আধুনিক দ্বিচক্রযানে পর্যটক
গত বেশ কয়েক মাস বেশ ব্যস্ত সময় কেটেছে। বেশ কিছু ভ্রমণ ও উপরি পাওনা হিসেবে ছিল। কিন্তু এসব নিয়ে গুছিয়ে লিখব লিখব করে আর লেখা হয়ে উঠছে না।
তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিচ্ছিন্নভাবে অল্প অল্প করেই লিখব।
আমার প্যারিস দেখার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দর্শনীয় স্থান গুলোতে গিজগিজ করা পর্যটক। মনে হয় যেন এ শহরে এই সব টুরিস্ট দেখতেই এসেছি।
প্যারিসের প্লাস দো লা কনকর্ডের পাশেই রয়েছে তুইলেরি গার্ডেন যা প্রায় লুভে জাদুঘর পর্যন্ত বিস্তৃত। সেখানে গেটের কাছে দেখলাম একদল পর্যটক সেগওয়েতে চড়ে যাচ্ছে। আসে পাশের লোকজন ফিরে তাকাচ্ছে তবে জটলা হচ্ছে না।
সেগওয়ে নাম্নী এই আধুনিক দ্বিচক্রযানটি সম্পর্কে পড়েছিলাম আগে কিন্তু সামনা সামনি এবার দেখা হলো। দেখলে মনে হবে অণ্য জগতের কোন বাহন। সাইকেলের মত হ্যান্ডেল ধরে থেকে দুই চাকার উপর কি করে দাড়িয়ে থাকা যায় সেটি এক বিষ্ময় বটে।
তবে এর কারিগরি দিকগুলো দেখলে বোঝা যায় এটি কোন সাধারণ যন্ত্র নয়। এটি ইলেক্ট্রিক মটরে চলে ব্যাটারীর মাধ্যমে যা বাড়ীর ইলেক্ট্রিক কানেকশন দিয়ে রিচার্জ করা যায়। এটি ব্যালেন্সড অবস্থায় থাকে দুটি কম্পিউটার ও নিজস্ব উদ্ভাবিত সফ্টওয়্যার দ্বারা। এতে পাঁচটি জাইরোস্কোপ এবং দুটি হেলানো অবস্থা পরিমাপকারী সেন্সর রয়েছে। একটি সার্ভো ড্রাইভ মটর চাকা দুটিকে আগে পিছে করে ওর সমতা রক্ষা করে। কোন কারনে আরোহী সামনে বা পিছনে কাত হলে জাইরোস্কোপ ও সেন্সর এটির ব্যালেন্সড অবস্থা থেকে সরে যাওয়ার তথ্যগুলো চাকাগুলো চালানোর মটরে পাঠায়। ফলে যান্ত্রিক ভাবে আবার এটি দাড়িয়ে থাকার মত সমতায় আসে।
এটির দাম ৪০০০-৫০০০ ডলার। বেশ কিছু দেশে এটি এখনও নিষিদ্ধ কারন এটির গতি (ঘন্টায় ২০ কিমি) রাস্তায় অণ্যান্য যানবাহনের জন্যে খুব কম এবং ফুটপাতে পথচারী ও সাইকেল চালকদের জন্যে বেশী ও উদভ্রান্তি জাগানো।
দেখলেন তো শহর সম্পর্কে বর্ণনা না দিয়ে পর্যটক এবং তাদের বাহণ সম্পর্কেই বকছি। তাই মাঝে মধ্যে সন্দেহ হয় প্যারিসে কি পর্যটক দেখতে গিয়েছিলাম?
প্রথম প্রকাশ: সচলায়তন
No comments:
Post a Comment