Wednesday, April 25, 2007
Wednesday, April 04, 2007
চলেশ হোক একটি বিপ্লবের নাম
"মৃত্যুর আগে আমরা কখনও শুনিনি তাঁর নাম
কে এই চলেশ রিছিল? আপনি কে হে?
আপনাকে হত্যা করেছে যারা, ধরিত্রী কতটা স্নেহে
তাদের পক্ষে দাড়ায়, তাই এখন দেখার বিষয়।
মানুষের হাতে নির্বিচার হত্যার অধিকার,
জানি মৃত্যু আনিবে নির্মম দেবতার।"
-চলেশ রিছিলের জন্যে এলিজি - নির্মলেন্দু গুণ।
ঘটনার শুরু ২০০০ সালে। টাঙাইলের মধুপুরে বাংলাদেশ সরকার যখন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যান্ক ও বিশ্বব্যান্কের অর্থে ইকোপার্ক প্রজেক্ট করার সিদ্ধান্ত নিল তখন সেখানকার আদিবাসীরা এর প্রতিবাদ শুরু করল। সাংবাদিক ব্লগার তাসনিম খলিল লিখছেন:
"বাংলাদেশের অন্যতম চিড়িয়াখানায় আপনাদের স্বাগতম। ৪৭৮ বর্গ কিলোমিটার ব্যাপি শালবনে ডিসপ্লেতে আছে ২৫০০০ কোচ ও মান্ডি আদিবাসি। একজন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে বলা যায় এটি একটি উন্মুক্ত ল্যাবরেটরি যেখানে আদিবাসিরা গিনিপিগ হিসাবে অসহনীয়ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে।তাদের এ পরিস্থিতির জন্যে দায়ী বনবিভাগ, মালিটন্যাশনাল কোম্পানি, চার্চ, বাঙালী সেটেলার এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী।" -বিস্তারিত পড়ুন।
ইকো পার্কটির প্লান হচ্ছে এরকম - দশটি পিকনিক স্পট হবে জঙলের মাঝখানে এবং ছয়টি ব্যারাক ও বিশাল জায়গা জুড়ে এক দেয়াল। তার মানে প্রচুর গাছ কাটার প্রয়োজন এবং অসৎ বনবিভাগের অফিসারদের জন্যে এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হয় না। বনবিভাগের লোকজন বহু আগে থেকেই গাছ পাচার করে আসছিল। কিন্তু আদিবাসীরা বাধ সাধায় তাদের উপর মিথ্যা ৫০০০টি কেস ঝুলছে। তাদের লক্ষ্য করে চোরাই গুলি চালিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে।
"তারা আমেরিকা, বিলেত ও ইউরোপ থেকে এসেছে ও আমাদের ধর্ম নিয়ে গেছে।" এভাবেই বললেন জনিক নকরেক খ্রীষ্টিয় চার্চের এখানকার কর্মকান্ড সম্পর্কে। এখন মান্ডি ও কোচ আদিবাসিদের ৮৫% খ্রীস্টান, বাপ দাদার মান্ডি ধর্ম বিক্রি হয়ে গেছে জরুরী সাস্থ্য ও শিক্ষা সেবার বিনিময়ে। প্রগতি তো একেই বলা যায় তাই না?
সেখানেই আছে রসুলপুর ফায়ারিং রেনজ, বিমান বাহিনীর একটি স্থাপনা, ৫০০ একর শালবন ও ২টি মান্ডি গ্রাম উজাড় করে প্রাপ্ত।কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে যায় চলেশের হত্যাকান্ড। চলেশ রিছিল ছিলেন কলামিস্ট, সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ আদিবাসি সমিতির সাধারন সম্পাদক। আদিবাসীরা যে কোন সমস্যায় তার কাছে ছুটে আসতেন। তার কলম কোনদিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে থেমে থাকেনি। সেটাইকি ছিল তার অপরাধ?
২৪এ মার্চ জয়েন্ট ফোর্সেসের হাতে গ্রেফতার হয় চলেশ। তাকে জানালার গ্রীলে ঝুলিয়ে ৯ জন প্রতিরক্ষা বাহীনির লোক টর্চার করে। নির্যাতনের কিছু বিবরন দেই: তার চোখদুটো উপরে ফেলা হয়েছে, ডান হাতের তিন আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে, অন্ডকোষ নষ্ট করে দেয়া হয়েছে, সারাগায়ে প্রচন্ড আঘাতের চিহ্ন (ছবি দ্রষ্টব্য)। ক্রসফায়ারে তার মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ ঘোষনা দেয়।এশিয়ান সেন্টার ফর হিউমান রাইটস চলেশের ব্যাপারটি সার্ক মহামম্মেলনে উত্থাপন করেছে। এখানে বিস্তারিত অভিযোগপত্রটি। এ ব্যাপারে আরও সোচ্চার হয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা (দৃষ্টিপাত দ্রস্টব্য) । ডেইলি স্টারের স্টার উইক এন্ডে আজ এর উপর ফিচার হয়েছে।
ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ব্যাপারে বহু বলা হয়েছে। কিন্তু এটিকে এখনও অজানা কারনে স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিচ্ছে সবাই। চলেশ হোক আমাদের গা-ছাড়া ভাবের বিরুদ্ধে একটি আঘাত । চলেশ নামটি গড়ে উঠুক একটি বিপ্লবে যাতে আর কোন মায়ের সন্তান বিনা বিচারে মধ্যযুগীয় বর্বর নির্যাতনে মারা না যায়।
আমি এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা করছি এবং সরকারের কাছে এর বিচার দাবী করছি।
Posted by
Rezwan
at
9:24 PM
1 comments
Labels: বাংলাদেশ, মানবাধিকার, মৃত্যু
Monday, April 02, 2007
আগ্নেয়াস্ত্র
পুলিশ স্টেশনে ভিড়, আগ্নেয়াস্ত্র জমা নিচ্ছে শহরের
সন্দিগ্ধ সৈনিক। সামরিক নির্দেশে ভীত মানুষের
শটগান, রাইফেল, পিস্তল, কার্তুজ যেন দরগার
স্বীকৃত মানৎ। টেবিলে ফুলের মত মস্তানের হাত।
আমি শুধু সামরিক আদেশ অমান্য করে হয়ে গেছি
কোমল বিদ্রোহী-প্রকাশ্যে ফিরছি ঘরে, অথচ আমার সঙে
হৃদয়ের মতো মারাত্মক একটি অগ্নেয়াস্ত্র, আমি জমা দিই নি।
(নির্মলেন্দু গুণ)
Posted by
Rezwan
at
9:37 PM
0
comments
Labels: কবিতা, সামরিক শাষন