Monday, May 26, 2008

যে যায় লন্কায়

বাংলাদেশের বহুল পঠিত দৈনিক ডেইলি স্টারের স্পষ্টবাদী হিসেবে কিছুটা হলেও যা সুনাম ছিল বর্তমানে তা অবনতির দিকে।

এই বিবর্তনটা যেন আমাদের চোখের সামনেই হল। এই তত্তাবধায়ক সরকার গত বছর এগারই জানুয়ারী এলেন। এর পর ১৫ তারিখের ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয়তেই মাহফুজ আনাম বাণী দিলেন "আমাদের দমানোর চেষ্টা চালালেও আমরা চুপ করে থাকব না।" তিনি বলে গেলেন গত ১৬ বছরে এই প্রথম তিনি তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ফোন পেয়েছেন এবং দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন।

তারপর জানুয়ারী ১৯, ২০০৭ এ ডেইলি স্টারের ব্যবস্থাপনা সম্পাদককে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রেস সচিব করা হল। এর পর থেকেই ক্রমান্বয়ে আমরা দেখেছি এই পত্রিকার নতুন চেহারা।

ডেইলি স্টারের তাসনিম খলিল এবং প্রথম আলোর কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমানের উপর যে নির্যাতন চলল তার বিপক্ষে তাদের মালিকপক্ষ কোন বলিষ্ঠ অবস্থান নেয় নি। বরং তাদের পানিতেই ফেলে দিয়েছে ও ত্যাজ্য করেছে।

ওদিকে আমরা দেখেছি তাদের "১৭ বছরের নির্ভীক ও স্বজনপ্রীতি ছাড়া সাংবাদিকতার বড়াই করতে।" অথচ ডেইলি স্টারের একজন সাংবাদিক বলছেন:

"প্রচার মাধ্যমের মুখ এখনও বাঁধা। আমরা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে কোন মন্তব্যই করতে পারি না। এক বছরেরও বেশী সময় ধরে এটি চলছে। তাসনিম খলিল ও আরিফুর রহমানের কেইস দুটোর পেছনে বড় কারন রয়েছে।"
সম্প্রতি আব্দুল হান্নান (পিচ্চি না জামাতি?) নামে একজন ফ্রিল্যান্স লেখকের একটি মন্তব্য সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছে ডেইলি স্টারে যেখানে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন (৪র্থ প্যারায়) যে "দেশে জরুরী অবস্থা থাকা সত্বেও প্রচার মাধ্যমের কন্ঠরোধের কোন উদ্যোগ নেই। এই প্রথম কোন সাংবাদিক হয়রানি বা দমন নীতির মুখে পরে নি।"

সেন্সরশীপ নিয়ে নিউ এইজের সাম্প্রতিক বলিষ্ঠ অবস্থানের জন্যে এবং রেহনুমা আহমেদের চোখ খুলে দেয়া আর্টিকেলের জবাবে হান্নান বলেছেন (৭ম প্যারা):
"এক শ্রেনীর সংবাদপত্র, বিশেষ করে একটি প্রধান সারির ইংরেজী দৈনিক তাদের সম্পাদকীয়তে সরকারের প্রতিটি কার্যকারনের প্রতিবাদ ও হেয় করে আসছে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে উত্তেজিত করানোর জন্যে।" সরকারের ফোন কল এবং উপদেশকে উনি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ মানছেন না।
অসিফ ইউসুফের ঢাকা শহর ব্লগে এই লেখার প্রতিবাদে ডেইলি স্টারের সম্পাদককে গণ ইমেইল করতে বলা হয়
সেই ব্লগে ডেইলি স্টার থেকে জাফর (?) নামে একজন মন্তব্য করেন:
১) এটি ফ্রিল্যান্স কন্ট্রিবিউটরের বক্তব্য, ডেইলি স্টারের নয়।
২) কাজের চাপে এবং লোক স্বল্পতায় এই লেখাটার সত্যতা যাচাই করা যায় নি।
৩) পাঠকরা নিশ্চয়ই জানেন যে এই সেকশনটি সংবাদ নয় তাই এর যথার্থতা আশা করা ঠিক নয়। এবং এই ব্লগারকে উপদেশ দেয়া হয়েছে কিছু ভদ্রচিতভাবে তার বক্তব্য ডেইলি স্টারে পাঠাতে, সেটি ছাপানো হবে।
এটি ভাল যে ডেইলি স্টার তার মর্যাদার ব্যাপারে সচেতন হয়েছে এবং ব্লগে গিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করছে। কিন্তু সেটি যদি এমন দুর্বল যুক্তি না দিয়ে তাদের কাজকর্মে প্রতিফলিত হত তাহলে সবারই মঙ্গল হত।

প্রথম প্রকাশ: সচলায়তন

No comments: