপানী, ইংরেজী ইত্যাদি ভাষায় চারদিকে গাইডদের অবিশ্রান্ত বর্ণনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া অন্যরকম আবহ এনে দেয়। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30902, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="এই ছিদ্রযুক্ত স্তূপের ভেতরে বৌদ্ধমুর্তি আছে।" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05943+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="এই ছিদ্রযুক্ত
স্তূপের ভেতরে বৌদ্ধমুর্তি আছে।" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>এই ছিদ্রযুক্ত স্তূপের ভেতরে বৌদ্ধমুর্তি আছে।</strong></span></span><br />
<br />
অবশেষে উপরে উঠলাম - সেখানে মূল বেদী বা স্তূপে একটি উন্মুক্ত বৌদ্ধ মূর্তি আছে। পুরো মন্দিরে পাঁচশরও বেশী এরকম স্তূপ ছিল যার ভেতরে একটি করে বৌদ্ধমূর্তি ছিল। তবে এখন ৩০০টিরও অধিক ভাঙ্গা এবং অনেকগুলো চুরি গেছে যখন এটি পরিত্যক্ত ছিল তখন। <br />
<br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30904, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="দুরে মেরাপি পাহাড়" class="image
thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC05954+%5B640x480%5D_0.thumbnail.JPG" title="দুরে মেরাপি পাহাড়" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><strong>দুরে মেরাপি পাহাড়</strong></span></span><br />
<br />
আমরা দুরে দেখতে পেলাম পুলিশ পাহারায় অনেকগুলো ট্যুরিস্ট বাস আসছে। তখন দেখলাম বিদেশী পর্যটকদের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হলো। তারা একে অপরকে বলতে লাগল যে ওই আসছে। তখন মনে পড়ে গেল যে আমি একটি আর্টিকেলে পড়েছিলাম - ইন্দোনেশিয়াবাসীরা দল বেধে এটি দেখতে আসে - তখন অন্য পর্যটকদের জন্যে কঠিন হয়ে যায় ঠিকমত দেখা। তাই তারা সকাল সকাল আসার চেষ্টা করে ভীড় এড়ানোর জন্যে। রোদের তাপ চড়া হতে শুরু করলে আমরা নীচের দিকে নামা শুরু করলাম।<br />
<br />
(চলবে .. পরবর্তী আকর্ষণ যোগজাকার্তার প্রামবানান হিন্দু মন্দির - এটিও নবম শতাব্দীর)<br />
<br />
ছবির সূত্র:<br />
১) প্রথমটি <a class="bb-url" href="http://www2.kenyon.edu/Depts/Religion/Fac/Adler/Reln260/Images260/borobudur.jpg" target="_blank">এখান থেকে</a><br />
২) ট্যুরিস্ট ম্যাপ উইকিপিডিয়া থেকে<br />
বাকিগুলো আমার তোলাRezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-6881391968662769572010-04-28T02:11:00.006+06:002010-07-07T02:19:06.708+06:00কাসেলে একদিনজার্মানি ছেড়েছি আট মাস আগে। আবার হঠাৎ করেই বার্লিন যাবার সুযোগ এসে গেল গত মাসে। আইআইজের <a class="bb-url" href="http://www.inwent-iij-lab.org/projects/2010/wordpress/" target="_blank">একটি কনফারেন্সে</a> সিটিজেন মিডিয়া নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তাদের অনুরোধ করলাম অফিশিয়াল প্রোগ্রামের সাথে আরও চারদিন যোগ করে ফিরতি ফ্লাইট রাখতে - আমার কিছু ব্যক্তিগত কাজ করতে চাই। তারা বলল যেহেতু সরকারী ফান্ডে ভ্রমণের খরচ মেটানো হচ্ছে তাই কিছু বাধ্যবাধকতা আছে- বাড়তি দুদিনের বেশী তারা ফ্লাইট পেছাতে পারবে না। চিন্তায় পড়ে গেলাম - কারণ আমার ইচ্ছা ছিল এবার একটু সময় নিয়ে কাসেলে যাবার। মক্কার মানুষ যেমন হজ্জ্ব পায়না তেমনি আমার জার্মান প্রবাসকালে শুধু হাসিবের সাথে একবার দেখা হলেও কোন সচল সমাবেশে যোগ দেয়া হয় নি। সুমন, হিমু, ধুসর গোধুলি, তীরন্দাজ প্রমুখের সাথে দেখা করার আকাঙ্খাটি ছিল তাই প্রবল।<br />
<br />
সেই মোতাবেক সবাইকে ইমেইল করলাম যে একসাথে হওয়া যায় কিনা। তীরন্দাজ ভাই জানালেন ইচ্ছে থাকলেও তিনি আসতে পারছেন না। ধুসর গোধুলিকে আশা করেছিলাম কিন্তু বেচারা আসতে পারল না। হিমু বলল আপনি আসেন - সব হবে। আর আমি বার্লিন পৌঁছেই অফিসিয়াল প্রোগ্রামের পাশাপাশি ব্যক্তিগত কাজগুলো সেরে নিলাম। এবারে ইচ্ছে করেই বার্লিনে পরিচিত কয়েকজনের আমন্ত্রণ গ্রহণ না করে, এবং দেখা না করে অবসর সময়টুকু ব্যয় করলাম কার্য সম্পাদনে ও বার্লিন শহর ঘুরে কিছু ইচ্ছাপূরণে। কাজেই কাসেল যাবার পথে সব বাধা দুর হল।<br />
<br />
এরমধ্যে আমি মেইল দিয়েছিলাম আমার সম্ভাব্য আগমন সময় জানাতে এবং কাসেলের ঠিকানা ও সচলদের ফোন নাম্বার জানতে চেয়ে - তার কোন জবাব নেই। অনেক খুঁজে পেতে সুমনের একটি নম্বর যোগাড় করে ফোন দিলাম। উদ্বেগের কথা জানালাম যে আমার কাছে তো ঠিকানা নেই - কিভাবে যাব? সুমন বলল আপনি কোন চিন্তা করবেন না - আপনাকে নিয়ে আশা হবে স্টেশন থেকে।<br />
<span class="inline center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31795, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="জার্মানির রিজিওনাল ট্রেন" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06269+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="জার্মানির রিজিওনাল ট্রেন" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>জার্মানির রিজিওনাল ট্রেন</b></span></span><br />
অবশেষে মার্চ মাসের তৃতীয় শনিবার বার্লিন থেকে কাসেল রওনা দিলাম রিজিওনাল ট্রেনে। আগের কয়েকদিন আবহাওয়া খারাপ থাকলেও সেদিন হঠাৎ বসন্ত - তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি উঠে গেল। ফুল ও পাতা ফোটা ছাড়া বসন্তের আমেজ পরিপূর্ণ রূপে পাওয়া যায় না। তবে রোদের প্রতিফলন থাকায় ছাইরঙা ন্যাড়া ডালপালাগুলো যেন অদ্ভুত এক দ্যুতি ছড়াতে লাগল। পথে দুবার ট্রেন বদলাতে হল। <br />
<br />
<span class="inline
center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31797, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="কোথায় বসন্ত?" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06273+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="কোথায় বসন্ত?" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>কোথায় বসন্ত?</b></span></span><br />
জার্মান সময়ানুবর্তিতা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। এটি কম ভাড়ার রিজিওনাল ট্রেন - দ্রতগতির আইসি বা ইসি নয় তবুও কাটায় কাটায় তার আগমন ও প্রস্থান। <br />
<br />
কাসেল মূল স্টেশনে এসে দেখি কারও খোজ নেই। আবার দিলাম ফোন সুমনকে। সে বলল - হিমুতো আপনাকে আনতে গেল - আপনি দাঁড়ান এসে যাবে। ইতোমধ্যে আমি একটি ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী পেয়ে গেলাম - সেটা দেখে সময় কাটাতে লাগলাম। দশ মিনিটের মধ্যে হিমু এসে হাজির - ফোনে দিক নির্দেশনা হচ্ছিল - আমি মনে হয় আপনাকে দেখতে পাচ্ছি - আপনি আমার সামনেই - এমন বলে যার অবসান - আসলে তো আমাদের আগে কখনও দেখা হয় নি! <br />
<br />
পরে হিমুর এই রোগটির কথা জানা গেল - সুমন চৌধুরী জানালেন প্রভা নামক কোথাকার কোন নারীর বিয়ের খবর প্রকাশিত হয়ে যাবার পর হিমু সব কিছুতেই লেইট। খেয়ালিপনা ও মেজাজ মর্জি মোতাবেক এই বিলম্বের মাত্রা দশ মিনিট থেকে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। <br />
<span class="inline center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31796, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="চৌধুরীর হেঁসেলের দেয়াল" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06293+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="চৌধুরীর হেঁসেলের দেয়াল" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>চৌধুরীর হেঁসেলের দেয়াল</b></span></span><br />
তবে এই বিলম্বের কারনে কিন্তু তার সৃষ্টি ক্ষমতা থেমে থাকে নি। বরঞ্চ আরও নতুন উদ্যমে তাকে বিভিন্ন কাজে লেগে থাকতে দেখা গেছে। ওই যে কথায় বলে না বেদনা সৃষ্টিকে প্রনোদনা দেয়। আমি গিয়েই হতবাক। বিখ্যাত চৌধুরীর বিরিয়ানীর জন্যে সব এন্তেজাম করা হয়েছে। হিমু সেখানে তার সৃষ্টিশীলতা যোগ করতে দুইবার দোকানে গেল বিভিন্ন মসলা আনতে। <br />
<span class="inline center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31799, 640, 480); return false;" target="_blank"><img alt="স্টিকার: গন্ডগোল ও অগোছানো অবস্থার জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী" class="image thumbnail" height="150" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/DSC06280+%5B640x480%5D.thumbnail.JPG" title="স্টিকার: গন্ডগোল ও অগোছানো অবস্থার জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>স্টিকার: গন্ডগোল ও অগোছানো অবস্থার জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী</b></span></span><br />
ছিমছাম ডর্মটিতে চৌধুরীর বিখ্যাত হেঁসেলটিকে সাজাতে বললে যে কোন গৃহিনীই ফিট হয়ে পড়ে যাবেন। হাড়ি পাতিল ইতস্ততঃ ছড়ান, আধোয়া অবস্থায় কারও মিক্সার পড়ে রয়েছে, টেবিলের উপর নানা কিছু পড়ে আছে। অতিথির সম্মানে সেগুলোর একটি গতি হল। <br />
<span class="inline center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31800, 258, 144); return false;" target="_blank"><img alt="চৌধুরীর কেরামতি" class="image thumbnail" height="112" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/chy+bowl.thumbnail.jpg" title="চৌধুরীর কেরামতি" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>চৌধুরীর কেরামতি</b></span></span><br />
তার পর চৌধুরী আমি হিমু - ম্যারাথন আড্ডার সাথে চলল চৌধুরীর কারিশমা। লোকে শুধু শুধু চৌধুরীর বিখ্যাত তেহারীর প্রশংসা করে না। আমার মনে হয় এই রেসিপি পাঁচ তারা হোটেলে ভাল মানাবে। আমার মত হতভাগা যে সাত দিন ধরে ভাত খায় নি তার জন্যে সেটি ছিল অমৃত (দু:খিত পেটে ক্ষুধা থাকায় ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম)। ধারণ ক্ষমতার বেশী পরিমাণই খেলাম ফলে তা আমাদের আড্ডায় বিঘ্ন ঘটাল। উদর বলছিল যে এই অমৃত ভোজের পর সুখ নিদ্রাই শ্রেয় হবে। <br />
পরেরদিন যাবার কথা হেরকিউলিসে। কিন্তু সকাল থেকেই বৃষ্টি বাগড়া দিল -তাই ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল। হিমুর আসার কথা ১১টায় - কিন্তু সে যথারীতি দেড় ঘন্টা লেট। ইতিমধ্যে বলাই এবং বলাইনি এসে হাজির - এসেই বদ্দার সাথে রান্নাতে হাত দিল। ওদিকে আড্ডা, পিসিতে ক্রিকেট দেখা ইত্যাদি চলল। <br />
<br />
<span class="inline center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31801, 289, 194); return false;" target="_blank"><img alt="প্রকাশিত বই প্রথম হাতে পাওয়ার সুখ" class="image thumbnail" height="134" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/First+touch.thumbnail.jpg" title="প্রকাশিত বই প্রথম হাতে পাওয়ার সুখ" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>প্রকাশিত বই প্রথম হাতে পাওয়ার সুখ</b></span></span><br />
<br />
বলাইনি হিমুর প্রথম প্রকাশিত বই 'ম্যাগনাম ওপাস ও কয়েকটি গল্প' নিয়ে এসেছিল। হিমু এর আগে বইটি ছুঁয়ে দেখেনি। তাই মুহূর্তগুলো ছিল ধরে রাখার মত। হিমুর প্রথম মন্তব্য হল ফন্টটি একটু ছোট হলেও ছাপানোটা খুব সুন্দর হয়েছে। <br />
<br />
<span class="inline center"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31802, 230,
187); return false;" target="_blank"><img alt="বইয়ের প্রথম এবং শেষ অটোগ্রাফ" class="image thumbnail" height="163" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/Sign.thumbnail.jpg" title="বইয়ের প্রথম এবং শেষ অটোগ্রাফ" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b>বইয়ের প্রথম এবং শেষ অটোগ্রাফ</b></span></span>এর পর বলাইনি অটোগ্রাফ চাইলে সে বলল যে এটাই আমার প্রথম ও শেষ অটোগ্রাফ হবে। তাই এই অমূল্য মুহূর্তটি আবারও ধরে রাখা হলো। <br />
<br />
আমার ফিরতি ট্রেন ছিল বিকেল চারটায়। আড্ডার ফ্লো এবং খাবারের আয়েশ ঠিক রাখতে সেটি পেছানো হল সন্ধ্যা ছটায়। এরপর আবার একপ্রস্থ জম্পেশ মধ্যাহ্ন ভোজন। এই স্মৃতিগুলো ভোলার নয়।<br />
<br />
ফিরতি পথে ট্রেনে ভাবছিলাম - কিসের টানে কাসেলে এসেছিলাম? যেখানেই যাওয়া হয় ব্লগ সংস্লিষ্ট বন্ধুদের এখন খুঁজে ফিরি। দেশের বাইরে অবস্থানের কারণে আমাদের বারোয়ারী আড্ডা এখন ভার্চুয়াল আড্ডায় রুপ নিয়েছে। কিন্তু তবুও সাক্ষাতের আকাঙ্খাটি থেকেই যায়। <br />
<br />
এই সম্পর্কগুলো কি আবেগঘন বা সাময়িক? মতের মিল হয় বলেই প্রাথমিক যোগাযোগ। আমার উপরি প্রাপ্তি এই যে ব্লগের কারণে বেশ কিছু বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়েছে যারা খুবই চমৎকার মানুষ এবং পাশাপাশি একেকজন বিশেষ মেধাসম্পন্ন এবং আমি প্রতিবারই তাদের সঙ্গ উপভোগ করি। আমি মনে করি এইসব সম্পর্ককে নিত্যনতুন ও কল্যাণকর উদ্যোগে কাজে লাগাতে হবে - এবং তা হচ্ছেও স্বল্প পরিসরে।<br />
<br />
আমি সেইদিনের অপেক্ষায় থাকব যেদিন এইসব একতাকে বিশাল কোন অফলাইন উদ্যোগে কাজে লাগানো যাবে।Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-25382273007036259772010-03-25T02:08:00.000+06:002010-07-07T02:10:22.162+06:00মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিতর্ক<div class="image-attach-body" style="width: 200px;"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(31114, 390,
271); return false;" target="_blank"><img alt="" class="image thumbnail" height="139" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/mrp_image.thumbnail.gif" title="" width="200" /></a></div>একটি বিষয় নিয়ে আমাদের সবারই স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরী, বিশেষ করে যারা প্রবাসে আছেন বা অচিরেই যাদের ভিনদেশে ভ্রমণ করতে হবে তাদের। আমার এই লেখার উদ্দেশ্য এই বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করা এবং এ নিয়ে সমস্ত গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করা।<br />
<br />
আমরা এরকম শুনে আসছিলাম আগে থেকেই যে আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে কারও কাছে <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/Machine-readable_passport" target="_blank">মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট</a> না থাকলে তাকে বিদেশ ভ্রমণ করতে দেয়া হবে না। এ নিয়ে পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে বাংলাদেশ এই ডেডলাইন মিস করতে যাচ্ছে এ কথা আমরা সবাই জানি। ২০০৭ সালেই ভোটার রেজিস্ট্রেশন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের সাথে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হবার কথা ছিল, কিন্তু আমরা যে কারণে জাতিগতভাবে অনেক ট্রেনই মিস করি, এ ক্ষেত্রেও আমরা পিছিয়ে আছি।<br />
<br />
সর্বশেষ সংবাদ হচ্ছে সরকারের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রকল্প <a class="bb-url" href="http://www.securitydocumentworld.com/public/news.cfm?&m1=c_10&m2=c_5&m3=e_0&m4=e_0&subItemID=2038" target="_blank">অবশেষে চালু হচ্ছে</a> (প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার <a class="bb-url" href="http://priyo.com/news/2010/jan/13/34033.html" target="_blank">বিতর্কে</a> যাব না) এবং এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে এই নতুন পাসপোর্টের জন্যে আবেদন তারা গ্রহণ করবে। তবে দু:সংবাদ হচ্ছে বাংলাদেশের মোট পাসপোর্ট সংখ্যা ৬৬ লাখ এবং এই পরিমাণ পাসপোর্ট প্রতিস্থাপন করতে প্রায় তিন বছর লাগবে। কিন্তু এখন যেই প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ যে পহেলা এপ্রিলের পর আসলে কি হবে।<br />
<br />
আমি এ নিয়ে বেশ কিছু খোঁজ খবর করেছি। তাতে দেখেছি যে ভুল তথ্যে ভরা বিভিন্ন রিপোর্ট এবং এক শ্রেণীর লোক এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছে। বিতর্কিত হিটখোর সাংবাদিক সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী তার অনলাইন ব্লিটজ পত্রিকায় সম্প্রতি একটি <a class="bb-url" href="http://www.weeklyblitz.net/621/no-bangladeshi-can-travel-abroad-during-april-2010" target="_blank">প্রতিবেদন</a> দিয়ে বসলেন যে "কোন বাংলাদেশী এপ্রিলের পর ভ্রমণ করতে পারবেন না"। জন্ডিস সাংবাদিকতার চুড়ান্ত উদাহরণ এটি - কারণ উনি অনেক গল্প ফেঁদেছেন।<br />
<br />
এ নিয়ে আমাদের দেশে অনেক রিপোর্ট হয়েছে কিন্তু প্রকৃত সত্য কম স্থানেই উল্লেখিত হয়েছে (আমাকে কেউ কি এ সংক্রান্ত কোন সঠিক রিপোর্টের লিন্ক দিতে পারেন?)। সত্যটি হচ্ছে এই ডেডলাইনটির প্রণেতা <a class="bb-url" href="http://www.icao.int/" target="_blank">দ্যা ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন</a> (বাংলাদেশ যার সদস্য)। এটি বলেছে যে এর সদস্য দেশগুলোকে ২০১০ সালের ১ এপ্রিলের মধ্যে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ইস্যু করা শুরু করতে হবে। <br />
<br />
মেশিন রিডেবল নয় এমন পাসপোর্ট কিন্তু <a class="bb-url" href="http://www.gmanews.tv/story/180647/non-machine-readable-passports-still-valid" target="_blank">তামাদি হয়ে যাচ্ছে না</a> যতদিন না পর্যন্ত এর বৈধতা আছে। তবে এখন পর্যন্ত একটি ডেডলাইনের কথা শোনা যাচ্ছে - ২০১৫ সালের ২৪শে নভেম্বর (তথ্য যাচাই করতে সূত্র দরকার) - এর পরে ন্যূনতম মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট থাকতে হবে একজন ভ্রমণকারীর।<br />
<br />
এবং যে বিষয়টি অধিকাংশ পত্রিকার রিপোর্টই এড়িয়ে গেছে যে কাকে ভ্রমণ করতে দেয়া হবে এবং কাকে দেয়া হবে না, এই এক্তিয়ার কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর। যেমন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসা ওয়েইভার দেশগুলোর নাগরিকদের জন্যে (যে সব দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে ভিসা লাগে না) বাধ্যতা মূলক মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের ডেডলাইন প্রথমে ঘোষণা করেছিল ২০০৩ সালে যা পরবর্তীতে <a class="bb-url" href="http://tinet.ita.doc.gov/tinews/archive/20030924b.html" target="_blank">কয়েকবার পেছানো হয়</a>। অবশেষে <a class="bb-url" href="http://www.britishairways.com/travel/usawaiver/public/en_gb" target="_blank">২০শে জানুয়ারী ২০১০ থেকে</a> এই সিদ্ধান্তটি বলবৎ হয়। তবে যাদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নেই তাদের ভিসা নিয়ে প্রবেশ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রে। কাজেই বোঝা যাচ্ছে এইসব ডেডলাইন পরিবর্তন হতে পারে এবং দেশভেদে ভিন্ন ভিন্ন বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে। আর বাংলাদেশীরা ভ্রমণ করতে পারবে না এইসব জুজুর ভয় কারা দেখাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমাদের খোঁজ নেয়া দরকার।<br />
<br />
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সহসাই আমাদের হাতে আসছে না। এই নতুন পাসপোর্ট প্রণয়নে ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রযুক্তিগত সংস্কার দরকার। বাংলাদেশের ৬৬টি মিশন ও কনসুলেটে বসানো দরকার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণ- যেসব সংক্রান্ত কোন উদ্যোগ এখনও নেয়া হয়নি যদিও সরকারের <a class="bb-url" href="http://www.theindependent-bd.com/details.php?nid=166349" target="_blank">এ নিয়ে পরিকল্পনা</a> আছে।<br />
<br />
তবে সবচেয়ে দু:খের বিষয় হচ্ছে এর পরবর্তী প্রযুক্তি আরএফডি চিপসহ <a class="bb-url" href="http://en.wikipedia.org/wiki/E-passport" target="_blank">বায়েমেট্রিক ই-পাসপোর্ট</a> চলে এসেছে এবং ২০১৪ সালের পর আমরা আবার এরকম একটি <a class="bb-url" href="http://www.thefinancialexpress-bd.com/more.php?news_id=85478" target="_blank">ডেডলাইনের মুখোমুখি হব</a>। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত - পাকিস্তান অচিরেই ই-পাসপোর্ট দেয়া শুরু করবে। আমরা আবার ট্রেন মিস করব এবং অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হব। <br />
<br />
(ছবি উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে)Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-71439602424918534082010-03-14T02:04:00.002+06:002010-07-07T02:08:07.926+06:00বার্ধক্য<span class="inline none"></span><br />
<span class="inline none"></span><br />
<span class="inline none"><a href="http://www.sachalayatan.com/" onclick="launch_popup(30884, 300, 450); return false;" target="_blank"><img alt="বার্ধক্য" class="image img_assist_custom" height="300" src="http://www.sachalayatan.com/system/files/images/Age+%5B640x480%5D.img_assist_custom.jpg" title="বার্ধক্য" width="200" /></a><span class="caption" style="width: 198px;"><b></b></span></span><br />
<br />
আমার ইদানিং হয়েছে শনির দশা। পেটের ব্যামো ছিল অনেকদিন ধরেই। সময় মত খাওয়া দাওয়া করে তাকে বাগে এনেছিলাম একরকম। জানুয়ারি মাসে পরিবারের একজনকে ব্যাংকক নিয়ে যেতে হল চিকিৎসার জন্যে। তারই অনুরোধে নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ঢেকি গেলার কাজটি ঠিক হয় নি এখন বুঝি। ডাক্তার একগাদা স্বাস্থ্য পরীক্ষা লিখে দিল, আল্ট্রা-সোনো, এন্ডোসকপি আর কত কি! একে একে সব যজ্ঞ সমাধা করে এন্ডোসকপির জন্যে এগুলাম। আমার ধারণা ছিল না যে এটির জন্যে রীতিমত বন্ড সই করে অনুভূতি বিলোপ ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে অজ্ঞান করে মুখের ভিতর নল ঢুকিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয় ও পাকস্থলীর অংশ কেটে পরীক্ষার জন্যে নেয়া হয়। টেবিলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই চৈতন্য নাশ হল। জ্ঞান ফিরেই শুনি ডাক্তার বলছেন আমার পাকস্থলীর বৃত্তান্ত। অনেক কথাই ধরতে পারিনি - তবে বুঝলাম মারাত্মক কিছু নয় - কিঞ্চিত আলসার আছে এবং এইচ পাইলোরি নামক একটি মন্দ ব্যাক্টেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গেছে টিস্যু স্যাম্পলে। শেষে তিনি বললেন আমার লিভারের উপর সাদা সাদা কিছু দেখা গেছে এবং তার মতামত হচ্ছে এর জন্যে লিভার বিশেষজ্ঞকে দেখান দরকার। আমি চাইলে এক্ষুণি সেখানে নিয়ে যেতে পারে সে। আমার মাথা তখনও ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল। আমি বললাম রোসো, পরে দেখাব - আমি এখন পরিবারের কাছে যেতে চাই।<br />
<br />
আমাকে দেয়া হল দুটি অ্যান্টিবায়োটিকসহ চারটি ঔষধের কম্বিনেশনে ১০ দিনের ডোজ যা শুরু করলাম সেদিনই। জাকার্তায় ফিরতি ফ্লাইট ছিল একদিন পরে। প্লেনেই শুরু হলো ডায়রিয়া এবং ঘরে ফিরেও তা চলতে লাগল - মনে হয় ঔষধের প্রতিক্রিয়া। সে এক কলিকাল - তার দুদিন পরে আমি পুরো বিছানায়। ডায়রিয়া কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না - সাথে অরুচি, বমি, কাশি - অনেকদিন আমার এমন অসুখ হয়নি। পরিচিত এক ডাক্তারের পরামর্শে ওরস্যালাইন ইত্যাদি পথ্যে হাসপাতালে যাওয়া রোধ করা গেল আপাতত। ব্যাংককের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগের উপায় পাওয়া গেল না। মনে হল অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ না করলে মারা যাব। তবে ঔষধ বন্ধ করার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি ঘটল না। তারপর অবধারিতভাবে স্থানীয় হাসপাতাল, ডাক্তার - অবশেষে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটল। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হইনি এখনও - অরুচি, ওজন হ্রাস ইত্যাদি বিদ্যমান।<br />
<br />
আমি এখন ভাবি - সামান্য এক পেটের অসুখের জন্যে আমি এতটা ভেঙ্গে পরেছিলাম। আর এই বোধটি আরও জাগ্রত হয় বাবাকে দেখার পর। বাবা এসেছিলেন জাকার্তাতে, ছেলে-বউয়ের সংসার দেখতে; নাতনীর সাথে সময় কাটাতে - যে নাতনী তার কাছে জীবনের প্রথম এক বছর ছিল। উনি তাকে কতটুকু মিস করেন তা তাদের ফোনালাপে বোঝা যায়। কিন্তু দেশ ছাড়ার পর এই কয়েক বছরে বাবা-মা যেন অনেক বুড়িয়ে গেছেন। ৭২ বছর বয়সী বাবার গালে এখন সাদা দাড়ি। আমার মেয়ে গতবছর দেশে গিয়ে বলে (ছবির স্মৃতিতে) আমার না আরেকটা দাদা আছে যার দাড়ি নেই!<br />
<br />
এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে আছি বেশ কিছুক্ষণ - প্লেন আসতে দেরী করছে। অবশেষে তিনি এলেন - পড়নে স্যুট। কিন্তু একি? বিক্ষিপ্ত পদক্ষেপ - হাতে ভারি এক ঝোলা। সাথে ফুফাতো ভাই ছিল। বলল - শরীরটা ভাল নেই - মালয়েশিয়ায় লম্বা ট্রানজিটে কষ্ট হয়েছে অনেক। তারপরও মনের জোরে এসেছেন - হাতে ছেলের বউয়ের আবদারের বইয়ের ঝোলাটি বোনপোকে দেননি পর্যন্ত। বাড়ি ফিরে ঘোষণা দিলেন দুদিন বিশ্রাম নেবেন। <br />
<br />
এরপর তাকে ঘুরিয়ে দেখানোর আমাদের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা ছিল। নাতনী সাফারি দেখাবে বলে এতদিন প্রলোভন দেখিয়েছে। সেই সাফারিতে যেতে তার কষ্ট হল। বুড়ো বয়সে অনেক কষ্ট - টয়লেটের চাপ ধরে রাখা - বেশিক্ষণ হাঁটতে না পারা। মনে হল নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস নেই। অথচ তার এই অক্ষমতার কথা স্বীকারও করছেন না। অনেক ক্ষেত্রেই মিথ্যে প্রবোধ দিয়েছেন - না ঠিক আছি। ফলস্বরূপ কষ্টও পেয়েছেন।<br />
<br />
এরপর সপরিবারে বেড়াতে যাওয়া হল যোগজাকার্তা। বিমানে ওঠার আগে হুইল চেয়ারে উঠতে বলাতে তার ভয়ানক আপত্তি। তবে আমাদের পাল্লায় পড়ে তাকে সেটাতে উঠতেই হল। সেখানে হোটেলে উঠে তার জন্যে বরাদ্দ রইল বিশ্রাম। পরদিন বরবুদুর বৌদ্ধমঠ দেখতে পারলেও পারামবালান মন্দিরে ঢুকে তার শরীর খারাপ হয়ে গেল। আমরা দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে এর পরদিন তাকে আবার জাকার্তা নিয়ে এলাম।<br />
<br />
এখন চিন্তা হল তিনি কিভাবে দেশে ফেরত যাবেন। যাবার পথে মালয়েশিয়ায় কয়েকদিন স্টপওভার আছে - তার বিশাল পরিকল্পনা ছিল পেনাঙ্গ যাবেন ইত্যাদি। আমরা বললাম সেই পরিকল্পনা বাদ দিন আর টিকেট করে দিচ্ছি - দ্রুত ঢাকা চলে যান। কিন্তু তিনি নাছোড়বান্দা, সেই শরীর নিয়েও তিনি শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়া গেলেন এবং সীমিত পর্যটনের পর এখন গৃহে প্রত্যাবর্তন করতে পেরেছেন। তবে এই কয়েকদিন আমাদের বেশ উদ্বিগ্ন করে রেখেছিলেন। <br />
আমি এখনও বাবার ক্ষীণকায় শরীর, সেই বিক্ষিপ্ত পদক্ষেপ, সিঁড়িতে কষ্ট করে ওঠা ইত্যাদি ভুলতে পারিনা। অথচ এই বাবাই এই কয়েক বছর আগেও নিজেই অনেক পরিশ্রমের কাজ করতেন।<br />
<br />
আর যখনই ভাবি এই বার্ধক্যকে জয় করার তার প্রচণ্ড মনোবলের কথা তখন নিজের ছোটখাট অসুখের জন্যে চিন্তাকে খেলো মনে হয়। আর মনে হয় আমাদের ও একসময় সেই দিন আসবে। তার জন্যে কি আমরা তৈরি?<br />
<br />
<span style="font-style: italic;">ফ্লিকার থেকে নেয়া উপরের ছবিটি জন্যে <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/a-arsalan/3946784309/" target="_blank">শহরবন্দীর</a> কাছে রইল কৃতজ্ঞতা।</span>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-6740479.post-72927228442742720782010-01-12T01:58:00.002+06:002010-07-07T02:03:44.767+06:00আল্লাহ তুমি কার!<div class="bb-quote"><blockquote class="bb-quote-body">"যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ<br />
তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষত।<br />
জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি<br />
ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ী রূপে<br />
ক্রমশঃ উঠছে ফুটে ক্ষয়রোগ, রোগের প্রকোপ"</blockquote></div><br />
রাজনৈতিক ইসলামের স্বরূপ উন্মোচন করে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এই কথাগুলো লিখেছিলেন কয়েক দশক আগে তার 'ধর্মান্ধের ধর্ম নেই' কবিতাটিতে। সেই কথাগুলো আজও প্রযোজ্য আমাদের দেশে এবং যেমন ধরুন মালয়েশিয়ায়। সেই দেশটি আমাদের দেশের মত ব্রিটিশ কলোনি ছিল এবং ১৯৬৩ সালে স্বাধীন হবার সময় ব্রিটিশ আইনকে উত্তরাধিকার হিসেবে পায়। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠের এই দেশে মোল্লাদের প্রভাব ছিল শুধু মসজিদের ভেতরেই। এর প্রথমদিককার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ। সাথে সাথে মালয়েশিয়ায় প্রচুর চৈনিক এবং ভারতীয় শ্রমিক আসে কাজ করতে। সরকার তাদের ভোটাধিকার দেয় এবং তারাও ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতায় আসতে বিরত রাখে। মালয়রা এমনিতে শান্তি প্রিয় জাতি, তাই বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান ছিল এতদিন কোন বড় ঝামেলা ছাড়াই। <br />
<br />
বর্তমান সমৃদ্ধ মালয়েশিয়ার রুপকার মাহাথির মোহাম্মাদ নিজে খুব আধুনিক হলেও মালয়েশিয়ার মুসলমান পরিচয়টি আগে বাড়িয়ে রেখেছিলেন এবং ইহুদী ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি সমালোচনায় তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। তবে সেটি কখনই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যায় নি এবং অনেকে বলে যে তার এই টোনটি ছিল বিরোধী দলকে মোকাবেলায় মুসলমান ভোট টানার চেষ্টার ফসল। তবে বিগত দশকে মুসলমান মালয়রা (৬০%) সবকিছুর মধ্যে বেশী পরিমাণে ধর্মীয় অনুশাষণকে টেনে এনেছে। <br />
বাংলাদেশের মত মালয়েশিয়াও মুসলমানদের ফ্যামিলি কোর্টের ব্যাপারস্যাপারগুলো - বিয়ে, বিচ্ছেদ, শিশু অধিকার ইত্যাদি শরিয়া আইন দ্বারা নির্ধারণ করা হয়। তবে মালয়েশিয়ায় কিছু ফৌজদারী আইনও শরিয়া আইন দ্বারা নির্ধারিত - যেমন মদ্যপান, রোজা না রাখা, বিবাহ বহির্ভূত যৌনসম্পর্ক ইত্যাদি।<br />
<br />
উদাহরণস্বরূপ মদ্যপানের শাস্তি জরিমানা বা সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে জেল বা বেত্রাঘাত। সেদেশে মদ বিক্রি করার সময় কিন্তু সাধারণত পরীক্ষা করা হয়না আসলেই ক্রেতা মুসলমান কিনা এবং এতদিন পর্যন্ত এটি ঢিলাঢালা ভাবেই ছিলি এবং সর্বোচ্চ জরিমানার কথা শোনা গেছে। তবে গত বছরে মালয়েশিয়ার এক মডেল খবরের হেডলাইনে চলে আসে কারণ তাকে বিয়ার পানরত অবস্থায় দেখা যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে <a class="bb-url" href="http://www.dailymail.co.uk/news/worldnews/article-1207643/Muslim-model-woman-Malaysia-caned-caught-drinking-beer.html" target="_blank">বেত্রাঘাত এর শাস্তি</a> দেয়া হয়। মালয়েশিয়ার ইসলামী শাসন হার্ডলাইনে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয় গত আগষ্টে ব্ল্যাক আইড পিজ এর কনসার্টে মুসলমানদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে। সরকার কারণ দেখিয়েছে যে আইরিশ বিয়ার প্রস্তুতকারী গিনেস এর স্পনসর - তাই তারা এটি মুসলমানদের জন্যে নিষিদ্ধ করেছে।<br />
উপরের যুক্তিটি কি আপনি মানতে পারছেন? দাঁড়ান, আপনার জন্যে আরও চমক অপেক্ষা করছে। তিন বছর আগে মালয়েশিয়ান সরকার অমুসলিমদের আল্লাহ কথাটি ব্যবহার নিষেধ করে দেয়। হেরাল্ড উইকলি নামক পত্রিকা অনেক দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে সম্প্রতি <a class="bb-url" href="http://english.aljazeera.net/news/asia-pacific/2010/01/20101114114404185.html" target="_blank">কোর্ট থেকে রায় পায়</a> যে সে দেশের অমুসলিমরা আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করতে পারবে। কোর্ট যুক্তি দেখায় যে মালয়েশিয়ার সাবাহ এবং সারাওয়াক আদিবাসী খ্রীষ্টানরা বহু শতক ধরে আল্লাহ বলে আসছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নাজিবের সরকার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। <br />
<br />
<a href="http://64.13.252.90/wp-content/uploads/sipaphotostwo613046-KUALA-LUMPUR1.jpg" rel="lightbox[post-29709]"><img align="left" alt="" class="bb-image" src="http://64.13.252.90/wp-content/uploads/sipaphotostwo613046-KUALA-LUMPUR1.jpg" style="margin-right: 16px;" width="320" /></a><br />
<br />
এই ব্যাপারটি এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু না। গত রবিবার থেকে মালয়েশিয়ার <a class="bb-url" href="http://www.indianexpress.com/news/2-more-churches-attacked-in-Malaysia-in-Allah-feud/565575/" target="_blank">বেশ কয়েকটি চার্চে আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে</a>। আজ আলজাজিরায় ইনসাইড স্টোরী অনুষ্ঠানে এই নিয়ে বিভিন্ন জনের মতামত শুনছিলাম। মালয়েশিয়ার ইয়থ মুভমেন্টের একটি সুট পরা যুবক তোতা পাখির মত আউরে যাচ্ছে যে আল্লাহ শুধু মুসলমানদের, খ্রীষ্টানদের কোন অধিকার নেই আল্লাহ বলার। তার বক্তব্য খ্রিষ্টানরা আল্লাহ বলে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে দিতে চাইছে। ৯% খ্রিষ্টান ৬০% মুসলমানদের কিভাবে বিভ্রান্ত করবে জিজ্ঞাসা করা হলে কোন সদুত্তর পাওয়া যায় নি। আরেক বিশেষজ্ঞ বললেন এটি হচ্ছে রাজনৈতিক ইসলামের খেলা। ইচ্ছে করে মাঠ গরম করা হচ্ছে সরকারী দল দ্বারা নির্বাচনে বিরোধী দলকে রুখতে। <br />
<br />
এই বিষয়টি নিয়ে লেখার একটি উদ্দেশ্য আছে আমার। মালয়েশিয়ার মত বহু ধর্মীয় গণতন্ত্রের দেশে (বর্তমানে অমুসলিম প্রায় ৪০%) যখন এই অবস্থা, আমাদের দেশে (প্রায় ৮৮% মুসলমান) পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াতে পারে ভবিষ্যৎে? ভেবে দেখেছেন কি?<br />
<br />
বাংলাদেশের <a class="bb-url" href="http://www.flickr.com/photos/shongbidhan72/4093505278/" target="_blank">প্রথম সংবিধানের</a> (১৯৭২) ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদে ছিল:<br />
<br />
<div class="bb-quote"><blockquote class="bb-quote-body">"কোনো সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠন, ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক কোনো সংগঠন করা যাবে না।"</blockquote></div><br />
এই কথাগুলো ১৯৭৭ সালে পঞ্চম সংশোধনী দ্বারা বাতিল করে দেয়া হলে বাংলাদেশে জামাতে ইসলামীর মত দলগুলো পুনরায় আত্মপ্রকাশের সুযোগ পায়। এর ফলশ্রুতি স্বরূপ আজকে আমাদের দেশেও ক্ষয়রোগের আভাস দেখা যাচ্ছে, যা দ্রতই সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়বে।<br />
<br />
সম্প্রতি আদালত নির্দেশ দিয়েছে পঞ্চম সংশোধনীকে বাতিল করার। এটি সফল হলে আমরা এই ক্ষয়রোগ সারাতে পারব। না হলে আর বেশী দেরী নাই শরীরে পচন ধরার। তখন অঙ্গহানির মত মারাত্মক ঘটনাও ঘটতে পারে। সাধু সাবধান। <br />
<br />
<span style="font-style: italic;">ছবি, <a class="bb-url" href="http://blog.heritage.org/2010/01/08/simple-fact-for-malaysia-%E2%80%9Callah%E2%80%9D-means-%E2%80%9Cgod%E2%80%9D-regardless-of-religious-tradition/" target="_blank">দি ফাউন্ড্রির সৌজন্যে</a></span>Rezwanhttp://www.blogger.com/profile/02737317666101718664noreply@blogger.com0