Thursday, July 24, 2008

আমরাও পারি: গণহত্যা আর্কাইভের জন্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন

সুবিনয় মুস্তফী এবং নিঝুমের পোস্টের দ্বারা উজ্জীবিত হয়ে আপনাদের কাছে একটি আব্দার নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক সম্মিলিত উদ্যোগ

এই সাইটটিকে আরও তথ্যবহুল করার জন্যে আপনাদের সকলের সাহায্য প্রয়োজন। যে যে ক্ষেত্রে কাজ করা দরকার তা হলো:

× প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ যোগাড় করে লিপিবদ্ধ করা।
× বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও সাময়িকীতে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত লেখার স্ক্যান্ড কপি বা (অনলাইনে হলে) লিন্ক যোগ করা।
× আরও ছবি যোগ করা, ফটোগ্রাফারদের পরিচয় সহ। ইতিমধ্যে প্রকাশিত ছবিগুলোর ফটোগ্রাফারদের পরিচয় জেনে তা যোগ করা।
× বিভিন্ন টিভিতে প্রচারিত ডকুমেন্টারির ভিডিও যোগ করা। চলচ্চিত্রের ট্রেইলার যোগ করা।
× বিভিন্ন তথ্যবহুল সাইটের লিন্ক আছে এতে। কিন্তু সাইটের মালিকদের সাথে অনেক ক্ষেত্রে যোগাযোগ করা যায় নি। আমরা চাই যে তাদের অনুমতি নিয়ে ঐসব সাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলোর ব্যাকআপ রাখা যাতে ডোমেইন এক্সপায়ার হয়ে তাদের তথ্য হারিয়ে না যায়। পারলে এই সাইটে তাদের জন্যে হোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা। এ জন্যে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করলে খুব উপকার হয়।
× আমাদের দরকার ইতিহাসবিদ, সমালোচক, যারা এই সাইটের কন্টেন্ট বিশ্লেষন করে ত্রুটিমুক্ত করবে এবং যে সব তথ্য অনুপস্থিত তা যোগ করবে।
× বিতর্কিত বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও গবেষণা এবং বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে সত্য তথ্য উপস্থাপন।
× এর প্রচারের জন্যে আপনাদের সহায়তা দরকার। পত্রিকায় সংযোগ আছে যাদের তারা এটি নিয়ে আর্টিকেল ছাপাতে পারেন।

আপনারা হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন এই আর্কাইভের কেন দরকার। আমাদের চারপাশে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত প্রচুর ম্যাটেরিয়াল আছে, আছে বই, দলিলপত্র। কিন্তু সেগুলো কি সহজে আপনারা পান যখন আপনার দরকার? অনলাইনে তথ্য থাকার একটি সুবিধা হচ্ছে আপনি মুহূর্তেই কোন তথ্য সম্পর্কে জানতে পারেন। এই সাইটে আমরা শক্তিশালী সার্চ ফিচার এবং ট্যাগিং যোগ করেছি (এর প্রয়োগ পরবর্তীতে দেখতে পাবেন) যার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ তথ্য থেকে আকাঙ্খিত বিষয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে।

এই সাইটটি যেন ভবিষ্যতের গবেষকদের, সত্যান্বেষীদের জন্যে একটি তথ্য ভান্ডার হয়ে উঠতে পারে সেটিই আমাদের লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত বিতর্ক এত রাজনীতি সম্ভব হয় কারন একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারের অভাবে যে কেউ নতুন নতুন তথ্য প্রচার করে সবাইকে বোকা বানাতে পারে। পরবর্তীতে কোন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা পেলে ইচ্ছে আছে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহতদের একটি সমৃদ্ধ ডাটাবেজ তৈরি করার।

আপনারা আপনাদের বক্তব্য ও উপদেশ মন্তব্যের স্থানে জানাতে পারেন। অথবা দয়া করে আমাকে ইমেইলে জানাতে পারেন। আমরা একটি গ্রুপমেইলের মাধ্যমে জানব ও আলোচনা করব এ সংক্রান্ত আপনার সাজেশন ও সবাই মিলে কি করে কাজগুলোকে এগিয়ে নেয়া যায় তা।

আমেরিকার রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ওবামার জনপ্রিয় স্লোগানটি আমি ধার নিচ্ছি এই দৃঢ় আশা প্রকাশ করার জন্যে যে 'আমরাও পারব'। এই বিশ্বাসটিই আসল। আশা করছি আপনাদের সাথে পাব। ধন্যবাদ।

প্রথম প্রকাশ: সচলায়তন

Wednesday, July 23, 2008

ইন্টারনেট কি সুশীলদের দখলে?

বুদাপেস্টে গ্লোবাল ভয়েসেস সামিটের একটি সেশনে তুলে ধরা হয়েছিল যে ব্লগিং কিভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরছে। সেখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রাইজিং ভয়েসেসের কার্যক্রম যা বিশ্বব্যাপী প্রান্তীক ও দরিদ্র-সুযোগবিহীন সমাজকে ওয়েব ২.০ (ব্লগিং, চিত্র, ভিডিও, পডকাস্ট) ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সুখ-দু:খের কাহিনী প্রকাশ করার কাজে রত বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষূদ্র অনুদান ও প্রশিক্ষন ইত্যাদি সাহায্য প্রদান করে।

গ্লোবাল ভয়েসেসের মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলের (পশ্চিমা দেশগুলো বাদ দিয়ে) ব্লগারদের কন্ঠ ও তাদের মতামত তুলে ধরা যা প্রচলিত প্রচার মাধ্যম ছাড়া আরেকটি পরিপ্রক্ষিত দেবে ঐসব অঞ্চল সম্পর্কে জানার জন্যে। কিন্তু কিছূ দিন পরে দেখা গেল যে উন্নয়নশীল বিশ্বে সুবিধাপ্রাপ্ত উচ্চমধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তরাই বেশী ব্লগিং করে। ফলে বিশ্ব যেন তাদের কন্ঠই বেশী শুনতে পায়। বিপুল পরিমাণ যে সুবিধাহীন জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া এইসব কথপোকথন অর্থহীন। সে অবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যেই রাইজিং ভয়েসেস গত এক বছর ধরে কাজ করছে এবং ইতিমধ্যে এর ১৬টি প্রকল্প সফল ভাবে কাজ করছে।

এই প্রকল্পগুলোর এক একটি বিষয় বৈচিত্রে অভূতপূর্ব। নেইবারহুড ডায়রিজ কলকাতার বউবাজার অঞ্চলের (পতিতাপল্লীর) শিশূদের সিটিজেন জার্নালিস্ট হওয়া শেখাচ্ছে। বাংলাদেশের নারী জীবন ঢাকার কর্মজীবি নারীদের কারিগরী প্রশিক্ষনের পাশাপাশি ব্লগিংও শেখাচ্ছে এবং তারা আজ গল্প, কবিতা, রিপোর্টের মাধ্যমে তাদের অব্যক্ত কথাগুলো, তাদের ভাললাগাগুলো প্রকাশ করতে পারছে

এই বাংলাদেশী নারীরা ব্লগে লিখেন। আপনি কি তাদের লেখা পড়েন?

জামাইকার প্রিজন ডায়রিজ জেলের কয়েদিদের ব্লগিংয় শেখাচ্ছে ও তাদের কথা প্রকাশ করতে সাহায্য করছে - কোন পরিস্থিতিতে তারা এখানে আসলো, কেন অপরাধ করল, ভবিষ্যতে কি করবে ইত্যাদি। কেনিয়ার রিপ্যাক্টেড অগাস্তো বোয়ালের ইনভিজিবল থিয়েটার বা থিয়েটার অফ দ্যা অপ্রেসড এর আদলে অংশগ্রহণমূলক ম্যাগনেট থিয়েটার এবং আইসিটি ব্যবহার করে স্থানীয় ক্যাম্পের তরুণ-তরুণীদের বিহেভিয়ার চেন্জ সংক্রান্ত কাজ করছে।

এরকম প্রতিটি প্রকল্পই স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। এই প্রকল্পগুলো নিয়ে বানানো একটি ভিডিও ট্রেইলার দেখুন

সামিটে রাইজিং ভয়েসেসের প্রকল্পগুলো থেকে যে কয়েকজন এসেছিল (বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত নারী জীবনের তসলিমা ভিসা জটিলতার জন্যে আসতে পারে নি) তার মধ্যে একজনের কথাই বলব, ক্রিস্টিনা কিসবার্ট বলিভিয়ার প্রত্যন্ত অন্চলে থাকা একজন আদিবাসী মেয়ে যার নিকটবর্তী এল আল্টো শহরে যেতে ৫ ঘন্টা লাগে। সে তার ব্লগের মাধ্যমে আদিবাসী সমাজের সুখ, দু:খ ও সমস্যার কথা তুলে ধরছে। বলিভিয়ার প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী প্রায় ত্রিশটি আদীবাসী সমাজ নিয়ে গঠিত অথচ সেদেশের প্রচার মাধ্যম তাদের গুরুত্ব দেয়না - কারন প্রচার মাধ্যম তো শিক্ষিত এলিটদের।

এই পরিস্থিতি আমাদের দেশেও বিদ্যমান আমাদের দেশেও অনেক আদিবাসী আছে, আছে অনেক গরীব লোক। তাদের সম্পর্কে আমাদের জানতে হচ্ছে বড়লোকদের, রাজনীতির মুখপাত্র প্রচার মাধ্যমের মাধ্যমে। তাদের বলার কোন প্লাটফর্ম আমরা দিচ্ছি না।

সামহোয়্যার ইন ব্লগে আমি গুটিকয়েক আদিবাসী ব্লগার দেখেছিলাম যাদের একজন মার্মা ভাষায় কবিতা প্রকাশের জন্যে কটুক্তির শিকার হয়েছিল। সেও ব্লগ পলিটিক্সেরই স্বীকার। হ্যা শব্দটি ইদানিং বেশ শোনা যাচ্ছে। আমরা রাস্তার সস্তা পলিটিক্সকেও ব্লগে টেনে আনছি।

যে কোন গণতান্ত্রিক পরিবেশের মূল বিষয়টি যেটি দরকার সেটি হচ্ছে সমাজের প্রতিটি মানুষের বাক স্বাধীনতার অধিকার। যে কোন কিছূতে একমত হবার জন্যে দরকার মুক্ত আলোচনা ও উন্মুক্ত তথ্য প্রবাহ. দরকার ভিন্নমতকে সম্মান করা। সেটি যত্ক্ষণ না করতে পারছি ততক্ষণ আমরা সুষ্ঠু গণতন্ত্র পাব না।

বাংলাদেশের গরিব লোকেরা ব্লগিং করে মনের ভাব প্রকাশ করবে এমনটি এখনও সায়েন্স ফিকশন শোনালেও নিশ্চয়ই ফকিরের হাতে মোবাইল থাকবে এটি দশ বছর আগে এমনই শোনাত। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমে আমাদের বিপুল সংখক এনজিও ব্যাস্ত ও এ নিয়ে নাম নিজেরাই কামাচ্ছে। তবে যাদের জন্যে এ উদ্যোগ তারা কেমন আছে, তাদের ফিডব্যাক কি এসব কিন্তু গণমাধ্যমে আসে না (আসে হয়ত শেষ পর্যায়ে তারা সর্বসান্ত হলে বা সাফল্যমন্ডিত হলে)। তাদেরওকি মুক্তভাবে মতামত প্রকাশের সুযোগ করে দিতে পারে না এইসব এনজিওগুলো ব্লগিং বা অন্য কোন ভাবে?

কিন্তু এই অপাংতেয়দের দাবিয়ে রাখতে পারলেই তো সুশীল সমাজের লাভ। আমরাতো এমনই দেখে আসছি। এ অবস্থার পরিবর্তন কি হবে?

প্রথম প্রকাশ: সচলায়তন

Tuesday, July 22, 2008

দানিয়ুবের মুক্তো, ব্লগারদের সম্মিলন এবং ই-বুক

দানিয়ুবের পারে বুদাপেস্ট

বুদাপেস্টে হাজির হয়েছিলাম গ্লোবাল ভয়েসেস সম্মিলনে অংশ নিতে। এয়ারপোর্ট শাটল (মাইক্রোবাস) এ চেপে হোটেলে পৌঁছে মাল পত্র রেখে ভর দুপুরে ঘুরতে বের হলাম। মনে হলো এতো ধুসর গোধুলি, হিমু, সুবিনয়দের দেশ। চারিদিকে লোকেরা স্বল্প বসনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী ক্ষীনকায় সুন্দরী ললনারাই তার মধ্যে বেশ চোখে পরছে। তাপমাত্রা তখন ত্রিশ ডিগ্রি - তাদের জন্যে তালপাকা গরম। সেটিও কারন হতে পারে তাদের এমন খোলামেলা পোশাকের জন্যে। ইউরো কাপের খেলা দেখে ম্যারাথন আড্ডা জমিয়ে দল বেধে রাত বারটার দিকে হোটেল ফিরতে গিয়ে দেখি বুদাপেস্টের রাস্তাঘাট তখনও ভরা হাট। তরুণ-তরুণীরা তখনও পার্টি মেজাজে। ভেনেজুয়েলার ব্লগার হুলিয়ানা রিন্কন মন্তব্য করল আগে জানতাম আমাদের ল্যাটিন সংস্কৃতি বেশ খোলামেলা, তবে এদের কাছে তা নস্যি।

বুদাপেস্টে কারা যায়বুদাপেস্টে কারা যায়

সম্মিলনে অংশ নিতে এসেছিল বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গ্লোবাল ভয়েসেসের প্রায় একশ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী লেখক, অনুবাদক, শুভানুধ্যায়ী ও বন্ধূরা এবং এদের সবার মধ্যে একটিই মিল আছে সেটি হচ্ছে সবাই ব্লগার। সম্মিলনে আরও এসেছিল বিভিন্ন প্যানেল আলোচক, ইন্টারনেট জগতের পরিচিত কিছু তারকা, সাংবাদিক যারা আরও প্রায় শ খানেক হবে। নানা দেশের লোক মিলে বেশ কলকাকলী মুখর একটি ব্যাপার হলো।

সামিটে অংশগ্রহণকারীসামিটে অংশগ্রহণকারী

সম্মিলনের প্রথম তিনদিনের সূচীপত্রে ইন্টারনেট সিকিউরিটি, ব্লগারদের নিরাপত্তার মত গুরুগম্ভীর ব্যাপার থাকলেও (সে নিয়ে পরে আলাপ করব) পরবর্তী দুই দিন গ্লোবাল ভয়েসেস নিজস্ব মিটিঙে নানানরকম সংস্কৃতি বিনিময় আর অনানুষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা বিনিময় সবাইকে মাতিয়ে রেখেছে। দক্ষিণ এশিয়ার সম্পাদক নেহা খুবই মজার মেয়ে। সে সবাইকে দিয়ে বলিউডের নাচ নাচিয়ে ছাড়ল এক সেসনে।

গ্লোবাল পানীয়গ্লোবাল পানীয়

আরেকটি পর্ব ছিল পানীয় বিনিময়। বলা হয়েছিল সবাই যার যার দেশ থেকে একটি করে পানীয় নিয়ে আসবে। কেনিয়ার ব্লগার দাউদি ফ্লাইট আগে ছিল তাই চলে গিয়েছিল দুই বোতল হাতে ধরিয়ে এই বলে যে এগুলো কেনিয়ানরা জেলে গেলে খায়। বলাই বাহুল্য সবাই তাদের কড়া জিনিষ নিয়ে এসেছিল এবং সমাপনী পার্টিতে ওগুলো খোলা হলো। লেবাননের মুসা আর রাজানের পাল্লায় পরে ওদের পানীয় কিছুটা গলধ:করন করলাম। পানি দেয়ার সাথে সাথে ওটি কেমন সাদা হয়ে গেল। পান করার পরে বুঝলাম কি জিনিষ। কতক্ষন বসে ছিলাম। গায়ে আরবী লেখা দেখে বুঝতে পারিনি। পরে ভাল করে ছোট অক্ষরের লেবেল পড়ে দেখি আরাক - ৫৩% এলকোহল। এরকম ল্যাটিন আমেরিকা, পূর্ব এশিয়া, ইউরোপীয়ান অনেক নাম না জানা (স্ট্রঙ!) পানীয় ছিল সেখানে।

উপহার বিনিময়ও হলো। বলিভিয়া থেকে এডি আভিলা তৈরি করে এনেছে স্থানীয় আদিবাসীদের তৈরি কাপড় দিয়ে বানানো ল্যাপটপ ব্যাগ। আর পেরু থেকে হুয়ান আরেলানো এনেছে বিশালাকার সামুদ্রিক মাছের আঁশের উপর পেইন্টিং করা চাবির রিং।

দানিয়ুবের পারে বুদাপেস্টদানিয়ুবের পারে বুদাপেস্ট

এবার আসি দানিয়ুবের মুক্তো নামে অভিহিত বুদাপেস্ট শহরের পরিচয় পর্বে। দানিউব যে চারটি দেশের রাজধানী ( ভিয়েনা, ব্রাতিস্লাভা, বুদাপেস্ট আর বেলগ্রেড) দিয়ে গেছে সেগুলোর সংস্কৃতিগত ঐতিহ্য খুবই উল্লেখযোগ্য। দানিয়ুবের এক পাড়ে বুদা ও ওবুদা (ওল্ড বুদা) এবং অপর পারে পেস্ট শহর। এ তিন মিলেই ১৮৭৩ সাল থেকে হাঙেরীর রাজধানী বুদাপেস্ট। এখানে ভাষা নিয়ে পর্যটকদের খুব সমস্যা হয়- ইংরেজী অনেকে জানে না। তবে দেখা গেল জার্মান বললে কিছূটা কাজ হয়। কারন হয়ত হাঙেরী কিছু সময় অস্ট্রিয়ার নিয়ন্ত্রনে ছিল যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অবসান হয়। আরেকটি কারন হতে পারে যে অনেক জার্মান পর্যটক এখানে বেড়াতে আসে।

নতুন বুদাপেস্টনতুন বুদাপেস্ট

লম্বা সামিট শুরু হওয়া পর অবসর সময় কম ছিল বলে সামিটের সেশন ফাঁকি দিয়েও কিছু পর্যটন হলো। তবে অতৃপ্তি থেকেই গেল। আসলে দানিয়ুবের পারে বসে দিনের পর দিন কাটিয়ে দেয়া যায়।

ভেনেজুয়েলার আরেক ব্লগার লরা ভিদাল সাহিত্যের ছাত্রী। অরুন্ধতী রায়ের উপর একটি ডিসার্টেশন জমা দিতে হয়েছে বলে সে ভারত উপমহাদেশের উপর বেশ পড়াশোনা করেছে। আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতি সম্পর্কে সে জানতে খুবই আগ্রহী। কিন্তু (রবীন্দ্রনাথ ছাড়া) সে বাংলা কোন সাহিত্যই পড়ে নি। আমাকে পেয়ে তার প্রশ্নবাণ শুরু হলো। আমি তাকে বাংলাদেশের ব্লগিংয়ের সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে বললাম। সে খুবই অবাক এবং সাথে সাথে আনন্দিতও হলো যে আমাদের অনলাইন রাইটার্স ফোরাম রয়েছে এবং (সচলায়তনে) নিয়মিত সাহিত্যের উপর ইবুক প্রকাশিত হয়। সে আক্ষেপ প্রকাশ করল যে তাদের সাহিত্য সংক্রান্ত বিচ্ছিন্ন ব্লগ থাকলেও এমন উদ্যোগ তাদের বিশাল ব্লগোস্ফিয়ারে কেউ নেয় নি।

সচলায়তনের বছর পূর্তি উপলক্ষে এর পেছনের সৃহৃদদের অভিনন্দন জানিয়ে বলছি যে আপনাদের কষ্ট বৃথা যায় নি। অবশ্যই বলে বেড়ানোর মতো কিছু অর্জন হয়েছে।



প্রথম প্রকাশ: সচলায়তন

Monday, July 14, 2008

বাংলা গানের বিশ্বজয়

পলবাশা সিদ্দিক হচ্ছে ১৭ বছরের এক বাংলাদেশী তরুণী এবং আমেরিকার মিনিয়াপলিস সাউথওয়েস্ট হাই স্কুলে পড়ে। তার ডাক পড়ল ভিডিও গেইম মেকার ম্যাট হার্ডিংয়ের একটি ভিডিও "ড্যান্সিং ২০০৮" বা "হোয়্যার দ্যা হেল ইজ ম্যাট " এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে কন্ঠ দেবার জন্যে। সে আধুনিক স্টাইলে একটি রবীন্দ্রসংগীত গাইল এবং তার পর তো ইতিহাস। তার মায়াবী কন্ঠ ও ভিডিওটির অভিনবত্বের কারনে এটি একটি সফল ইন্টারনেট ভিডিও হিসেবে সবার দ্বারা সমাদৃত হয়েছে।

গত ২০শে জুন এটি প্রকাশের পরে প্রথম দুদিনেই এটি ১ মিলিয়ন হিট পেল। সবাই এত পছন্দ করল যে এটিকে ফেসবুক, মাইস্পেস বা ইমেইলের মাধ্যমে বন্ধুদের কাছে পাঠাতে লাগল। এই ড্যান্সিং ভিডিওটি ইতিমধ্যে ৪ মিলিয়নবার দেখা হয়েছে বিশ্বজুড়ে।

সাড়ে চার মিনিটের এই ভিডিওটি ১৪ মাস ধরে বিশ্বের ৪২টি দেশে শুট করা হয়েছে হাজারেরও অধিক কাস্ট নিয়ে। এই ভিডিওটি সংক্রান্ত কিছু তথ্য পাবেন এখান থেকে । ভিডিওটি দেখুন ও গানটি শুনুন।



পলবাশার আরেকটি গান শুনুন এখানে

[ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা: পলবাশা এবং মিনপোস্ট] 

প্রথম প্রকাশ: সামহোয়্যার ইন