Sunday, August 05, 2007

বিচার: ইরানী স্টাইল

একটি সুন্দর রৌদ্রজ্বল সকাল ছিল সেদিন। ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ জড়ো হয়েছেন সিকিউরিটি ব্যারিকেডের পেছনে। অনেকের হাতেই ক্যামেরা, প্রতীক্ষা কখন এই অনুষ্ঠানের তারকারা আসবেন। ছোট্ট উচ্ছল শিশুটিও দাড়িয়ে। সভ্যতার এক উজ্বল নিদর্শন দেখবে সবাই।

একে একে আসলেন তারকারা। ওরা হাসছিলেন ও জনতার দিকে হাত নাড়াচ্ছিলেন। কি উৎসবমুখর পরিবেশ।

শুরু হল মূল অনুষ্ঠান। একটি ট্রাকের পেছনে বড় একটি ক্রেন তৈরি ক্লাইমেক্সের জন্যে। কিছুক্ষনের মধ্যেই কালো মুখোশ পরা লোকরা মজিদ এবং হোসেন কাভুসিফারকে (চাচা-ভাতিজা) প্রকাশ্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল। উপস্থিত জনতা খুশি হয়ে হাততালি দিল। চতুর্দিকে হাস্যরোল, ছবি তোলা। গ্লাডিয়েটর ছবির কথা মনে করিয়ে দিল -যখন সিংহ ও মানুষের যুদ্ধ দেখার জন্য কলোশিয়াম ভর্তি লোক এমন করত। কিন্তু সেতো কয়েক হাজার বছর আগে।

মজিদ আর কাভুসিফার ২০০৫ সালে একজন জাজকে মারার জন্যে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এই জাজকে তারা দুর্নীতিপরায়ন বলেছে যিনি অনেক ইরানী বিপ্লবীকে সাজা দিয়েছিলেন (এমনকি মৃত্যুদন্ড) সরকারের ধামা ধরে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়ার উদ্দেশ্য সরকারের বিরুদ্ধে যাতে কোনরুপ সমালোচনা না হয় তার জন্যেই। এটি সম্পুর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাধিত।

এখানে আমি বিচারের বিরুদ্ধে বলছি না। বলছি বিচার কার্যকরের পদ্ধতি সম্পর্কে। এই ছোট শিশুটি যে এটি দেখল তার মনে কি অনুভুতি হবে? আর বলিহারি সেইসব লোকদের যারা এটি দেখে আনন্দ করেছেন।

প্রকাশ্যে ফাঁসির মতো বর্বরতা যেন সভ্য সমাজে আর না হয়।

খবর ও ছবি সৌজন্যে : বিবিসি, স্কটসম্যন.কম, ইসনা

1 comment:

Anonymous said...

প্রচন্ড মন খারাপ হয়ে গেলো!